এনার্জি ড্রিংকে থাকে চিনি। নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে কেবল এই একটি উপাদানের জন্যই। আর্টিফিশিয়াল সুইটনার বা কৃত্রিম চিনি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। যেকোনো পানীয়ে মিষ্টতা আনার জন্য অন্য কোনো কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করা হলে তাতেও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এনার্জি ড্রিংকে আরও থাকে ক্যাফেইন। উচ্চমাত্রার ক্যাফেইন মারাত্মক ক্ষতির কারণ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য যতটা ক্যাফেইন নিরাপদ, উঠতি বয়সের একটি ছেলে বা মেয়ের জন্য তা নিরাপদ নয়। এনার্জি ড্রিংকে থাকা আরও কিছু রাসায়নিক উপাদানের কারণেও স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা.

সাইফ হোসেন খান

আরও পড়ুনসকালের এসব ভুল অভ্যাসের কারণে আপনিও দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছেন১৭ মে ২০২৫হৃৎপিণ্ডের যত ঝুঁকি

অতিরিক্ত পরিমাণে এনার্জি ড্রিংক খেলে এতে থাকা ক্যাফেইনের কারণে হৃৎপিণ্ডের গতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কখনো কখনো ব্যাহত হতে পারে হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দ। তাই অতিরিক্ত এনার্জি ড্রিংক খাওয়া কখনোই উচিত নয়। পরিমাণে খুব বেশি না হলেও নিয়মিত এসব পানীয় খেলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়ে। পরবর্তী সময়ে হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যাঁদের পরিবারে হৃদ্‌রোগের ইতিহাস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে এনার্জি ড্রিংক।

অন্যান্য শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি

ক্যাফেইনের কারণে কারও কারও তীব্র মাথাব্যথা হয়। অন্যদিকে আবার নিয়মিত এনার্জি ড্রিংক খেলে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। ফলে বাড়তে পারে স্ট্রোক এবং দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের আশঙ্কাও। প্রিজারভেটিভের উপস্থিতির কারণেও কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুনযেসব ভুলে আপনার লিভারের ক্ষতি করছেন১৭ মে ২০২৫ঘুমের ব্যাঘাত ও মানসিক বিপর্যয়

অতিরিক্ত পরিমাণে এনার্জি ড্রিংক খেলে এর ক্যাফেইনের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আবার কম মাত্রায় নিয়মিত খেলেও ক্যাফেইন থাকার কারণে এই পানীয়ের প্রতি নির্ভরশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। বিষণ্নতা, অ‍্যাংজাইটি বা উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তার সঙ্গেও এনার্জি ড্রিংকের যোগসূত্র পাওয়া গেছে গবেষণায়।

শেষ কথা

মাঝেমধ্যে অল্প এনার্জি ড্রিংক খেলে ক্ষতি নেই। তবে তা নিয়মিত কিংবা অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। তাতেই বাড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষ করে খেয়াল রাখা প্রয়োজন, ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে একটি বোতল বা ক্যানের অর্ধেকটার বেশি না খাওয়াই ভালো। ১২ বছর বয়সের নিচের বয়সীদের এসব পানীয় একেবারেই দেওয়া উচিত নয়। ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তের সুগার অন্যান্য অনেক খাবারের চেয়ে অনেক দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এই পানীয়। যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে, তাঁদের এ ধরনের পানীয় খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

আরও পড়ুনকর্মী থেকে নিজেই এখন শতাধিক রেস্তোরাঁর মালিক শামীম, যেখানে কাজ করেন দুই হাজারের বেশি মানুষ১৭ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক য ফ ইন র জন য সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

