সিলেট নগরকে উত্তর ও দক্ষিণ—দুই ভাগে বিভক্ত করেছে সুরমা নদী। কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে নগরের বিভিন্ন অংশে নদীর দুই পারই ভাঙছে। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পার উপচে পানি ঢুকে বন্যাও দেখা দিচ্ছে। এবার বর্ষা আসার আগেই শুরু হয়েছে নদীভাঙন। এ অবস্থায় শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি উঠেছে।

ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজন বলছেন, নগরের উত্তর অংশে কালীঘাট আমজাদ আলী রোড গাঙপার এবং দক্ষিণ অংশে খোজারখলা এলাকায় চলতি বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই নদীভাঙন শুরু হয়েছে। এতে উভয় অংশে বাসাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়েছে। এ ছাড়া নগরের কুশিঘাট এলাকায় নদীর উভয় পারই ক্রমাগত ভাঙছে। অন্যান্য বছর এ তিনটি এলাকায় নদীভাঙন থাকলেও চলতি বছর ভাঙনের তীব্রতা বেশি।

আমজাদ আলী রোড গাঙপার এলাকার পাশেই মাছিমপুর এলাকা। ওই এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ (২৪) সোবহানীঘাট সবজি বাজারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। গত বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আমজাদ আলী রোড গাঙপারের নদীভাঙনকবলিত এলাকায় দাঁড়িয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১০ থেকে ১৫ দিন আগে ভাঙন শুরু হইছে। প্রথমে ফাটা দিছে। পরে লায় লায় (ধীরে ধীরে) পার ভাঙছে। এখন প্রতিদিন ভাঙতাছে।’

সিলেটে সুরমা নদীর এপার–ওপার দুপারই ভাঙছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের একজন নারী একটি ফেস্টুন হাতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাতে লেখা ছিল ‘নদী আমাদের মা, মায়ের বুক ভাঙা চাই না।’ এ রকম আরও বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার, ফেস্টুন হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষেরা।

জেলার চারঘাট উপজেলা সদরে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার ভাঙনকবলিত পাঁচটি গ্রামের মানুষের উদ্যোগে আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এই আয়োজন হয়।

গ্রামবাসীর ভাষ্য, চারঘাট উপজেলার গোপালপুর, রাউথা, পিরোজপুর, সাহাপুর এবং বাঘা উপজেলার চক রাজাপুর, আতারপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করা হলে আগামীতে ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এই আশঙ্কায় ভাঙনকবলিত গ্রামবাসী এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছিলেন চারঘাটের পিরোজপুর গ্রামের শাহানাজ বেগম (৪০। তিনি বললেন, ‘আমার বাড়ি নদীর পাড়ের ওপরে ঝুলি আছে। যকুন তকুন ভাইঙ্গি পড়বি।’

একই এলাকা থেকে এসেছেন পারভীনা খাতুন (৩৫)। সঙ্গে তাঁর শিশু ও বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, নদী একেবারে পায়ের তলায় এসে গেছে। তাঁদের আর পেছনে সরার জায়গা নেই।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ। তিনি বলেন, পিরোজপুর, গোপালপুর, সাহাপুর এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে নদীভাঙন অব্যাহত আছে। এলাকার অন্তত ৫০০ মানুষের ঘরবাড়ি পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকার বাস্তুহারা মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা এলাকায় ফিরতে পারছেন না। এই ভাঙনকবলিত এলাকায় এবার যদি বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে জনগণ আবার রাজপথে নামবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অচল করে দেওয়া হবে। তাঁদের অফিস করতে দেওয়া হবে না।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহীন আলী, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির রহমান, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সালেক আদিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শাহীনুর রহমান, ভাঙনকবলিত এলাকার শিক্ষক মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চারঘাটে পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন