সাত দফা দাবিতে ‘নিজ ব্যানারে’ চবিতে ছাত্রশিবিরের মিছিল
Published: 19th, May 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চবি শাখার’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রশিবির। বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সুবিধা ও চাকসু নির্বাচনের দাবিসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। পরে চাকসু ঘুরে আবার জিরো পয়েন্ট এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এ সময় চবি ছাত্রশিবির ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবিরের নেতারা বক্তব্য দেন। এর আগে গত বছরের আগস্টের পর চবিতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা।
বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা ও বৈষম্যের শিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকট, অকার্যকর চাকসু, যাতায়াতের অভাব, আধুনিক শিক্ষা সুবিধার ঘাটতি এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতা আজ ছাত্রজীবনের বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন যদি শতভাগ আবাসন সংকট ও সেশনজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে আমরা রাজপথ ছাড়ব না। সাত দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব, ইনশাআল্লাহ।’
সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হ্রদয় চন্দ্র তড়ুয়া ও ফরহাদ হোসেনের রক্তের উপর দিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। আমরা ভেবেছিলাম, এই প্রশাসন আমূল করবে। কিন্তু আমরা সেই ধরনের কোনো পরিবর্তন দেখছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লব ঘটেছিল, সেই ফ্যাসিস্ট চক্র এখনও ক্যাম্পাসে অবাধে চলাফেরা করছে। ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা এখনও শিক্ষকের চেয়ার দখল করে আছে, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এখন থেকে ক্যাম্পাসে যেখানেই আওয়ামী লীগ বা ফ্যাসিস্ট শক্তির উপস্থিতি দেখা যাবে, তাদের “যথাযথ আপ্যায়ন” করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
ছাত্রশিবিরের সাত দফা দাবি হলো:
১.
২. সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার আধুনিকায়ন।
৩. পর্যাপ্ত ও নিরাপদ পরিবহন সুবিধা নিশ্চিতকরণ।
৪. অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন।
৫. টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনঃনির্মাণ ও হলসমূহ সংস্কার।
৬. জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে নির্যাতনে জড়িতদের বহিষ্কার ও চাকরিচ্যুতি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ছ ল সম ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
দুই বিভাগের টানাপোড়েনে নষ্ট হচ্ছে ১২শ গাছের আম
সড়কের দু’পাশে সারি সারি ১২শ আম গাছ। মধুমাস জ্যৈষ্ঠে এসব গাছের ডালে থোকায় ঝুলছে কাঁচা-পাকা আম। প্রতিবছরই সরকারিভাবে নিলামে এ ফল বিক্রি করা হয়। কিন্তু চলতি বছর ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আম নামানোর সময় ১৫ মে শুরু হলেও এখনও নিলামই দেওয়া হয়নি এসব ফল। সরকারি দুই প্রতিষ্ঠানের টানাপোড়েনে এসব আম গাছেই নষ্ট হচ্ছে।
এমন ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার সাত ইউনিয়ন ও দুই পৌর এলাকায়। সড়কের পাশে সরকারিভাবে লাগানো হয়েছিল গাছগুলো। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে জেলা পরিষদ ২২ মে নিলামের দিন ধার্য করেছে। এ সময়ের মধ্যে আরও অনেক আম নষ্ট হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা হাসান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ‘মৌসুমি ফল ইজারার নোটিশ’ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলার ‘তানোর চৌবাড়িয়া রাস্তার তানোর থেকে তালন্দ বাজার পর্যন্ত’ বিভিন্ন প্রজাতির ৪৫০টি আম গাছের ফল বিক্রি হবে। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিলাম কার্যক্রম হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে ১৪টি পয়েন্টের ১ হাজার ২০১টি আম গাছের ফল নিলামের জন্য গত ৫ মে দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞপ্তির প্রচার কম হওয়ায় প্রতিবাদের মুখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৩ মে ফের দিন নির্ধারণ করা হয়।
এদিন ইজারা কার্যক্রম শুরু হলে জেলা পরিষদের আপত্তিতে সে কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত উপজেলার দুটি পয়েন্টের সড়কের আম গাছের আম নিজেদের দাবি করে বসে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী আম সংগ্রহের সময় গত ১৫ মে শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও ইজারা কার্যক্রমের সুরাহা না হওয়ায় পাকা ও আধা পাকা আম গাছেই নষ্ট হচ্ছে। অনেকে এসব ফল নিজেদের মতো সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন।
এসব গাছের আম কিনতে আগ্রহী আব্দুর রাহীম, মফিজ উদ্দিন ও মনিরুজ্জামানসহ কয়েকজন জানান, ফলগুলো সরকারি নিয়মে ইজারার মাধ্যমে নিতে আগ্রহী তারা। নিয়ম অনুযায়ী বারবার বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদের। এক-দু’দিনের মধ্যে এসব ফল ইজারা না দিলে পেকে ও পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো সড়কের পাশের গাছের আম দুর্বৃত্তরা চুরি করছে।
একটি পয়েন্টের আম গাছের ফল নিয়ে জেলা পরিষদের আপত্তি ছিল বলে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) জামিলুর রহমান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি তানোর থেকে তালন্দ পর্যন্ত গাছের ফল ইজারা দিতে নিষেধ করেন। ১৩টি পয়েন্টের গাছের আম ইজারা দিতে বলেছেন। দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু হবে।
একটি বা দুটি সড়কের আম গাছ জেলা পরিষদের জানিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান বলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভুলে এগুলো ইজারা দিচ্ছিল। তারা চাইলে এসব গাছ বাদে অন্যগুলো ইজারা দিতে পারতেন। দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উপজেলা শাখার সহসভাপতি হামিদুর চৌধুরী বলেন, গাছগুলোর আম এমনিতেই পেকে পড়ে যাচ্ছে। তাও ইজারা কার্যক্রম শেষ হয়নি, যা দুঃখজনক। ইউএনও লিয়াকত সালমান বলেন, খোঁজ নিয়ে দ্রুত আম গাছের ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।