টিকটক ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করতে জনপ্রিয় ভিডিওর মাধ্যমে ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে একদল সাইবার অপরাধী। ‘ক্লিকফিক্স’ নামে পরিচিত এক কৌশল ব্যবহার করে ‘ভিডার’ ও ‘স্টিলসি’ নামের ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার ছড়াচ্ছে তারা। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ড মাইক্রো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

ট্রেন্ড মাইক্রোর তথ্যমতে, ক্যাপকাট ও স্পটিফাইয়ের প্রিমিয়াম সুবিধা বিনা মূল্যে ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে বেশ কিছু ভিডিও রয়েছে টিকটকে। এসব জনপ্রিয় ভিডিওতে পাওয়ারশেল কমান্ড যুক্ত করে দেয় সাইবার অপরাধীরা, এর ফলে কোডগুলো লিখলেই ব্যবহারকারীর অজান্তে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে। এসব প্রশিক্ষণ ভিডিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হলেও লাখ লাখবার ডাউনলোড করা হয়েছে।

আরও পড়ুনটিকটক আসক্তির রহস্য জানা গেল টিকটকেরই তথ্যে১৮ অক্টোবর ২০২৪

‘ভিডার’ ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর ডেস্কটপের স্ক্রিনশট, লগইন তথ্য, ক্রেডিট কার্ড, কুকি, টেক্সট ফাইল, ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট ও টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন অ্যাপ ‘অথি’তে সংরক্ষিত তথ্য চুরি করলেও ‘স্টিলসি’ ম্যালওয়্যার বিভিন্ন ওয়েব ব্রাউজার ও ডিজিটাল ওয়ালেটের তথ্য চুরি করে গোপনে সাইবার অপরাধীদের কাছে পাঠাতে থাকে।

আরও পড়ুনটিকটকেই তৈরি করা যাবে অ্যানিমেটেড ভিডিও১৬ মে ২০২৫

প্রসঙ্গত, ‘ক্লিকফিক্স’ হলো একটি প্রতারণামূলক কৌশল, যেখানে ত্রুটি শনাক্ত বা ক্যাপচা যাচাইয়ের বার্তা পাঠিয়ে ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করানো হয়। সাধারণত উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে এ কৌশল বেশি ব্যবহার করা হলেও সম্প্রতি ম্যাক ও লিনাক্স প্ল্যাটফর্মেও এ ধরনের হামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা গবেষকদের মতে, রাশিয়ার এপিটি-২৮ ও কোল্ড রিভার, উত্তর কোরিয়ার কিমসুকি এবং ইরানের মাডিডি ওয়াটারসহ একাধিক সাইবার অপরাধী দল গুপ্তচরবৃত্তির উদ্দেশ্যে এ কৌশল ব্যবহার করে থাকে।

সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য লওয় য র ব যবহ র কর ট কটক

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ পরেও থাকবে, সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ

কোনো রাজনৈতিক দল আগামীকাল শুক্রবার জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করলে পরবর্তী সময়ে সই করার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।

কাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক জানতে চান, আগামীকাল যদি কোনো দল জুলাই সনদে সই না করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে তারা চাইলে কি স্বাক্ষর করতে পারবে?

জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগামীকাল সব দলের স্বাক্ষর নিতে পারলে ভালো। তবে যদি কোনো দল পরবর্তীতে স্বাক্ষরের কথা বলে...তারা তো সনদ প্রক্রিয়ার অংশীদার। শরিক হিসেবে তারা সেটা করতে পারবে। তবে কমিশন আশা করে, সকলে একসঙ্গে বসে উৎসবমুখর পরিবেশে স্বাক্ষর করবে।’

‘আইনি ভিত্তি ছাড়া এবং আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া’ জুলাই সনদে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সই করবে না—দলটির নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এনসিপির বক্তব্য কমিশন গভীরভাবে পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করেছে। দলটির নেতারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অগ্রগামী সৈনিক ছিলেন। তাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর বাইরে সনদ প্রক্রিয়ায় তাঁরা অংশ নিয়েছেন। ফলে তাঁদের অবদান সনদ তৈরির ক্ষেত্রে একাধিকভাবে আছে।

আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনও মনে করে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া প্রয়োজন এবং দ্রুততার সঙ্গে সেটা করার জন্যই কমিশনের মেয়াদকালে তাঁরা একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ দেবেন। তিনি বলেন, কমিশন আশা করছে এনসিপিসহ সব রাজনৈতিক দল সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবে, সনদে স্বাক্ষর করবে এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে কমিশনের মেয়াদকালেই একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ তাঁরা দিতে পারেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তিনি বলেন, সনদ বাস্তবায়নের জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা অব্যাহত আছে। বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা হবে। সনদ বাস্তবায়নে যেন কোনো রকম ব্যত্যয় না ঘটে, তার দায়িত্ব কমিশনের।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, সবচেয়ে বড় আয়োজন জুলাই সনদ নিজে। কারণ, এই সনদ বাস্তবায়ন করা গেলে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, আগামীকাল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সনদ তৈরির প্রেক্ষাপট এবং এর ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা বিষয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হবে। পাশাপাশি আগামী দুই মাসে এটা নিয়ে আরও কাজ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