গহিন অরণ্যের আস্তানায় এসে পৌঁছাতেই সবাই বিব্রত হলেন। আশপাশের জলাশয় থেকে মশককুলের ঝাঁক এসে আক্রমণ করেছে। ফুরফুরে মেজাজে সাঙ্গদের নিয়ে হিটলার এসেছেন ‘ভল্ফশাঞ্জে’-তে। এখানে আসার দুই দিন আগেই সোভিয়েত রাশিয়ায় জার্মান বাহিনীর আক্রমণ শুরু হয়েছে। যুদ্ধের ভালো সংবাদ শোনার অপেক্ষায় হিটলার।

শেষ পর্যন্ত ভালো সংবাদ আসে না। শুধুই দুঃসংবাদ আর ক্ষয়ক্ষতি। কপালে ভাঁজরেখা পড়ে হিটলারের। রাতে ঘুম আসে না। অনিদ্রা আর দুশ্চিন্তায় মেজাজ হয়ে ওঠে খিটখিটে। নানা শারীরিক অসুস্থতা পেয়ে বসে। এসবের মধ্যে এই নিশ্ছিদ্র আবাসে হয় টাইমবোমা হামলা। হিটলারের তৃতীয় রাইখ গড়ার স্বপ্ন ক্রমেই মলিন হতে থাকে। তিনি আবার রাজধানী বার্লিনে ফিরে যেতে চান।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শিরোমণি ছিলেন অ্যাডলফ হিটলার। বিধ্বংসী সেই যুদ্ধ অবসানের ৮০ বছর পরও জার্মানদের শুরু করা ভয়াবহ যুদ্ধ নিয়ে নতুন নতুন নানা তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। নানা অজানা ঘটনায় উঠে আসছে ব্যক্তি হিটলারের মনোজগতের কথা, দৈনন্দিন জীবন, কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা, যুদ্ধজয়ের আকাঙ্ক্ষা আর নাৎসি শাসনকে কবজায় রাখতে নৃশংস সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুহূর্তের কথা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছিল ১৯৪৫ সালের ৮ মে। এই বছর সেই নৃশংস যুদ্ধের ৮০ বছর স্মরণে জার্মানিতে গত মার্চ মাস থেকেই নানা প্রবন্ধ, পুস্তিকা, পত্রিকা বা সাময়িকীগুলোয় দুঃসময়ের ভয়াবহতা ও শোক–দুঃখের সব করুণ কাহিনি উঠে এসেছে।

জায়গাটির নাম ‘ভল্ফশাঞ্জে’ বা বাংলায় ‘নেকড়েদের আস্তানা’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শেষ বছরগুলোতে অ্যাডলফ হিটলার প্রায় পুরো সময়ই জার্মানির অধীন সাবেক পূর্ব প্রুশিয়া বা বর্তমানে পোল্যান্ডে নির্জন বাংকার বসতিতে বসবাস করতেন। তাঁর আত্মরক্ষার্থে আরও বাংকার ছিল বাভারিয়া রাজ্যের আল্পস পর্বতমালার বার্চটেসগাডেন-ওবারসালজবার্গে। আর ছিল বার্লিন শহরের কেন্দ্রস্থলে ভিলহেলমস্ট্রাসে ৭৬ ও পেছনের রুড-কলমাস্ট্রাসের সীমান্ত ঘিরে হিটলারের তৈরি নতুন চ্যান্সেলর ভবনের পেছনে বাগানের নিচে।

জার্মানিতে অবস্থিত হিটলারের ব্যাংকার–জীবন ও সহকর্মীদের নিয়ে নানা তথ্য জানা থাকলেও সাবেক জার্মান বর্তমানে পোল্যান্ডে অবস্থিত ভল্ফশাঞ্জে বাংকারটির কথা কমই শোনা যায়। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ বছরগুলোতে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৪ সালের মধ্যে তিনি ৮০০ দিনের বেশি সময় সেখানে কাটান। যুদ্ধ চলাকালীন যতটা সময় তিনি ভল্ফশাঞ্জে ছিলেন, ততটা সময় আর কোথাও কাটাননি।

জার্মানির একজন ইতিহাসবিদ ও সাংবাদিক ফেলিক্স বোয়ের গত মার্চ মাসে ‘পতনের পূর্বে ভল্ফশাঞ্জে হিটলারের বছরগুলো’ শিরোনামে একটি বই লিখেছেন।

