ফরিদপুরে অসহায় পরিবারের ভিটেমাটি দখলের চেষ্টা, যুবক গ্রেপ্তার
Published: 25th, May 2025 GMT
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় অপারেশন ডেভিল হান্টে রুবেল শেখ (৪০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আকোটরচর ইউনিয়নের তালতলা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। তিনি ওই ইউনিয়নের ছোনপঁচা গ্রামের শেখ মান্নানের ছেলে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে এক অসহায় পরিবারের ভিটেমাটি জোরপূর্বক দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, তালতলা গ্রামের সত্তোর্ধ্ব শেখ আব্দুর রউফ নামে এক দারিদ্র কৃষকের বসতবাড়িসহ ১৬ শতাংশ জমি জোরপূর্বক লিখে দেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকিসহ চাপ সৃষ্টি করেন রুবেল শেখ। এমনকি তার বসতবাড়ির ওপর জোরপূর্বক ঘরও তুলেন। পরে থানা পুলিশ খবর পেয়ে বাঁধা দেন। এসব বিষয় নিয়ে একাধিকবার সালিশ বসলেও তা অমান্য করে আসছিলেন তিনি। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শেখ আব্দুর রউফের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামীর এই জমিটুকুই তার শেষ সম্বল। কিন্তু এই জমি নেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে রুবেল। লিখে না দিলে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে।
তিনি জানান, তার স্বামী অন্যত্র যাওয়ার জন্য জমিজমা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে রুবেলের সঙ্গে ২৭ লাখ টাকায় বিক্রির কথা হয়। এরমাঝে রুবেল ১৮ লাখ টাকা দিয়ে বাকি টাকা না দিয়েই জমি লিখে দিতে বলে। পরবর্তীতে ১৬ লাখ টাকা ফেরত নিয়ে যায় এবং দুই লাখ টাকা রেখে দিয়ে বলেন, পরে নিবেন।
রাজিয়া বেগম আরও বলেন, আমরা ভিটেমাটি বিক্রি করে এই টাকা দিয়েই অন্য এলাকায় জমি কেনার জন্য বায়না দিয়েছিলাম। রুবেল সম্পূর্ণ টাকা না দেওয়ায় আমারাও তাদের টাকা দিতে পারিনি। এর ফলে তারাও টাকা ফেরত দিয়ে দেন। এরপর বাকি দুই লাখ টাকা ফেরত না নিয়েই সব জমি লিখে দেওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দেন। এরপর জোর করে ঘরও তুলেন। থানার ওসি মীমাংসা করে দিলেও রুবেল কারও কথা মানেনি। তিনি কয়েকদিন ধরে আমার স্বামীকে মেরে ফেলার জন্য খুঁজছিলেন এবং বাড়ির পাশে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আসছিল।
রুবেলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তিস্তায় তীব্র ভাঙন, ঝুঁকিতে শতাধিক বসতবাড়ি
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে গত সাত দিনের ব্যবধানে ৭৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া ঝুঁকির মুখে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।
এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার কাপাসিয়া, হরিপুর, শ্রীপুর ও চণ্ডীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের মুখে নদীতীরবর্তী বাসিন্দা অনেকে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া-আসা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডীপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নদীভাঙন। চলতে থাকে বছরব্যাপী। প্রতিবছর গড়ে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি ও বিপুল ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটি কাপাসিয়া গ্রামের মামুন মিয়া জানান, হঠাৎ করে তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তাঁর বসতবাড়িসহ এক বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ভাঙনের মুখে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি।
হরিপুর লখিয়ারপাড়া গ্রামের সোলেমান মিয়া বলেন, প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে। চর এলাকার বাসিন্দাদের বারবার ঘরবাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া জানান, তাঁর ইউনিয়নের উত্তর লালচামার গ্রামে তিস্তার তীব্র ভাঙনে সাত দিনে ৭৫ পরিবারের বসতবাড়ি ও বিপুল ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে শতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।
হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নদীখনন ও স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শুধু জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানো না হলে চরবাসীর দুঃখ কোনোদিনও দূর হবে না।
সুন্দরগঞ্জ ইউএনও রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, আপাতত জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।