২৭ বছর বয়সে শতকোটিপতি হলেন যে ইউটিউবার
Published: 25th, May 2025 GMT
ইউটিউবের জনপ্রিয় আধেয় নির্মাতা মিস্টার বিস্টের সম্পদ শতকোটি বা এক বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে বলে জানা গেছে। ২৭ বছর বয়সে এই ইউটিউবার বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ ‘সেলফ বিলিয়নিয়ার’ হন।
মিস্টার বিস্টের আসল নাম জিমি ডোনাল্ডসন। সাধারণ সব ভিডিও দিয়ে শুরু করেছিলেন। এখন রীতিমতো টেলিভিশন রিয়েলিটি শোর মতো চ্যালেঞ্জ আর পুরস্কার নিয়ে অনুষ্ঠান তৈরি করেন তিনি। একই সঙ্গে বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন। শুধু ভিডিও তৈরি নয়, একই সঙ্গে ব্যবসা করছেন তিনি। বিস্ট বার্গার আর ফিস্টেবলস তাঁর অন্যতম উদ্যোগ। মূলত ইউটিউব থেকে আয় করেই সেই আয়কে আবার ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছেন তিনি। ইউটিউব থেকে আয় করেই বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় যোগ দিয়েছেন তিনি। এখন তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার, যার ফলে ২৭ বছর বয়সী এই কন্টেন্ট নির্মাতা বিশ্বব্যাপী অষ্টম কনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার। ৩০ বছরের কম বয়সী ধনীদের মধ্যে তিনিই একমাত্র, যিনি উত্তরাধিকারসূত্রে কোনো সম্পদ পাননি।
মিস্টার বিস্ট কিশোর বয়সে ইউটিউবে কনটেন্ট নির্মাণ করা শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনাতে তাঁর বেড়ে ওঠা। ২০১৭ সালে ‘আই কাউন্টেড টু ওয়ান লাক’ নামের ভিডিওর মাধ্যমে তাঁর প্রথম ভাইরাল সাফল্য আসে। সেই ভিডিও তৈরি করতে তাঁর ৪৪ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। সেই ভিডিও এখন পর্যন্ত তিন কোটির বেশিবার দেখা হয়েছে। ভিডিও তৈরিতে সাফল্য লাভের পর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নানা ধরনের অ্যাডভেঞ্চার আর রোমাঞ্চকর ভিডিও তৈরি করে আলোচনায় আসেন তিনি। তাঁর সাবস্ক্রাইবারদের নিয়ে বিভিন্ন রিয়েলিটি শো আয়োজন করে নজর কাড়েন মিস্টার বিস্ট।
একের পর এক হিট কনটেন্ট তৈরি করে তিনি ২০২৪ সালের ফোর্বস–এর শীর্ষ নির্মাতাদের তালিকায় একজন শীর্ষস্থানীয় নির্মাতা হিসেবে জায়গা করে নেন। ফোর্বসের হিসেবে একসময় তাঁর মোট সম্পদ ছিল ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের একটি মামলার আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে তাঁর আয় ছিল ২২ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২০২৪ সালে তা ৭০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর কথা। বিস্ট বার্গার ফাস্ট ফুড চেইন তিনি ২০২০ সালে চালু করেন। সেখান থেকে তাঁর প্রতি মাসে ২৩ লাখ ডলার আয় হয়। মিস্টার বিস্ট ফিস্টেবলস নামে একটি চকলেট বার কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকে তাঁর প্রতি মাসে এক কোটি ডলারের বেশি আয় বলে জানা যায়।
এ ছাড়া ক্রিয়েটিভ জুসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জুস ফান্ডস নামে একটি ২০ লাখ ডলারের তহবিল প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। এখান থেকে উদীয়মান নির্মাতাদের মধ্যে বিনিয়োগ করা হয়। ক্রিপ্টো ও প্রযুক্তি খাতে তাঁর মিস্টার বিস্ট বিটকয়েন ও ক্রিপ্টো পাঙ্কস এনএফটি রয়েছে। মিস্টার বিস্ট কয়েনবেস, রিফাইনেবল ও এক্সক্যাড নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন ভিডিও মাধ্যমে তাঁর পুরস্কার দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় ১০০টির বেশি গাড়ি দান করেছেন। টিম ট্রিজের মাধ্যমে গাছ লাগানোর জন্য দুই কোটি ডলার সংগ্রহ করেছেন।
২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইউটিউবে তাঁর চ্যানেলে ৩০ হাজারের কম সাবস্ক্রাইবার ছিল। ২০২১ সালে ১ বছরে ৩ কোটি ৭০ লাখ সাবস্ক্রাইবার যোগ হয় তাঁর চ্যানেলে। স্প্যানিশ, ফরাসি, আরবিসহ ১০টির বেশি ভাষায় ডাব করা ভিডিও নিয়ে তাঁর আলাদা চ্যানেল চালু আছে। ২০২৪ সালের জুনে তাঁর চ্যানেল ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি সাবস্ক্রাইব করা চ্যানেলে পরিণত হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ফোর্বস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