এই আবাসস্থল অনেকের কাছে পরিচিত হলেও খুব কম মানুষই জানেন না, এই স্থাপনাতে প্রায় সাড়ে তিন বছরে কী ঘটেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি, অপ্রকাশিত দলিলের ভিত্তিতে ফেলিক্স বোয়ের এই বইতে ভল্ফশাঞ্জেতে হিটলারের দৈনন্দিন জীবনের চালচিত্র ফুটে উঠেছে। লেখক তাঁর বর্ণনাতে কিছু মৌলিক প্রশ্নকে সামনে এনেছেন।

সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা, রাঁধুনি ও ব্যক্তিগত ভৃত্যদের দেওয়া তথ্য থেকে হিটলারের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে কী জানা যায়? এই গহিন অরণ্যে ক্রমে বিশৃঙ্খল পরিবেশ ও সন্দেহে ভরা আবহাওয়া কীভাবে সেখানকার সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করেছিল। লেখক ফেলিক্স বোয়ের গভীর ও বিশদ বর্ণনার মধ্য দিয়ে একটি সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ উঠে এসেছে। নাৎসি শাসনের শীর্ষ স্তরের নেতারা, যাঁরা চা-আড্ডা ও বনে হাঁটার মধ্যেই জার্মান জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর মানবতাবিরোধী অপরাধ পরিকল্পনা করেছিল।

ভল্ফশাঞ্জে গভীর জঙ্গলের ভেতর বিশাল গোপন আস্তানার কাজ শেষ হলে অ্যাডলফ হিটলার ও তাঁর সহযোগীরা ১৯৪১ সালের ২৪ জুন রাতে আস্তানায় এসে পৌঁছান। পৌঁছানোর পরই তাঁরা বিব্রত হন মশককুলের আক্রমণে। কাছাকাছি জলাশয় থেকে মশার ঝাঁক উড়ে এসে আগতদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিশেষ করে ঘাড়ের অংশ, যেখানে পোশাক সুরক্ষা দিত না, তা হয় আক্রমণের লক্ষ্য। হিটলার শুরুতে এই মশার উপদ্রবকে রসিকতার সঙ্গে নেন। অফিসাররা যখন মশা মারতে ব্যস্ত ছিলেন, তিনি ঠাট্টা করে বলেন যে ‘মশা মারতে বিমানবাহিনী প্রয়োজন’, পরে এ কথা বলেন তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ক্রিস্টা শোর্ডার।

তখন তাঁর মেজাজ বেশ ফুরফুরে। দুই দিন আগে ১৯৪১ সালের ২২ জুন জার্মান সেনাবাহিনী সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী আক্রমণ শুরু করে। সোভিয়েতের বিরুদ্ধে এই আক্রমণ মোটামুটি পরিকল্পনামাফিক চলছিল। তিনি বলতেন, ‘চার সপ্তাহের মধ্যেই আমরা মস্কোতে পৌঁছে যাব।’ হিটলার আরও বলেছিলেন, ‘সোভিয়েত রাজধানীকে মাটির সঙ্গে সমান করে দেওয়া হবে।’

সোভিয়েত ইউনিয়নকে আক্রমণের শুরুতে তিনি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতারা ধরেই নিয়েছিলেন, এই মশকময় অঞ্চলে বেশি দিন থাকতে হবে না।

কিন্তু গ্রীষ্মের শেষ দিকে এসে সোভিয়েতমুখী জার্মান আগ্রাসন ‘অপারেশন বারবারোসা’ থমকে যায়। ফুহরার বা দলনেতা হিটলারের গোপন সদর দপ্তরে কয়েক সপ্তাহ থাকার পরিকল্পনা তিন বছরের বেশি সময়ে রূপ নেয়।

ভল্ফশাঞ্জের সবচেয়ে অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বৃত্তে হিটলারের সঙ্গে থাকত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী একটি ছোট চক্র। তাঁর সেক্রেটারি মার্টিন বোরম্যান কাছেই থাকতেন। ফুহরার নিজেকে সব সময় পরিচিতমুখ দ্বারা পরিবেষ্টিত রাখতেন। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ক্রিস্টা শ্রোয়েডার লিখেছেন, হিটলার ‘নিজের চারপাশে নতুন মুখ সহ্য করতে পারতেন না।’ তবে তাঁর সঙ্গিনী ইভা ব্রাউন কখনোই ভল্ফশাঞ্জে ছিলেন না।

