দেশে বেকারত্ব আরও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বেকারত্বের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশে পৌঁছেছে। বর্তমানে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ ৩০ হাজার। গতকাল রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শ্রমশক্তি জরিপের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রান্তিকের তথ্য বলছে, ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী দেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ১৩তম আইসিএলএসে ডিসেম্বর শেষে দেশের বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ডিসেম্বর শেষে ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী দেশের বেকার জনগোষ্ঠী বেড়ে ২৭ লাখ ৩০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৪ লাখ।
বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, ১৩তম আইসিএলএসে ডিসেম্বর শেষে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৩ দশমিক ২০ শতাংশ। এই পুরোনো হিসাবে দেশে বেকারের সংখ্যা বর্তমানে ২৬ লাখ ১০ হাজার। আগের বছরের একই সময়ে এ হার ছিল ২৩ লাখ ৫০ হাজার।
বেকারত্ব বাড়ার কারণ হিসেবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকা ও ব্যাংক ঋণের সুদহার বেশি হওয়ায় বেকারত্ব বেড়েছে।
বিবিএসের সংজ্ঞা অনুযায়ী, বাংলাদেশে বেকার জনগোষ্ঠী মূলত তারাই, যারা গত সাত দিনে কমপক্ষে এক ঘণ্টাও কোনো কাজ করেনি, কিন্তু কাজ করার জন্য গত সাতদিন ও আগামী দুই সপ্তাহের জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং গত ৩০ দিনে বেতন বা মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কোনো না কোনো কাজ খুঁজেছেন।
শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য এর আগে ১৩তম আইসিএলএস অনুযায়ী প্রকাশ করে আসছিল বিবিএস। যদিও বিশ্বের প্রতিটি দেশে বর্তমানে ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী বেকারত্বের হিসাব করা হয়। সমালোচনার পর বিবিএস এ নিয়ে দুটি শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী প্রকাশ করছে। তবে তারা ১৩তম আইসিএলএস প্রকাশ করে।
বিবিএস বলছে, যারা বিগত সাত দিন সময়ে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনমূলক কাজ করেছেন, তারাই মূলত আইএলওর ১৩তম গাইডলাইন অনুযায়ী কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচিত। তবে যারা বিগত সাত দিন সময়ে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে কাজ করেছেন, তারাই মূলত আইএলওর ১৯তম গাইডলাইন অনুযায়ী কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচিত হন। ফলে ১৩তম ও ১৯তম আইসিএলএস অনুযায়ী প্রাক্কলনে শ্রমবাজারের সূচকগুলোর ফলাফলে পার্থক্য দেখা যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ব এস বছর র একই সময় শ রমশক ত ড স ম বর ৩ দশম ক গত স ত ক জ কর প রক শ ব ব এস
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় পর্যটকদের কাছে ১৩তম জনপ্রিয় শহর ঢাকা
করোনার আগের তুলনায় বর্তমানে ভারত থেকে ঢাকায় ভ্রমণকারীর সংখ্যা ৩১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এর ফলে ভারতীয় পর্যটকদের কাছে ঢাকা ১৩তম জনপ্রিয় শহরে পরিণত হয়েছে। ভারতের পাশাপাশি মালয়েশিয়ার ভ্রমণকারীদের জন্যও ঢাকা একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউটের বার্ষিক ‘ট্রাভেল ট্রেন্ডস ২০২৫’ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভ্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, বিশ্বের শীর্ষ ১৫টি গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ গন্তব্যের মধ্যে আটটিই এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশ।
অর্থনীতিতে ভ্রমণের অবদান ও পর্যটকদের ব্যয়ের প্রবণতার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের আগ্রহ, রুচি ও উদ্দেশ্যনির্ভর চিন্তাভাবনাই এখন পর্যটনের সবচেয়ে বড় চালিকা শক্তি।
শীর্ষে জাপান
২০২৫ সালের গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ মৌসুমে (জুন-সেপ্টেম্বর) টোকিও ও ওসাকা যথাক্রমে বিশ্বের ১ ও ২ নম্বর শীর্ষ ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে স্থান পেয়েছে। জাপানের এই দুটি শহরের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় স্থানে থাকা জাপানের রাজধানী টোকিও ২০২৪ সালে এসে ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে শীর্ষে জায়গা করে নেয়।
২০২৪ সালে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক পর্যটক বাজার হিসেবে তার অবস্থান ধরে রেখেছে। এ ছাড়া ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের মতো মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিও আগ্রহ বাড়ছে।
মাস্টারকার্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পর্যটকেরা ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়েছেন। ভারতীয় পর্যটকেরা ভ্রমণের জন্য এখন বেছে নিচ্ছেন বৈচিত্র্যময় সব গন্তব্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাচ্ছেন আবুধাবি, হ্যানয় আর বালিতে। চীন ও ভারত মিলেই বৈশ্বিক ভ্রমণের গতিপথ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, স্পোর্টস ট্যুরিজম বা খেলাধুলাভিত্তিক পর্যটনের জনপ্রিয়তাও দিন দিন বাড়ছে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন টেনিস টুর্নামেন্ট এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে বেসবল ওয়ার্ল্ড সিরিজের মতো বড় আসরে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেভিড ম্যান বলেন, বিশ্ব ভ্রমণে এখনো এগিয়ে আছে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল। টোকিও, সাংহাই, সিউল ও সিঙ্গাপুরের মতো গন্তব্যগুলো মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে।
২০২৪ সালের বেশির ভাগ সময়জুড়ে জাপানি ইয়েন দুর্বল থাকায় দেশটিতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। কম খরচে ঘোরার সুযোগ থাকায় জাপান ভ্রমণকারীদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।