প্রখ্যাত কাহিনীকার, গীতিকার, চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্ত্রী জোহরা গাজী একসময় চলচ্চিত্র প্রযোজক ছিলেন। উপস্থাপনাও করেছেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ার ইন্তেকালের পর জোহরা গাজী তাকে নিয়ে প্রকাশ করেছিলেন বই ‘আগুনের সাথে বসবাস’। এবার মাজহারুল আনোয়ারের সঙ্গে তার দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রকাশ করেছেন ওই বইয়ের দ্বিতীয় খন্ড।

গত ২০ রাতে রাজধানীর তেজগাঁওতে একটি কফিশপে ‘আগুনের সাথে বসবাস ২’র প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় অন্যান্যের মধ্যে চিত্রনায়ক নাঈম,বাপ্পারাজ,সম্রাট,কন্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীর,হুমায়রা বশীর,সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এটি বের হয়েছে প্রকাশনা সংস্থা ‘জার্নিম্যান’ থেকে।   

বইটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের স্ত্রী জোহরা গাজী,সন্তান সরফরাজ আনোয়ার উপল,দিঠি আনোয়ার।  বইটি প্রসঙ্গে জোহরা গাজী বলেন, ‘আগুেনর সাথে বইটি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ব্যক্তি জীবন ও কর্ম জীবন নিয়ে লেখা। পাঠক এতে অজানা কিছু জানতে পারবেন। বইটি পাঠকের মনে দাগ কাটবে বলে আশা করছি।

দিঠি আনোয়ার বলেন,‘ আব্বু এবং আম্মুর দাম্পত্য জীবন নিয়ে আম্মুর লেখা আগুনের সাথে বসবাস বইটি অনেকের পাঠকের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। অনেকেই বারবার জিজ্ঞেস করেছিলেন যে দ্বিতীয় খ-টি কবে আসবে। তাদের জন্যই দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ করা হলো। এই বইটি মূলত পারিবারিক উদ্যোগ নিয়ে প্রকাশ করেছি। এ কাজে সহযোগিতা করেছেন কন্ঠশিল্পী মোমিন বিশ্বাস। আশা করছি, প্রথম খন্ডের মতো দ্বিতীয় খন্ডটিও সাড়া ফেলবে।’ 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির পথরেখা দেবে মস্কো

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুই ঘণ্টার বেশি ফোনালাপের পর ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন তৎপরতা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে শিগগিরই যুদ্ধবিরতির একটি পথরেখা দেওয়া হবে বলে আশা করছে ওয়াশিংটন। পথরেখা পেলে বোঝা যাবে মস্কো এই সংঘাত বন্ধের বিষয়ে ইতিবাচক কি না।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার এ কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা নিয়ে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ তুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ ও দখলদারত্ব অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে রাশিয়া সময়ক্ষেপণের মতো অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।

গত সোমবার পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প জানান, যুদ্ধবিরতির জন্য শিগগির আলোচনা শুরু করবে মস্কো ও কিয়েভ। এর আগে গত শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। তিন বছরের মধ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম সরাসরি বৈঠক ছিল এটি।

ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর পুতিনও যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে রাশিয়ার ইতিবাচক অবস্থানের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে একটি ‘স্মারকপত্র’ নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে মস্কো, যে স্মারকপত্রে যুদ্ধ শেষ করার সম্ভাব্য পথরেখা এবং উভয় পক্ষের অবস্থান তুলে ধরা হবে।

মস্কোর পক্ষ থেকে শিগগিরই যুদ্ধবিরতির একটি পথরেখা তুলে ধরা হবে জানিয়ে মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘পুতিন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য নিজেদের শর্ত ও অবস্থান জানিয়ে শিগগিরই একটি পথরেখা দেবেন তাঁরা। আশা করা হচ্ছে, এর জন্য কয়েক দিন বা দু–এক সপ্তাহ লাগতে পারে।’

মার্কো রুবিও আরও জানান, ‘রাশিয়ার পক্ষ থেকে পথরেখায় বিস্তারিত শর্ত তুলে ধরা হবে। এটা হলে আমরা একটি যুদ্ধবিরতির দিকে এগিয়ে যেতে পারব। একই সঙ্গে এতে করে বিস্তারিত আলোচনা এবং এই সংঘাতের প্রায় সমাপ্তির খুলে যাবে। যদি শর্তগুলো বাস্তবসম্মত হয় এবং এটা নিয়ে আমরা কাজ করতে পারি, তাহলে সেটা হবে একটা বিষয়। কিন্তু তাঁরা (রাশিয়া) যদি অবাস্তব শর্ত দিয়ে বসে, সেটাও একটা ইঙ্গিত দেবে। পথরেখা পেলে বোঝা যাবে তারা যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ইতিবাচক কি না।’

যুদ্ধ বন্ধের তৎপরতার মধ্যেই হামলা

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে এসব আলোচনার মধ্যেই গতকাল বুধবার ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে রাশিয়ার হামলায় ছয় ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন। হামলার সময় ইউক্রেনীয় সেনারা একটি প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশ নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে কিয়েভ।

গতকাল ইউক্রেনীয় বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, উত্তর–পূর্বের সুমি অঞ্চলের একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে রুশ বাহিনী হামলা চালিয়েছে। হামলায় ছয় সেনা নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের ওই সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।

সুমি রাশিয়া সীমান্তবর্তী একটি অঞ্চল। গত বছর এখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে বড় এক অভিযান পরিচালনা করেন ইউক্রেনীয় সেনারা। অঞ্চলটির বিস্তীর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। রুশ বাহিনীর অব্যাহত হামলার মুখে সম্প্রতি কুরস্ক থেকে ইউক্রেনীয় সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হন।

এদিকে গতকাল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর ক্রেমলিন জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন পুতিন। ইউক্রেনীয় সেনারা ২০২৪ সালের আগস্টে কুরস্ক অঞ্চলের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ দখল করেন। কিন্তু গত এপ্রিলের শেষের দিকে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের সহায়তায় মস্কোর বাহিনী তাদেরকে কুরস্ক থেকে হটিয়ে দেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