হিটলারের কোয়ার্টারে তাঁর দিনগুলো সাধারণত পরিকল্পিত ও নিয়মিতভাবে কাটত। হিটলার নিজের সময়সূচি নিজেই ঠিক করতেন। অন্য সবাইকে সেটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হতো। সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেষ মিটিং অনেক সময় রাত দুইটায় শেষ হতো। এরপর হিটলার একটি ছোট চক্রকে চা-পর্বে আমন্ত্রণ জানাতেন, যা ভোর অবধি চলত। এই সময়ে তিনি তাঁর জীবনের ইচ্ছার কথা বলতেন। বলতেন অ্যাক্রোব্যাট নাচের শিল্পী বা চিত্রশিল্পী অথবা স্থপতি হওয়ার কথা।

শ্রোয়েডার তাঁর এক বান্ধবীকে লেখেন, ‘যদিও আমাদের প্রধান বস হিটলার সব সময় ক্লান্ত থাকেন, তবু বিছানায় যেতেন না। বিষয়টি ছিল যন্ত্রণাদায়ক। নানা অশান্তি আর আশঙ্কা শেষমেশ তাঁকে পেয়ে বসেছিল।’ আর চা-পর্ব আড্ডায় অংশগ্রহণকারীরা সব সময় গতানুগতিক একই মানুষ ছিলেন। ফলে বাইরের কোনো প্রেরণা বা নতুন উদ্যোগের ব্যাপারগুলো আসত না। আড্ডার সাথিরা কোনো ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা এই পরিস্থিতিতে কোনো নতুন ভাবনা শেয়ার করতেন না, তাই কথোপকথন প্রায়ই নীরস, ক্লান্তিকর ও ভারী হয়ে উঠত।

হিটলার সাধারণত সকালে দেরি করে উঠতেন এবং প্রায়ই দুপুর ১২টার পর নাশতা করতেন। তারপর তিনি তাঁর কুকুর ব্লন্ডিকে প্রশিক্ষণ দিতে বাইরে যেতেন। এ সময় কেউ তাঁকে বিরক্ত করতে পারত না। বিকেলের দিকে তিনি সামরিক নেতাদের সঙ্গে তথাকথিত ‘সকালের অবস্থা’ নিয়ে মিটিং করতেন, যেখানে তাঁকে ফ্রন্টের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হতো। এই দেরিতে দিন শুরু করার কারণে সামরিক নেতৃত্ব প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়া জানাতে মূল্যবান সময় হারাত।

তিনি ছিলেন একজন অতিমাত্রায় খুঁতখুঁতে প্রশাসক, যিনি নিজেই রণাঙ্গনে সব ধরনের সেনা চলাচল নির্দেশ দিতে চাইতেন। তাঁর অনেক সিদ্ধান্ত অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিপুলসংখ্যক সেনাদের প্রাণহানির কারণ হয়। বিশেষভাবে বিপর্যয়কর ছিল ১৯৪২ সালের শেষ ভাগে স্টালিনগ্রাদ দখলের আদেশ। তাঁর জেনারেলরা তাঁকে সতর্ক করেছিলেন যে এই লড়াই অত্যন্ত প্রাণঘাতী হতে পারে, এবং আক্রমণ স্থগিত করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু হিটলার জোর দিয়ে বলেন, ‘বিশ্বজনমত ও মিত্রদের মনোবলের জন্য, এই দখল শুধু কৌশলগত নয়, মনস্তাত্ত্বিকভাবেও খুবই জরুরি।’ জার্মানির পার্শ্ববর্তী দেশগুলো, মধ্য, উত্তর ও দক্ষিণ ইউরোপ সহজেই করায়ত্তের পর রাশিয়াকে সহজে কবজায় আনতে পারবেন বলে তিনি অতি বিশ্বাসী আর অহংকারী হয়ে উঠেছিলেন।