বার্সেলোনার হোঁচট, রিয়ালের জয়ে পিচিচির দৌড়ে এগিয়ে এমবাপ্পে

স্প্যানিশ লা লিগার চূড়ান্ত পর্বে এসে নাটক যেন পিছু ছাড়ছে না। শিরোপা আগেই নিশ্চিত হলেও বার্সেলোনা রাঙাতে চেয়েছিল নিজেদের শেষ হোম ম্যাচ জয় দিয়ে। কিন্তু দুর্দান্ত এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে সেই আনন্দ মাটি করে দিয়েছে ভিয়ারিয়াল।

ক্যাম্প ন্যুতে রোববার (১৮ মে) রাতের ম্যাচে ৩-২ গোলে হেরে গেছে বার্সেলোনা, আর সেই হারেই যেন আড়ালে পড়ে গেছে দলের শিরোপা উদযাপন। তবে বার্সার হার যতটা না কষ্টের, তার চেয়েও বড় চমক উপহার দিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। লা লিগা পিচিচির লড়াইয়ে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছেন তিনি।

খেলার শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে বার্সা-ভিয়ারিয়ালের ম্যাচটি। চতুর্থ মিনিটেই ভিয়ারিয়ালকে এগিয়ে দেন পেরেস। তবে ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় নেয়নি বার্সেলোনা। তরুণ প্রতিভা লামিনে ইয়ামাল ৩৮ মিনিটে গোল করে বার্সাকে সমতায় ফেরান। এরপর ফের্মিন লোপেসের গোলে এগিয়েও যায় দলটি।

আরো পড়ুন:

দুই ম্যাচ হাতে রেখেই বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন

বার্সার অপেক্ষা বাড়িয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলো রিয়াল

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ভিয়ারিয়াল রচনা করে নতুন চিত্রনাট্য। ৫০ মিনিটে ইয়েরেমি পিনোর চমৎকার পাস থেকে সমতা ফেরান সান্তি কোমেসানা। এরপর ৮০ মিনিটে গোল করে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন তাহন বুকানন। যিনি সের্হি কার্দোনার ক্রস থেকে বল পেয়ে অসাধারণ গতিময় শটে বার্সা গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন।

এ হারের পরও ৩৭ ম্যাচে ৮৫ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে ভিয়ারিয়াল ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে থেকেই চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে।
ম্যাচ শেষে ট্রফি হাতে উদযাপন করে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা। কোচ হান্সি ফ্লিক উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানান, “এই মৌসুমে আমরা তিনটি ট্রফি জিতেছি। লক্ষ্য থাকবে আগামী মৌসুমে ইউরোপিয়ান মঞ্চে (চ্যাম্পিয়নস লিগ) নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা।”

এদিকে দিনের অপর ম্যাচে ৯ জনের সেভিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই ম্যাচেও নজর কাড়েন কিলিয়ান এমবাপ্পে ও জুড বেলিংহাম। ম্যাচের ১২ মিনিটেই এমবাপ্পেকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন লোইক বাদে। প্রথমার্ধে একজন বাড়তি নিয়ে খেলেও গোল করতে পারেনি রিয়াল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে সেভিয়ার ইসাক রোমেরো মাঠ ছাড়লে ৯ জনে নেমে আসে দলটি।

এ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি এমবাপ্পে। ৭৫ মিনিটে দুর্দান্ত এক দূরপাল্লার শটে রিয়ালকে এগিয়ে নেন তিনি। এরপর ৮৭ মিনিটে গার্সিয়ার পাস থেকে বেলিংহাম নিশ্চিত করেন ২-০ ব্যবধানের জয়।

এই গোলের সুবাদে লা লিগার প্রথম মৌসুমেই ২৯ গোল করে গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে অবস্থান নিয়েছেন এমবাপ্পে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সার রবার্ট লেভানদোস্কি রয়েছেন ২৫ গোল নিয়ে। লা লিগার এবারের মৌসুমের একেবারে শেষপ্রান্তে এসে এখন সবার নজর পিচিচি পুরস্কারের দিকেই। যেখানে এমবাপ্পে নিজেকে এগিয়ে রেখেছেন সবার থেকে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