জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আজ রোববারও পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন চলছে। আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের নিচে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতির কর্মসূচি পালন করছেন।

তবে কাস্টমস হাউস, এলসি স্টেশন, রপ্তানি কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মবিরতির বাইরে রয়েছে।

এদিকে আজ সরেজমিন দেখা গেছে, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ বাইরে, কেউ ভেতরে দাঁড়িয়ে কিংবা পেপার বিছিয়ে বসিয়ে অলস সময় পার করছেন।

অন্যদিকে এনবিআরের ভবনের ভেতরে এবং বাইরে বিপুল সংখ্যক বিজিবি এবং পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। তাদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে দেখা গেছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য উপস্থিত নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তাদের অভিযোগ পরিষদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনে আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করছে সরকার। 

ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে কর্মসূচি শেষে আজ বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী করণীয় জানানো হবে।

তবে নতুন কোনো ঘোষণা না এলে আগামীকাল সোমবার থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ছাড়া আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে বলে জানা গেছে।

যে চার দাবিতে আন্দোলন:
নতুন অধ্যাদেশ বাতিল, চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনা করে প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করছেন। এনবিআরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনব আর করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা দিল সেনাবাহিনী

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেনানিবাসের ভেতরে প্রাণ রক্ষায় আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের বিষয়ে অবস্থান জানিয়েছে সেনাবাহিনী। সে সময়ে শুধু মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবনরক্ষা করাই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনীর এ অবস্থান তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, পরিস্থিতি উন্নয়ন সাপেক্ষে আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশির ভাগই ১–২ দিনের মধ্যে সেনানিবাস ত্যাগ করেন। এর মধ্যে ৫ জনকে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বা মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই–আগস্ট ২০২৪ এর ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর কতিপয় কুচক্রী মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলশ্রুতিতে সরকারি দপ্তর ও থানাসমূহে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর আক্রমণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতা জন্ম নেয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় ঢাকাসহ দেশের প্রায় সকল সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার নাগরিকেরা আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই–বাছাই করার চাইতে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবার–পরিজন (স্ত্রী ও শিশু) সহ সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে গত ১৮ আগষ্ট আইএসপিআরের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই দিনে ১৯৩ ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়। সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থী এ সকল ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার্থে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িক আশ্রয় প্রদান করা হয়েছিল।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ ব্যক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্যসহ) এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সাথে সংযুক্ত করা হলো।

সকলকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সাথে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
  • সোমবার থেকে আমদানি-রপ্তানির সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা
  • কর্মবিরতিতে কর্মীরা, অচল এনবিআর
  • আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক ১১ সদস্য ট্রাইব্যুনালে
  • ঢাকাসহ সারা দেশে সাত দিনের যৌথ অভিযানে আটক ২৫৮
  • সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান
  • গণঅভ্যুত্থানের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা দিল সেনাবাহিনী