১৯৪২ সালের ২৩ নভেম্বর সোভিয়েত রেড আর্মি, জার্মান ষষ্ঠ সেনাবাহিনীর ২ লাখ ৬০ হাজার সৈন্যকে ঘিরে ফেলে। স্টালিনগ্রাদ দখলের স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠলে ভল্ফশাঞ্জে হিটলারের আবাসস্থলের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। ১৯৪৩ সালের জানুয়ারি মাসে একটি সফরের কথা স্মরণ করে রাইখ বা জার্মান সমরাস্ত্রবিষয়ক মন্ত্রী আলবার্ট স্পিয়ার লিখেছেন, ‘দেখতাম, সবার মুখ মুখোশের মতো জমে গেছে, আমরা চুপচাপ একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতাম।’ হিটলার সেনাদের ঘেরাও অবস্থায় থাকার আদেশ দেন। জেনারেল ফিল্ড মার্শাল কাইটেল বলেছিলেন, ‘আমার ফুহরার আদেশ মেনে চলব।’ কিন্তু ১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ সেনাবাহিনীর অবশিষ্ট অংশ ধ্বংস হয়ে যায়।

স্টালিনগ্রাদের এই পরাজয় ছিল যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড়। সেই সময় ৫৩ বছর বয়সী হিটলারের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। পড়ার সময় তিনি চশমা বা লুপ ছাড়া পড়তে পারতেন না। প্যাঞ্জার বা পদাতিক ট্যাংক বাহিনীর জেনারেল হেইঞ্জ গুডারিয়ান ১৯৪৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারির এক বৈঠকে লক্ষ করেন, ‘তাঁর আচরণ আর আগের মতো নয়, তাঁর ভাষা দোদুল্যমান, বাঁ হাত কাঁপছিল।’ প্রচারমন্ত্রী জোসেফ গোয়েবেলস রাইখস মার্শাল গোয়েরিংকে বলেন, ‘এই তিন বছরের মধ্য গত ছয় মাসে ফুহরার হিটলার অন্তত ১৫ বছরে বুড়ো হয়ে গেছেন।’

গোয়েবেলস দুঃখ করে তাঁর ডায়েরিতে লেখেন, ‘হিটলার যেন নিজেকে আত্মগোপনে নিয়ে গেছেন। তিনি আর বাইরের আলোতে যান না, কোনো বিশ্রামও পান না, বাংকারে বসে সব সময় চিন্তিত হয়ে আছেন।’ গোয়েবেলস মন্তব্য করেন, ‘এটা শুধু নেতৃত্বের সংকট নয়, এটা আসলে ফুহরার ব্যক্তিগত সংকট।’

যখন এই বাংকারের বাইরের জগৎ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল, প্রতিদিন হিটলার তাঁর অনুসারীদের নিয়ে ব্যারাকে কাঠের টেবিলের চারপাশে দাঁড়াতেন। মাত্র একটি বৈঠকের মধ্যেই তাঁরা মানচিত্রে আঙুল ঘুরিয়ে দোনেৎস অববাহিকা থেকে সিসিলি, সেখান থেকে ফ্রান্স, ভূমধ্যসাগর, কৃষ্ণসাগর; এরপর বলকান, দক্ষিণ আটলান্টিকে রিও ডি জেনিরোর কাছে নৌবাহিনীর একটি ডুবিয়ে দেওয়ার সফলতা, তারপর আবার নরওয়ে, এমনকি উত্তর আফ্রিকার মরুভূমিতে চলে যেতেন। এসব জায়গায় তখন যুদ্ধ চলছিল।

এই হতাশাজনক পরিস্থিতিতে ভেরমাখট বা জার্মান সেনাবাহিনীতে বেশ কিছু কর্মকর্তা হিটলারকে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসেন। পরাজয় যখন আরও কাছে এগিয়ে আসছিল এবং অবশ্যম্ভাবী বলে মনে হচ্ছিল, তখন ভল্ফশাঞ্জের বাইরে কিছু উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা নাগরিক প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দেন। তাঁরা পরিকল্পনা করেছিলেন হিটলারকে ক্ষমতাচ্যুত করার। ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই, ওয়েহরমাখট কর্মকর্তা ক্লাউস শেঙ্ক গ্রাফ ফন স্তাউফেনবের্গ ভল্ফশাঞ্জে হিটলারের নিশ্ছিদ্র আস্তানায় একটি টাইমবোমা ফাটান। বোমা বিস্ফোরিত হলেও হিটলার অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। শুধু তাঁর প্যান্টের খানিকটা অংশ ছিঁড়ে যায় এবং শরীরের কয়েক জায়গায় আঘাত পান। এর পর থেকেই তিনি একপ্রকার ষড়যন্ত্র–ভীতিতে ভুগতে থাকেন, এই কথা বলেছিলেন তাঁর শ্রোডার। এই হত্যাচেষ্টার পর ভল্ফশাঞ্জে নিরাপত্তাবোধ নিয়ে হিটলারের মনে সংশয় তৈরি হয়।

