আগামী বাজেটে এসি ও ফ্রিজের দাম বাড়তে পারে
Published: 25th, May 2025 GMT
আগামী অর্থবছরের বাজেটে ফ্রিজ ও শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট হার দ্বিগুণ করা হচ্ছে।
বর্তমানে দেশি ফ্রিজ ও এসির ওপর উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হয়। আগামী বাজেটে তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে ফ্রিজ ও এসির দাম বাড়তে পারে।
আগামী ২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেটে মুঠোফোনের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর এই নতুন প্রস্তাব করা হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে এবারের বাজেট উপস্থাপন করবেন। সেখানে শুল্ক-করসংক্রান্ত পরিবর্তনের প্রস্তাবগুলো থাকবে।
এনবিআরের কর কর্মকর্তারা জানান, দেশি ফ্রিজ ও এসির উৎপাদকেরা কারখানা থেকে সরবরাহ পর্যায়ে এই ভ্যাট দেন। এই হার ১৫ শতাংশ করা হলে ভ্যাট রেয়াত নিতে পারবেন। ফ্রিজ ও এসির উপকরণ বা যন্ত্রাংশ সাধারণত প্রতিষ্ঠিত সরবরাহব্যবস্থা বা প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হয়।
সূত্রমতে, এ দুই খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে আরও বাড়িয়ে ভ্যাট হার করা হয়েছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। এখন এই খাতগুলোতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বর্তমানে দেশে ওয়ালটন, ইলেক্ট্রোমার্ট, ট্রান্সকম, এসকোয়্যার, সিঙ্গার বাংলাদেশ, বাটারফ্লাই, র্যাংগ্স, ইলেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল, মিনিস্টার, ভিশন, এলজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।
ফ্রিজ ও এসি খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বর্তমান এসির বাজারের দুই-তৃতীয়াংশই এখন দেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। শহর এলাকায় বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর চল থাকলেও মফস্সলের বাজার পুরোটাই এখন দেশি ব্র্যান্ডগুলোর দখলে। এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে সাশ্রয়ী মূল্য ও সহজলভ্যতা। বর্তমানে বছরে গড়ে ছয় থেকে সাত লাখ এসি বিক্রি হয়। দ্রুত এ খাতের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে ফ্রিজের বাজারেও ওয়ালটনসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী অবস্থান আছে। প্রতিবছর গড়ে ২০ থেকে ২৫ লাখ ফ্রিজ বিক্রি হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ র জ ও এস র
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস