আজ-কালের মধ্যে ইশরাকের শপথ না হলে বড় আন্দোলন হতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 19th, May 2025 GMT
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে ইশরাকের শপথ আয়োজন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার বিকেলে সিলেট নগরীতে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ঢাকায় কয়েকদিন ধরে জনগণ নগর ভবন তালাবদ্ধ করে রেখেছে, চতুর্দিক থেকে ঘেরাও করে রেখেছে এবং আলটিমেটাম দিয়েছে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টাকে। আদালতের রায়ে মেয়র ঘোষিত হয়েছেন ইশরাক। নির্বাচন কমিশন আদালতের রায় মেনে যার নামে গেজেট প্রকাশ করেছে, তাকে আপনারা শপথ গ্রহণ করাবেন না, বিভিন্ন ইস্যু করছেন। তাহলে এটা আইনের শাসন হলো?'
তিনি বলেন, ‘ইউনুস সাহেব ও তার কমবয়সী উপদেষ্টারা মনে করছেন তারা আইন মানবেন না, কোর্টের আদেশ মানবেন না, ইলেকশন কমিশনের গেজেট নোটিফিকেশনকে তোয়াক্কা করবেন না। তাহলে গণতন্ত্রের বিপরীতে আপনাদের যাত্রা শুরু হলো।’
‘আমরা সবসময় আপনাদের সহযোগিতা করেছি। এই সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার মানে এই না যে আমরা দস্তখৎ দিয়েছি, আপনাকে যা করবেন তাই সহ্য করব,’ বলেন এই বিএনপি নেতা।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি আহ্বান করছি অতি অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আদালত ঘোষিত ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় ঢাকার এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আরও বৃহৎ আন্দোলন হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি চিরতরে বন্ধ করতে হলে সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। আমরা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বসেছি—কীভাবে বিচার বিভাগের, প্রশাসনের কিংবা অন্যান্য খাতের সংস্কার হবে, কীভাবে বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতে পারবে এবং সাংবিধানিকভাবে কোনো একনায়ক সৃষ্টি হতে পারবে না-সেজন্য আমরা কাজ করছি।’
‘এই সংস্কারের ফল যদি আমরা পেতে চাই, তাহলে নির্বাচিত সংসদের কোনো বিকল্প নেই। আমরা সে কথা বললে অন্তর্বর্তী সরকার খুব নারাজ হয়। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচন না চায়, তাহলে আর কী চাইবে? বর্তমান সভ্য দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই, কিন্তু সেই নির্বাচনের কথা বললেই তারা গোস্বা হন,’ বলেন তিনি।
‘একজন নারী উপদেষ্টা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান তাদের নির্বাচিত করেছে। তারা যদি সেভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা আছে কেন? নির্বাচন কমিশনের কাজ কী? কেউ কেউ আজীবন ক্ষমতা ভোগের স্বপ্ন দেখছেন,’ প্রশ্ন রাখেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ইশর ক হ স ন স ল হউদ দ ন ব এনপ ইশর ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির কি আকাল পড়েছে আ.লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপির কি এতো আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে? যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নাই, তাদের কেন আহ্বান করতে হবে।
সোমবার বিকেলে সিলেট শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে বিভাগীয় বিএনপির নতুন সদস্য সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি থাকলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব থাকবে, দুর্বল হলে বাংলাদেশ দুর্বল হবে। বিএনপির জন্ম না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হতো না, বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না। তাই বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দেবেন, তিনিই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবে। এদেশের প্রতিটি ধূলিকণাকে বিএনপি ধারণ করে, লালন করে। বাংলাদেশে অফিসিয়ালি ১৮ কোটি জনগণ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা এখন ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত তারা নিজেদের অপকর্মের জন্য কোনও অনুশোচনা করেনি বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। উল্টো তারা গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করছে।
জিয়াউর রহমান ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে দেশের একনায়কতান্ত্রিক সংবিধান বাকশালকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উল্লেখ করে বলেন সালাউদ্দিন আহমেদবলেন, তিনি সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম সংযুক্ত করে মহান আল্লাহ তায়ার ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি দেশের সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে সবার সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সব মানুষের ধর্মীয় চর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক, জাতীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার।
সভায় সূচনা বক্তব্য দেন দলেল নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে দায়িত্বে) তারিকুল আলম তেনজিন ও স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক এমপি এম. নাসের রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা আহ্বায়ক ফজলুল করিম ময়ুন, হবিগঞ্জ জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।