এরই মধ্য হিটলারের অসুস্থতা ক্রমে বাড়তে থাকে। তার বাঁ হাত ও বাঁ পা ক্রমাগত কাঁপতে থাকে। এর সঙ্গে তাঁর জন্ডিসও ধরা পড়ে। এই পরিস্থিতিতে কোকেনের দ্রবণ দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তিনি মাঝেমধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়তেন। কাছের মানুষদের এড়িয়ে চলার প্রবণতা ও বিষণ্ন থাকার অভ্যাস তাঁকে পেয়ে বসে। তিনি তাঁর বাংকারে নিজেকে বন্দী করে ফেলেন এবং কেবল একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতেন না। হিটলারের সেক্রেটারি ট্রাউডল ইউঙ্গের ভাষ্যমতে, ‘তিনি, এমনকি তাঁর কুকুর ব্লন্ডির সঙ্গে প্রতিদিনের হাঁটার অভ্যাসও ত্যাগ করেন।’

‘হিটলার তখন স্পষ্টতই একজন অসুস্থ মানুষ’, মন্তব্য করেছিলেন ভল্ফশাঞ্জে ভেরমাখট অপারেশনাল স্টাফের উপপ্রধান ভাল্টার ভার্লিমন্ট। তিনি বলেছেন, ‘ঝুঁকে পড়ে আর ধীর পদক্ষেপে তিনি মিটিং রুমে প্রবেশ করতেন। আর কেবল সবচেয়ে কাছের ব্যক্তিদের দিকেই তিনি কাচের মতো দৃষ্টিতে তাকাতেন। কুঁজো হয়ে, মাথা কাঁধের মধ্যে গুঁজে, তিনি তাঁর জন্য ঠেলে দেওয়া চেয়ারে বসে থাকতেন।’

তখন প্রতিদিন মিত্রবাহিনীর বোমারু বিমান ভল্ফশাঞ্জের গভীর অরণ্যের ওপর দিয়ে উড়ে যেত এবং সোভিয়েত সেনাবাহিনী কাছাকাছি চলে আসার সংবাদ আসছিল।

১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই হত্যা প্রচেষ্টার চার মাস পর হিটলার ভল্ফশাঞ্জের বাংকার ছেড়ে ২০ নভেম্বর বার্লিন ফিরে আসেন। আবার আশ্রয় হয় ওঠে ভিলহেলমস্ট্রাসের বাংকার। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি এখানেই অবস্থান করেন। হিটলারের অনুসারীরা তাঁদের জীবনকে হিটলারের জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে ফেলেছিলেন। রাসটেনবুর্গের বা ভল্ফশাঞ্জের জঙ্গলে তাঁরা একপ্রকার ষড়যন্ত্রী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিলেন। যুদ্ধ যত দীর্ঘ হয়েছিল, ততই তাঁরা নিজেদের ভাগ্যগাথা একই বলে অনুভব করতে থাকেন।

হিটলারের চূড়ান্ত পরাজয় ও আত্মহননের সময় পর্যন্ত, ভল্ফশাঞ্জে আবাসস্থলের সহচরেরা, সহকারী, সেক্রেটারি, পরিচারকেরা বার্লিন বাংকারেও তাঁর পাশে থেকে যান।

এরই মধ্য সোভিয়েত লালফৌজ বার্লিনে প্রবেশ করে। খবর আসে, হিটলারের বাংকার থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরবর্তী পস্টডামার প্লাজ এলাকায় তারা গোলাবর্ষণ করছে। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল বেলা তিনটার একটু আগে বাংকারের কর্মচারী ও ঘনিষ্ঠ পার্শ্বচরদের কাছ থেকে হিটলার বিদায় নেন। এর পরপরই বাংকারে হিটলারের বসার ঘরের সোফায় ইভা ব্রাউন বিষাক্ত ক্যাপসুল গ্রহণ করেন আর হিটলার মাথায় নিজে গুলি করে আত্মহনন করেন। বিশ্বজুড়ে সমাপ্তি ঘটে মনুষ্যসৃষ্ট এক পৈশাচিক অধ্যায়ের। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেমে যায় ১৯৪৫ সালের ৮ মে ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত পর স থ ত সব সময় কর ছ ল র জ বন জ বন র সবচ য় র একট অবস থ করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

