হবিগঞ্জে এসআইসহ ৩ জনের নামে বিভাগীয় মামলা
Published: 24th, May 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানা হাজত থেকে আসামি গোলাম রাব্বানীর (২৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) তাদের জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির থাকার কথা।
অভিযুক্তরা হলেন- ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর বানিয়াচং থানার দায়িত্বরত এসআই মনিরুল ইসলাম, এএসআই রুহুল আমিন ও নারী কনস্টেবল ইয়াছমিন বেগম।
ওই তিনজনসহ সাক্ষী দেওয়ার জন্য আরও ১০ জনকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির করানোর জন্য গত ৪ মে বানিয়াচং থানার ওসিকে নোটিশ দিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ আতিকুল হক।
সাক্ষীদের মধ্যে থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
মৃত গোলাম রব্বানী বানিয়াচং উপজেলা সদরে নন্দিপাড়া মহল্লার মিহির উদ্দিনের ছেলে। ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭টার দিকে হাজতের ভেতরে পরনের কাপড় দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তার দেহ পাওয়া যায়।
পুলিশ জানায়- ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বড় বাজার থেকে গোলাম রাব্বানীকে একটি ইজিবাইক চুরির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে থানা হাজতে রাখা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দেখা যায়, হাজতের ভেতরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে তার দেহ ঝুলছে। পরে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ গোলাম রব্বানীকে প্রহার করে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে বলে তার পরিবার অভিযোগ তুললে ঘটনার চারদিন পর ৩০ ডিসেম্বর এসআই মনিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেয় এবং অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে আলাদা ৩টি বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। জানা গেছে- এসআই মনিরুল এখন গাজীপুর জেলা পুলিশে কর্মরত।
রাব্বানীর বড় ভাই মঈন উদ্দিন বলেন, “আমার ভাইয়ের বয়স মাত্র ১৭ বছর ছিল। সে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। তাকে পুলিশ একের পর এক চুরির মামলা দিয়ে জীবন দুর্বিসহ করে তোলে। ঘটনার দিন তাকে যখন এসআই মনিরুল হক নিয়ে যান, তখন আমি জিজ্ঞেস করলে জানিয়েছিলেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নেওয়া হচ্ছে। পরে আমার ভাইয়ের লাশ ফেরৎ দিয়েছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আতিকুল হক অভিযুক্ত ৩ পুলিশ সদস্য ও ১০ জন স্বাক্ষীকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির করার জন্য নোটিশ জারীর সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি তদন্তাধীন ব্যাপার। আমরা তাদের সাথে বিস্তারিত কথা বলব।”
ঢাকা/মামুন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড স ম বর র জন য সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে, তারা কারা
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আজ সোমবার গাজায় দুই বছর ধরে জিম্মি কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে। বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দী ও আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এ বন্দিবিনিময় হবে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে গাজায় থাকা ৪৮ জন জিম্মির মধ্যে ২০ জন বেঁচে আছেন। জেনে নেওয়া যাক, তাঁরা কারা।
নোভা সংগীত উৎসবের জিম্মিইসরায়েলি জিম্মিদের মধ্যে যাঁরা এখনো বেঁচে আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই সেখানকার দক্ষিণাঞ্চলের কিবুৎজ রেইমের কাছে অনুষ্ঠিত নোভা সংগীত উৎসব থেকে অপহৃত হয়েছিলেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ফরেনসিক ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জন জিম্মিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন সেনাসদস্যও আছেন। অন্যরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় সময় বন্দী হয়েছিলেন।অপহৃত ব্যক্তিদের একজন ২৪ বছর বয়সী এভিয়াটার ডেভিড। গত আগস্টে প্রকাশিত হামাসের এক ভিডিওতে সবশেষ তাঁকে মাটি খুঁড়তে দেখা গিয়েছিল। ভিডিওতে তিনি বলেন, তিনি নিজের কবর খুঁড়ছেন। অপহৃত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও আছেন ২৪ বছর বয়সী পিয়ানোবাদক অ্যালন ওহেল এবং ৩২ বছর বয়সী অ্যাভিনাটান অর।
আভিন্যাটান অর ও তাঁর প্রেমিকা নোয়া আর্গামানির অপহরণের একটি ভিডিও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। ভিডিওতে দেখা যায়, আর্গামানি কাঁদতে কাঁদতে অরের দিকে হাত বাড়িয়ে জীবন ভিক্ষা চাচ্ছেন। হামাস যোদ্ধারা দুজনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। আর্গামানিকে ২০২৫ সালের জুনে ইসরায়েলি বাহিনী উদ্ধার করে।
কিবুত্জের জিম্মিগাজা সীমান্তের কাছে কিবুৎজিম থেকে সাত ইসরায়েলিকে তাঁদের বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়। তাঁদের মধ্যে আছেন ২৮ বছর বয়সী যমজ গালি ও জিভ বারম্যান এবং এরিয়েল কুনিও (২৮) ও তাঁর ভাই ডেভিড কুনিও (৩৫)। ডেভিডের স্ত্রী শ্যারন ওি তাঁদের দুই মেয়েকেও অপহরণ করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময়ে শ্যারন ও দুই মেয়েকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি সেনাজিম্মিদের মধ্যে দুজন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্য। তাঁরা হলেন ম্যাটান আংগ্রেস্ট (২২) ও নিমরড কোহেন (২০)। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর প্রাথমিক সংঘর্ষের সময় হামাস যোদ্ধাদের হাতে তাঁরা ধরা পড়েন।
আরও পড়ুনজিম্মিরা মুক্ত হওয়ামাত্রই গাজার সুড়ঙ্গগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগেবিদেশি জিম্মি৪৮ জন জিম্মির মধ্যে ৪ জন বিদেশি। তাঁদের মধ্যে তানজানিয়ার এক ছাত্র এবং থাইল্যান্ডের দুই শ্রমিককে নিখোঁজ অবস্থায় মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আর নেপালের ছাত্র বিপিন যোশী এখনো নিখোঁজ।
মৃত জিম্মিরাইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ফরেনসিক ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৬ জন জিম্মিকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন সেনাসদস্যও আছেন। অন্যরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় সময় বন্দী হয়েছিলেন। সেদিন হামাস ২৫১ ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছিল।
আরও পড়ুনগাজা থেকে জিম্মিমুক্তি শুরু কখন, কীভাবে২২ ঘণ্টা আগেঅপহরণের সময়ই কিছু জিম্মি নিহত হয়েছিলেন। কয়েকজনকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে। কয়েকজন নিহত হন গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায়।
হামাস জানিয়েছে, লাশগুলো উদ্ধার করতে সময় লাগতে পারে। এ জন্য বিশেষ আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যারা মরদেহগুলো শনাক্ত ও উদ্ধারকাজে সহায়তা করবে।