খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পদ্মা, মেঘনা, যমুনার ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে পেট্রলপাম্পগুলোও বন্ধ রয়েছে। তেল বিক্রিতে কমিশন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মসূচির কারণে ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।

পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যাংকলরি শ্রমিক ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মীর মোকসেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল ছয়টা থেকে খুলনার ডিপোগুলো থেকে কোনো তেল উত্তোলন ও পরিবহন করা হয়নি। জ্বালানি তেল পরিবেশক মালিকপক্ষ এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। জ্বালানি তেল বিপণনও বন্ধ রয়েছে।

খুলনার তিনটি ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩৯ লাখ লিটার জ্বালানি তেল খুলনা, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের ১৫ জেলায় সরবরাহ করা হয়।

জ্বালনি তেল পরিবেশকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে তেল বিক্রয়ের কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করা; সড়ক অধিদপ্তরের ইজারা, ভূমির ইজারা মাশুল আগের মতো বহাল রাখতে হবে; পাম্পের সংযোগ সড়কের ইজারাপ্রাপ্ত ভূমির নবায়নকালে ইজারা নবায়নের আবেদনের সঙ্গে নির্ধারিত ইজারা–মাশুলের পে-অর্ডার, সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরে জমা দিলে ওই ইজারা নবায়ন বলবৎ বিবেচিত হওয়ার বিধান করা; বিএসটিআই কর্তৃক আগের মতো শুধু ডিসপেন্সিং ইউনিট, স্টেম্পিংয়ের পরিমাপ যাচাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা, বিভিন্ন ফি আগের মতো করা, আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফিস ও নিবন্ধনপ্রথা বাতিল করা।

১০ দফা দাবির মধ্যে আরও আছে, যেহেতু পেট্রলপাম্প শিল্প নয়, এটি কমিশন এজেন্টভিত্তিক ব্যবসা, তাই পেট্রলপাম্পের ক্ষেত্রে পরিবেশ, বিআরসি, কলকারখানা ও ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স বা নিবন্ধনের বিধান বাতিল করতে হবে; দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুমোদনবিহীন ও অবৈধভাবে ঘরের মধ্যে ও খোলা জায়গায় যত্রতত্র মেশিন স্থাপন করে অবৈধভাবে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ করা, বিপণন কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ করতে হবে; ট্যাংকলরির চালকসংকট কাটাতে ট্যাংকলরির চালকদের লাইসেন্স নবায়ন এবং নতুন লাইসেন্স ইস্যু সহজতর করতে হবে; গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে রাস্তায় যত্রতত্র ট্যাংকলরি থামানো যাবে না। তেলের ডিপো গেটে ট্যাংকলরির কাগজপত্র পরীক্ষার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সব ট্যাংকলরির জন্য আন্তজেলা রুটে পারমিট ইস্যু করতে হবে।

আজ সকালে খালিশপুরের কাশিপুরে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের গেট ও এর আশপাশে বিচ্ছিন্নভাবে ট্যাংকলরি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। শহরের পেট্রলপাম্পগুলো থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে না।

শহরের নতুন রাস্তা এলাকার মেসার্স খুলনা ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী গোলাম কাদের জানান, পাম্পে সব ধরনের জ্বালানির মজুত আছে, তবে সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত তাঁরা তেল বিক্রি করবেন না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ট রলপ ম প পর বহন কলর র

এছাড়াও পড়ুন:

ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৮-১৯ বর্ষের অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বছরখানেক আগেই স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু নম্বরপত্র না পেয়ে উচ্চশিক্ষার আবেদনসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।

সফটওয়্যার সিস্টেমে সমস্যা থাকার কারণে নম্বরপত্র উত্তোলনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কবে নাগাদ সমাধান হবে সে বিষয়েও নিশ্চিত বলতে পারেননি তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সনদ ও নম্বরপত্র প্রদান করা হত। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে অনলাইনের মাধ্যমে এসব ডকুমেন্টস প্রদানে প্রিন্ট সেবা মাধ্যম চালু হয়। স্নাতক ২০১৮-১৯ বর্ষ থেকে পরবর্তী বর্ষের শিক্ষার্থীরা এই সেবা পাবেন বলে জানানো হয়। তবে বাস্তবে কেবল সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদান করা হলেও নম্বরপত্র পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। 

আরো পড়ুন:

কুবি উপাচার্যের মেয়ের পোষ্য কোটায় ভর্তি নিয়ে বিতর্ক

গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠালেন জবি শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, “২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্নাতক শেষ করি। তবে ১ বছর পরও নম্বরপত্র হাতে পাইনি। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারিতে মাস্টার্স শেষ করে ক্যাম্পাস ছেড়েছি। অন্য সব কাগজপত্র তুলতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস নম্বরপত্র না নিয়েই ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে। কবে নাগাদ প্রদান করা হবে সেটাও আমাদের নিশ্চিত করা হয়নি।”

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান বলেন, “আমাদের শিক্ষাবর্ষের অনেকেই ইতোমধ্যে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেছেন। তবে দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, এখনো অনেকেই নম্বরপত্র পাননি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “সফটওয়্যার সিস্টেমের অজুহাতে কাগজপত্র উত্তোলনে বারবার ভুল ও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। নিয়মমাফিক প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরও নম্বরপত্র দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করা জরুরি।”

বৈষম্যবিরোধী ইবির সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, “কাগজপত্র উত্তোলনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা আগের মতোই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নতুন বাংলাদেশে এমন আচরণ লজ্জাজনক। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে এবং দ্রুত নম্বরপত্র প্রাপ্তিতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখছি।”

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর পরিচালক ওয়ালিউর রহমান বলেন, “সফটওয়্যারের সিস্টেমের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে মূলত পূর্বের কোম্পানির সঙ্গে কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুনভাবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। তারপর তারা কাজ শুরু করবে। কিন্তু এখনো চুক্তিপত্র হয়নি কিংবা কোম্পানিও ঠিক হয়নি বলে জানি। কবে নাগাদ সমাধান হতে পারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক ড. শাহজাহান আলী বলেন, “বিষয়টি অবগত আছি। শুধু নম্বরপত্র নিয়েই সমস্যা হচ্ছে, বাকিগুলো ঠিকমতো আসছে। যে কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরি করেছে, তারা সমাধান না করলে এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিভিন্নভাবে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

তিনি বলেন, “নতুনভাবে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। নতুন করে সফটওয়্যার ডেভেলপ ও ডিজাইন করতে হবে। এটা সময় সাপেক্ষ এবং এর সঙ্গে আর্থিক বিষয়াদিও জড়িত। বিষয়টির সমাধানে অফিসিয়ালি কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুতই সমাধান আসবে।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুরাদনগরের মা, ছেলে ও মেয়েকে হত্যার মামলা ডিবিতে
  • ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র