পরিস্থিতি মোকাবিলার পক্ষে উপদেষ্টারা

আপাতত পদত্যাগ নয়, পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পক্ষে মত দিয়েছেন উপদেষ্টারা। বিতর্কের জন্ম দেওয়া বিষয়গুলো নিয়ে আত্মসমালোচনাও ছিল সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের বক্তব্যে। বড় সময়জুড়ে আলোচনায় ছিল জুলাই ঘোষণাপত্র। উপদেষ্টারা দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার পক্ষে মত দিয়েছেন। শেষমেশ কাজে বাধা এলে সরকার হিসেবে কঠোর হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আলোচনা শেষ করেছেন উপদেষ্টারা। 

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। বৈঠক শেষে দেওয়া আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারের দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হলে সব কারণ জনসমক্ষে প্রকাশ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠকে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক কমিটির (একনেক) পূর্বনির্ধারিত সভার পর এ বৈঠক হয়। গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনার এক দিন পর এ বৈঠক হলো।

বৈঠক সূত্র জানায়, একাধিক উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন। প্রয়োজনমতো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষেও মত এসেছে। সভায় একজন উপদেষ্টা বলেন, যে অস্থিরতা চলছে, তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ঘনিষ্ঠতা ও যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ না বাড়ানোর কারণে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। নানা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একজনকে ফোকালপারসন করার পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর কাজ হবে নিয়মিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। একাধিক উপদেষ্টা সামনে যে কোনো বড় সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত বলে মত দেন।

আরেকজন উপদেষ্টা বলেন, বিতর্ক এড়াতে সব উপদেষ্টাকে কথাবার্তায় আরও সতর্ক হতে হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। নিয়মিত সংলাপ চালিয়ে যেতে হবে।  

পদত্যাগ করা উচিত নয়
বিএনপির নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি, ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার কাছে তিন দিনের অবস্থান এবং মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সরকারের উদ্যোগের সমালোচনা; সর্বোপরি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে হতাশা ব্যক্ত করেন ড. ইউনূস। তিনি প্রধান উপদেষ্টার পদে থাকা-না থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেন। এ ব্যাপারে তিনি উপদেষ্টাদের মতামতও জানতে চেয়েছিলেন।

গতকালের বৈঠকে ২২ উপদেষ্টার মধ্যে ১৯ জন অংশ নেন। তারা মতামত দেন, এ পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করলে দেশে অস্থিতিশীলতা, বিশৃঙ্খলা বাড়বে। ফলে এর দায়ও ড. ইউনূসকে নিতে হবে। তারা দায়িত্ব পালনে সরকারকে কঠোর হওয়ার ওপর জোর দেন।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপদেষ্টা সমকালকে বলেন, ড. ইউনূস না থাকলে দেশের কী পরিস্থিতি হবে, বর্তমান সরকারের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব কিনা– এসব বিষয় শুক্রবার সারাদিন নিজেদের মতো পর্যালোচনা করেছেন উপদেষ্টারা। তারা একমত হন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকারের পদত্যাগ দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।

বৈঠকে এক উপদেষ্টা বলেন, এ মুহূর্তে সরকার দায়িত্ব ছেড়ে দিলে মানুষ হতাশ হবে। দেশের পরিণতির জন্য অনেকে উপদেষ্টাদের দায়ী করবেন। তাই শক্ত হাতে সব কিছু মোকাবিলা করে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন দিয়ে এই সরকারের বিদায় নেওয়া উচিত। 

২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সবার বক্তব্য শোনেন। একনেক সভায় সচিবরা থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদের অনির্ধারিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার একজন কর্মকর্তা ছাড়া পরিষদের সদস্য নন, এমন কেউ ছিলেন না। 

আত্মসমালোচনা
বৈঠকে উপদেষ্টারা কীভাবে সংস্কার, বিচার ও নির্দিষ্ট সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন। উপদেষ্টাদের ভুলভ্রান্তি নিয়েও কথা হয়। বৈঠকে আত্মসমালোচনাও করেন কয়েকজন উপদেষ্টা। ভুল শুধরে এগিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন তারা।

