বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক ভাটারা থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক। এদিন সকালে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। সকাল দশটার পর তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। এসময় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

অন্যদিকে নুসরাত ফারিয়ার জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসঙ্গে তার জামিন বিষয়ে আরও শুনানির জন্য আগামী ২২ মে দিন ধার্য করেন।

তবে এদিন আদালতে শুনানি চলাকালে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কোনো কথা বলেননি চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। শুনানি চলাকালে মাথা নিচু করে নিশ্চুপ হয়ে, মলিন মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। এদিন শুনানি চলাকালে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী নুসরাত ফারিয়াকে ফ্যাসিস্টের সমর্থক আখ্যা দিলে কিঞ্চিৎ কান্না করে চোখ মুছতে দেখা যায় নুসরাত ফারিয়াকে।

পরে শুনানি শেষে আদালত থেকে হাজতের উদ্দেশে নামানো হয় তাকে। নিচে সাংবাদিকদের নানান প্রশ্নেও কোনো কথা বলেননি চিত্রনায়িকা।

এদিন পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে ছিল, সে (নুসরাত ফারিয়া) একজন ফ্যাসিস্টের সমর্থক। অনেকের মতো সেও নাটক সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়ের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টের পক্ষ নিয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি ছাত্রদের বিরোধিতা করেন। বিভিন্ন ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’

গতকাল রোববার নুসরাত ফারিয়াকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

নুসরাত ফারিয়ার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ওই মামলায় তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আসামি করা হয়। ভাটারা থানার পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আটকের পর নুসরাত ফারিয়াকে থানায় আনা হয়েছিল। তবে থানায় তাকে না রেখে পরে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

রেডিও জকি (আরজে) হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন নুসরাত ফারিয়া। এরপর ২০১৩ সালে নাম লেখান উপস্থাপক হিসেবে। কয়েকটি নাটকেও অভিনয় করেন। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ‘আশিকী’ সিনেমায় বড়পর্দায় অভিষেক হয় তার। প্রথম সিনেমাতেই সাড়া ফেলে দেন তিনি। এরপর ঢালিউড ও টালিউড মিলিয়ে প্রায় ২০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আটপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাসুম, সম্পাদক রফিকুল

দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে মো. মাসুম চৌধুরী সভাপতি ও মো. রফিকুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। মাসুম চৌধুরী আগের কমিটির আহ্বায়ক এবং রফিকুল ইসলাম জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৪ সালে আটপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল। এরপর ১১ বছরে কোনো সম্মেলন করতে পারেনি দলটি। অবশ্য ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বাধার কারণে আগের দিন সম্মেলন পণ্ড হয়ে যায়। এরপর আরও দুবার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলে স্থগিত করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সক্রিয় হন বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।

বেলা ১১টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম। বিশেষ বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী। প্রথম অধিবেশনে উপজেলা কমিটির সাবেক আহ্বায়ক মাসুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।

বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে মাসুম চৌধুরী ও সাবেক সভাপতি খায়রুল কবীর তালুকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে রফিকুল ইসলামসহ তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৭টি ইউনিয়নের ৪৯৭ ভোটারের মধ্যে ৪৮৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এতে ৩৩৭ ভোট পেয়ে মাসুম চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হন। আর ২৫৩ ভোট পেয়ে রফিকুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর হলেও আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পেরেছি। বিগত সরকারের লোকজন আটপাড়ার সম্মেলন তিনবার পণ্ড করে দিয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর মামলা-হামলা করে নানা অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। আশা করি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হবে।’

বিজয়ী সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের শত বাধাবিপত্তি, মামলা-হামলাতেও পিছিয়ে না পড়ে আমরা দলের নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলাম। তাই এই নেতা-কর্মীরা আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, সে জন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বায়রার সংবাদ সম্মেলন ঘিরে মারামারি, এরপর পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
  • বার্সেলোনার হোঁচট, রিয়ালের জয়ে পিচিচির দৌড়ে এগিয়ে এমবাপ্পে
  • চুলের যত্নে চা
  • জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যানসার শনাক্ত, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে
  • ম্যাচ কমানোর শর্তে পাকিস্তান সফরে যেতে রাজি লিটনরা
  • ‘বিদায় বেনফিকা’ বলে দিলেন দি মারিয়া, গন্তব্য কোথায়
  • সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়: মুজিবুর রহমান
  • ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে সোমবার ফোন করবেন ট্রাম্প
  • আটপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাসুম, সম্পাদক রফিকুল