পঞ্চগড়ে উদ্ধার সেই নীলগাই মারা গেল ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে
Published: 25th, May 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে একটি নীলগাই মারা গেছে। গতকাল শনিবার ভোরের দিকে পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নীলগাইটি মারা যায়। বর্তমানে পার্কটিতে দুটি নীলগাই রয়েছে।
সাফারি পার্ক সূত্র জানায়, ১১ মে পঞ্চগড় থেকে আহত অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক ওই স্ত্রী নীলগাইটি উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। ১৫ মে নীলগাইটি ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকে পার্কের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল প্রাণীটি। গতকাল ভোরে নীলগাইটির মৃত্যু হয়। দুপুরে নীলগাইটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফ উদ্দিন ও সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন খাতেম জুলকারনাইন। এরপর পার্কের ভেতরে নীলগাইটির মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন খাতেম জুলকারনাইন বলেন, যখন নীলগাইটি পার্কে হস্তান্তর করা হয়, তখনই প্রাণীটির চার পাসহ শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এমনকি সামনের ডান পায়ের জয়েন্ট ভেঙে ক্ষত তৈরি হয়ে পুঁজ বের হচ্ছিল। ক্ষতস্থানে জীবাণু আক্রমণের ফলে নীলগাইটি রোগ প্রতিরোধের শারীরিক সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে। এ কারণে নীলগাইটির মৃত্যু হয়েছে।
নীলগাই বিলুপ্ত প্রজাতির একটি বন্য প্রাণী। গাই হিসেবে পরিচিত হলেও নীলগাই গরু শ্রেণির নয়। এটি এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ হরিণ শ্রেণির প্রাণী। ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বাংলাদেশের লাল তালিকায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ৩১ প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি নীলগাই।
চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা নূরজাহান বলেন, দেখতে ঘোড়ার মতো হলেও নীলগাই প্রকৃতপক্ষে অ্যান্টিলোপ জাতীয় প্রাণী। প্রাণীটি সাধারণত দল বেঁধে থাকতে পছন্দ করে। ১৯৪০ সালের আগে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নওগাঁ, জয়পুরহাট এলাকার বনে প্রাণীটির দেখা মিলত। বাসস্থান ও খাদ্যের অভাবসহ প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রাণীটি বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে কয়েক বছর ধরে মাঝেমধ্যে যে কয়েকটি নীলগাই উদ্ধারের খবর পাওয়া যায়, সেগুলো মূলত ভারত থেকে আসা। বর্তমানে ভারত ছাড়াও পাকিস্তান ও নেপালে নীলগাইয়ের বসবাস রয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে আসা নীলগাইগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় লোকজনের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে, অথবা সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় লেগে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে।
অসুস্থ নীলগাইটি মারা যাওয়ার পর বর্তমানে পার্কে দুটি নীলগাই রয়েছে বলে জানান ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, এর মধ্যে একটি স্ত্রী লিঙ্গের, অন্যটি পুরুষ। গত ১৪ এপ্রিল স্ত্রী নীলগাইটি পঞ্চগড় ও পুরুষ নীলগাইটি গাজীপুরের সাফারি পার্ক থেকে আনা হয়। ওই দুটি নীলগাই সুস্থ রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন য প র ণ
এছাড়াও পড়ুন:
পলিথিন শপিং ব্যাগ বন্ধে সিদ্ধিরগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, জরিমানা
নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ রোধকল্পে সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
অভিযানে চিটাগাংরোড এলাকার সাহারীয়ার ষ্টোর থেকে ২০০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয় এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, বায়জিদ ষ্টোর থেকে ১২০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয় এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ও শাওন ষ্টোর থেকে ৩০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয় এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
রবিবার (২৫ মে) পরিবেশ অধিদপ্তর, মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং এর বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী সচিব জনাব ফয়জুন্নেছা আক্তারের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম সিদ্ধিরগঞ্জে এ অভিযান পরিচালনা করেন। পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক, মো. রাসেল মাহমুদ প্রসিকিউশন প্রদান করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ. এইচ. এম রাসেদ জানান, অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ রোধকল্পে বিধিমালা, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ৬ক ধারা লংঘন ১৫ এর ৪(খ) মোতাবেক এ জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
তিনি আরও জানান, নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগের বিক্রয়/বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শনকারী, মজুদ, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ রোধকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তরের এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।