দুই উপদেষ্টার করিডোর নিয়ে আগ বাড়িয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলার বিষয়টিও আলোচনায় আসে। উপস্থিত একজন উপদেষ্টা তখন বলেন, বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। তবে তিনি ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হবেন।

এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট ও মন্তব্য করার ক্ষেত্রেও সরকারের সংশ্লিষ্টদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন উপদেষ্টারা। উপদেষ্টা কিংবা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট-কমেন্ট করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ এসব নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হচ্ছে। 

সব কাজেই বাধা, মোকাবিলা করতে হবে 
দায়িত্ব পালনে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো আসছে, সেগুলো নিয়ে একে একে কথা বলেন উপদেষ্টারা। একজন উপদেষ্টা বলেন, কোনো কাজ করতে গেলেই প্রতিবন্ধকতা আসছে। অনেকে নিজের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজ আদায় করতে না পেরে উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবি করছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে একটি গোষ্ঠী আন্দোলন করছে। সচিবদের মবের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাবেক কিছু আমলা। ফলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। 

সভায় পরামর্শ আসে, এই বিষয়টিকে শক্তভাবে মোকাবিলা করা দরকার। প্রতিবন্ধকতা কোথা থেকে আসছে, তা চিহ্নিত করা দরকার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের বিষয় তুলে ধরে একজন উপদেষ্টা বলেন, সরকারকে নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা অপপ্রচার হচ্ছে। অথচ এসব প্রচারণার কোনো ভিত্তি নেই।

সূত্রমতে, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেছেন, পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্র চলছে। নানা ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হয়েছে বলে সভায় জানান তিনি।

সরকারের কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত
বৈঠক শেষে বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের জনপ্রত্যাশাকে ধারণ করে। কিন্তু সরকারের স্বকীয়তা, সংস্কার উদ্যোগ, বিচার প্রক্রিয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড এবং অর্পিত দায়িত্ব পালন করাকে অসম্ভব করে তুললে সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, শত বাধার মধ্যেও গোষ্ঠীস্বার্থ উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যদি পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালনকে অসম্ভব করে তোলা হয়, তবে সরকার সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে এবং চিরতরে এ দেশে স্বৈরাচারের আগমন প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শুনবে এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবে।

প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না, আমরা যাচ্ছি না
বৈঠক শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা যাচ্ছেন না। অন্য কোনো উপদেষ্টাও কোথাও যাচ্ছেন না। আমরা অর্পিত দায়িত্ব ছেড়ে যেতে পারব না। এর ওপর নির্ভর করবে দেশের ভবিষ্যৎ।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বৈঠকে দায়িত্ব পালনে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো আসছে, সেগুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের কাজ এগিয়ে নিতে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তি এবং রাষ্ট্রীয় সব সংস্থাকে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার আহ্বান জানাচ্ছি। রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, সংস্থা, বিচার বিভাগসহ সবার কাছে সহায়তা চাই।’

বিএনপি তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে। এনসিপিও পাল্টা তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে। এ বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘কাজ শেষ না করে কেউ কোথাও যাচ্ছি না। কিছু উপদেষ্টাকে নিয়ে বিভিন্ন দল থেকে বলা হয়েছিল। এমনকি আমার বিষয়েও বলা হয়েছিল। উপদেষ্টারা কেউ স্বেচ্ছায় আসেননি, এই দায়িত্ব উপভোগ্যও নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আলোনসোকে রিয়ালের কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা 
  • আমাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বানানো হয়েছে: বাঁধন
  • এক নায়িকাও আমার ভিসা জটিলতায় জড়িত ছিলেন: বাঁধন
  • শরীয়তপুরে সরকারি স্কুলে শিক্ষক সংকট, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান
  • চিকিৎসক মায়ের ৯ শিশু সন্তান নিহত
  • গাজায় চিকিৎসক মায়ের ৯ শিশু সন্তান নিহত
  • ইব্রাহিমের হার না মানা ২৬ বছরের সংগ্রাম
  • পাকিস্তানে তীব্র ঝড়ে ১৩ জনের মৃত্যু
  • পরিস্থিতি মোকাবিলার পক্ষে উপদেষ্টারা