পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় বিশৃঙ্খলা করছেন নুরুল: ঢাকা উত্তর সিটি
Published: 21st, May 2025 GMT
হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে গণ অধিকার পরিষদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, পছন্দের ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগরভবনের সামনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন।
বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ। এ অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল হক বলেন, সিটি করপোরেশনের এ দাবি ‘ভোগাস’ ও ‘ভিত্তিহীন’।
ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফারজানা ববির দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা উত্তর সিটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমানকে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক তাঁর পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার জন্য ১৮ মে মুঠোফোনে ফোন করেন। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তাঁকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালার আইনি বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেন। আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কিছু করার সুযোগ নেই বলেও তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু নুরুল হক তাঁর কোনো কথা না শুনে তাঁকে কাজ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন আর ডিএনসিসির অফিসে তালা লাগানোর হুমকি দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মে (গতকাল মঙ্গলবার) বেলা ৩টায় গুলশান-২–এ নগরভবনের সামনে কিছু লোক নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের ব্যানারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ডিএনসিসির প্রশাসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে ডিএনসিসির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। হোয়াটঅ্যাপ গ্রুপে এ–সংক্রান্ত দুটি স্ক্রিনশটও দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নুরুল হককে ফোন করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এগুলো ভোগাস কথাবার্তা না? ধরেন যদি কেউ কোনো কার্যক্রমের জন্য ফোন করতে পারে, কিন্তু তার জন্য আন্দোলন করবে, সেটা তো বিষয় না। তাঁর (প্রশাসক) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে যুক্ত অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে, কারাবরণ করেছে, আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে ফেসবুকে তাঁর অসংখ্য ছবি, এগুলো কি মিথ্যা?’ এই কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদ ছাড়াও বিএনপির লোকজন ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিষয়ে নুরুল হক বলেন, ‘তিনি কোন ক্রেডিটে প্রশাসক হবেন, তাঁর কী যোগ্যতা? তিনি আন্দোলনে ছিলেন নাকি নির্বাচন করেছেন। তাঁকে উপদেষ্টাদের পছন্দের কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা যখন জানতে পারলাম, তিনি জঙ্গিবাদী নিষিদ্ধ কার্যক্রমের সঙ্গে ইনভলভড, আমরা মনে করি, এটা সরকারের জন্যও থ্রেট, আমাদের জন্যও থ্রেট।’
ফোন করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো ভিত্তিহীন। আমাদের অনেক লোক ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য যায়।’
নুরুল হক আরও বলেন, ‘আমাদের দলের মুখপাত্র যেমন ফারুক হাসানের শ্বশুর, দীর্ঘদিন ধরে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে তাঁদের আগের মেয়র থেকে একটা মামলা ছিল প্রোপার্টি নিয়ে। সেবার জন্য যে কেউ যেতে পারেন, আমাদের দলের লোকজনও যেতে পারেন, সেটা যেকেউ। কিন্তু এটার জন্য তো আর পদত্যাগের আন্দোলন করবে, এটা তো ইস্যু না। বিএনপির লোকেরাও তো এটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। আর তিনি যে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, জেল খেটেছেন, তাঁর বাসা থেকে হিযবুতের লোক অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) হয়েছেন, এগুলো তো মিথ্যা নয়।’
প্রশাসক এজাজকে অপসারণের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘ওটা কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও নয়, আমিও যাই নাই। বলতে গেলে সিনিয়র নেতারাও যান নাই। মহানগরের নেতারা কর্মসূচি করেছেন, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, সরকার পদক্ষেপ না নিলে যমুনার সামনে কর্মসূচি পালন করবেন। এটা থেকে তিনি (প্রশাসক) বাঁচার জন্য বলতে পারেন। অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির লোক।’
নুরের দাবি, প্রশাসক এজাজের ২০১৫ সালে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীর সঙ্গে সখ্য গড়ার ছবি রয়েছে। আবার যখন পটপরিবর্তন হয়েছে, তখন আবার দেখা গেছে, ছাত্রদের সঙ্গে মিশে নাগরিক কমিটিতে পোস্ট নিয়েছেন এবং পয়সাপাতি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসকের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গেছেন।
আরও পড়ুন৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা উত্তরের প্রশাসককে অপসারণ না করলে যমুনা ঘেরাও২০ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ল হক ড এনস স পছন দ র ফ ন কর র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টি ভাঙবে নাকি ভারতের জয়ের স্বপ্ন?
ইংল্যান্ড-ভারত দ্বিতীয় টেস্টের নাটকীয় মোড় এখন আর কেবল ব্যাট-বলের লড়াইয়ে আটকে নেই। সেখানে যুক্ত হয়েছে আরেক প্রতিপক্ষ। নাম তার ‘আবহাওয়া’। এজবাস্টনের আকাশে ঘনিয়ে আসা মেঘ যেমন ভারতের জয়ের পথে কালো ছায়া ফেলেছে, তেমনি ইংলিশ শিবিরে ছড়িয়ে দিয়েছে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস।
চতুর্থ দিন শেষে ইংল্যান্ডের হাতে বাকি ৭ উইকেট। ভারত বলতে গেলে জয়ের সুবাস পাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন একটাই; এই সাতটি উইকেট তুলতে পাবে কি যথেষ্ট সময়? কারণ আজ রবিবার অর্থাৎ ম্যাচের পঞ্চম দিনে রয়েছে বৃষ্টির দাপটের আশঙ্কা।
ইংল্যান্ডের আবহাওয়া দফতরের মতে, সকাল ৬টা থেকেই শুরু হতে পারে বৃষ্টি। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়বে সেই সম্ভাবনা। সকাল ৮টা ও ৯টায় ৮৯-৯০ শতাংশ পর্যন্ত। আর খেলা শুরুর সময় সকাল ১০টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা দাঁড়াবে প্রায় ৬০ শতাংশে। পরিস্থিতি যদি এমনই থাকে, তাহলে প্রথম সেশন পুরোপুরি ভেসে যাওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
৮০ বলের সেঞ্চুরিতে জেমির রেকর্ড, শতকের দেখা পেলেন ব্রুকও
গিলের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারতের রান পাহাড়, শুরুতেই চাপে ইংল্যান্ড
তবে দুপুরের পর থেকে আশার আলো দেখা যেতে পারে। দুপুর ২টা থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা কমে দাঁড়াবে ২০ শতাংশে এবং বিকেল ৪টার পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন আবহবিদরা। অর্থাৎ, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তাহলে শেষ সেশন জুড়ে মিলতে পারে পূর্ণ খেলার সময়।
ভারতের ইনিংস ডিক্লেয়ার করার সময় নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা সত্ত্বেও তারা কেন কিছুটা দেরি করল? সেই সিদ্ধান্ত এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বোলিং কোচ মরনে মর্কেল জানিয়েছেন, “আমরা নিরাপদ লিড চাচ্ছিলাম। আবহাওয়া তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নয়।” তবে যদি আজ সময়ের অভাবে জয় অধরাই থেকে যায়, তাহলে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারো কঠিন সমালোচনার মুখে পড়তে পারে দল।
ঢাকা/আমিনুল