সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ করছেন। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর সমকালে বলেন, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-তে সব আচরণবিধি ও অন্যান্য বিধান বিবৃত আছে। এখন অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিবর্তনমূলক ধারা সংযোজন করা হচ্ছে। এটি কালাকানুন। তারা দ্রুত এটি প্রত্যাহার চান।

কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি মো.

বাদিউল কবির ও কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গেটের সামনে বিক্ষোভ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কর্মচারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পাপিয়ার কারাদণ্ডের খবরে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ

মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তার সাজার খবরে নরসিংদী সদর এলাকার মানুষজন স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা আনন্দ মিছিল করার পাশাপাশি মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

রবিবার (২৫ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন রায় ঘোষণা করেন। বিচারক পাপিয়াকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।

পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর ও জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

যশোরে নারী মাদক ব্যবসায়ীর যাবজ্জীবন

চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক দুই নেতা রিমান্ডে

স্থানীয়রা জানান, পাপিয়ার নানা অপকর্ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ভয়ে ছিলেন। তার শাস্তির খবরে এলাকায় খুশির বন্যা বইছে। আজ সত্যিকারের বিচার হলো। এটা একটা দৃষ্টান্ত। তার সাজার খবরে আনন্দ মিছিল বের হয়। স্থানীয় যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষ মিষ্টি বিতরণ করেন। 

মো. শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, “পাপিয়ার দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছিল যে, সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে ভয় পেত। আজকে আমরা আইনের বিজয় দেখলাম। এই রায় আমাদের সাহস জোগাবে, যে অন্যায় করে কেউ রেহাই পাবে না।”

রুবিনা আক্তার (৩৫) বলেন, এতদিন মনে হতো, টাকার জোরে সবকিছু চাপা পড়ে যাবে। আজকের এই শাস্তি প্রমাণ করল, আইনের হাত অনেক লম্বা। আমরা খুব খুশি। এলাকার নারীরাও আজ একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে।”

বাসাইল এলাকার সমাজকর্মী সাইদুর রহমান জনি বলেন, “আমি নিজে পাপিয়ার দাপটে কতবার প্রতিবাদ করতে গিয়েও পিছু হটেছি। এই রায়ের মাধ্যমে বোঝা গেল, কেউই অপরাধ করে নিরাপদ নয়। সমাজের তরুণরা এখন আরো বেশি সচেতন হবে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা যারা জীবনের বড় একটা সময় ন্যায়-নীতির কথা বলে কাটিয়েছি, তাদের জন্য এই রায় এক ধরনের বিজয়। এমন দৃষ্টান্তমূলক সাজা আমাদের সমাজের জন্য খুব জরুরি ছিল।”

২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেকবই, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় অর্থপাচার মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করে।

২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অর্থপাচার মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন।

২০২২ সালের ২১ আগস্ট পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। 

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকার পাঁচ তারকা হোটেলে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন পাপিয়া। এরপর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

২০২০ সালের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এদিকে, কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের রেকর্ড বইয়ে পাপিয়ার বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, পাপিয়া হাজতি রুনা লায়লাসহ কয়েকজন বন্দিকে গালাগাল ও ভয়ভীতি দেখাতে আঘাত করেছেন। এছাড়া, তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ইচ্ছেমতো অন্য বন্দিদের সেল পরিবর্তন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