১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করা হবে কোরবানির বর্জ্য: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 25th, May 2025 GMT
এবার কোরবানি শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে সকল বর্জ্য অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার আসন্ন ঈদ উল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাট ও কাঁচা চামড়া সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভা এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রতিবারই অনেক চামড়া নষ্ট হয়। আমরা চাই, বিক্রেতারা চামড়ার নায্য মূল্য পাক। চামড়ার নায্যমূল্য গরিবের হক। চামড়াগুলো বিভিন্ন গরিব মানুষকে, এতিমখানায়, মাদ্রাসায় দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা এটার নায্যমূল্য পান না। এবার তারা যাতে নায্যমূল্য পায়, সেটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর আমরা চেষ্টা করছিলাম হাসিলটা কমানো যায় কিনা। তাদের সঙ্গে আমরা বসে আলোচনা করে বলেছি, ৫ শতাংশ হাসিল অনেক বেশি। এটা কমানো যায় কিনা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও হাসিল কমাতে পারিনি। আগামীবার হয়তো আমরা থাকবো না, কিন্তু আমরা কাজ করে যাচ্ছি আগামীবার থেকে হাসিল যাতে ৩ শতাংশের বেশি না হয়। এবার দুই দিকে ২০টি হাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এসব হাটে যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকঠাক থাকে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা পশুর হাটে চিকিৎসক এর ব্যবস্থা করেছি। কোনো অসুস্থ গরু যেন বিক্রি হতে না পারে। এছাড়া অনেকেই গরুর হাটে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে; তাদের জন্যও চিকিৎসক থাকবে। প্রতিটি হাটের দায়িত্বশীলরা এটার বন্দোবস্ত করবে। প্রতিটি হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যেক আনসার সদস্য থাকবে।’
উপদেষ্টা বলেন, প্রায় তিনদিন কোরবানি চলবে। প্রথম দিনের প্রায় ৯০ শতাংশ গরু কোরবানি করা হয়ে যায়। এরপর ২ দিন কিছু কিছু করে কোরবানি হয়। ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যেন অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রশাসকরা আমাদের কথা দিয়েছেন ১২ ঘণ্টার মধ্যে সকল বর্জ্য অপসারণ করা হবে। এজন্য সকল প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি প্রশাসকদের ধন্যবাদ জানাই।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র ব যবস থ উপদ ষ ট ক রব ন বর জ য
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।