দেশে ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। মে মাসের প্রথম ২৪ দিনে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৭ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা এক হাজার ১৫১ কোটি টাকা।

রবিবার (২৫ মে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
 
রেমিট্যান্সের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি মে মাসের প্রথম ২৪ দিনে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৬ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

আরো পড়ুন:

ঈদের সরকারি ছুটিতে ৩ দিন শিল্প এলাকায় ব্যাংক খোলা

বিদেশে পেশাগত কোর্স ফি পাঠাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

এর আগে, দেশে চলতি বছরের মার্চ মাসে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। একক মাসে দেশে এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচারে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যালেনে টাকা পাঠানো কমে গেছে। ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এছাড়া ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র করে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড গড়বে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ মার্কিন ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার, জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার এবং এপ্রিলে এসেছে ২৭৫ কোটি ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

ঢাকা/এনএফ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব স র ম ট য ন স এস ছ পর ম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

আইন শক্তিশালীকরণের দাবিতে তামাকবিরোধী যুব সমাবেশ

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবিতে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে শক্তিশালী ও উদ্দীপনামূলক যুব সমাবেশ। ‘তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত শক্তিশালী করা প্রয়োজন’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার ঢাবির মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে সমাবেশের আয়োজন করে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্প)। এতে অংশ নেয় ঢাকা আহছানিয়া মিশন, নারী মৈত্রী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন।

সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিইউপি, ঢাকা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ও খিলগাঁও মডেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। তামাকমুক্ত ভবিষ্যতের জন্য তাদের সরব উচ্চারণ ছিল এ সমাবেশের প্রাণ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেশে ৬৮% মানুষ অসংক্রামক রোগে মারা যায়, যার মধ্যে ৫১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী তামাক। ৩৫ বছরের নিচে তরুণদের মৃত্যুহারও ভয়াবহ। এখনই না জাগলে ভবিষ্যত হাতছাড়া হবে।’ তিনি প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. খালেদা ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন তামাকজনিত রোগে ৪৪২ জন মানুষ মারা যান। বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেন। পরোক্ষ ধূমপানে শিকার ৪২.৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ না হলে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচানো সম্ভব নয়।’

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক নাসরিন আক্তার ডলি বলেন, ‘এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫% প্রাথমিক শিক্ষার্থীর শরীরে উচ্চ মাত্রার নিকোটিন রয়েছে! আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত ধ্বংস হচ্ছে। তামাক কোম্পানির কৌশলের বিরুদ্ধে আইনে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

সমাবেশে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের ৪৯ শতাংশ যুবসমাজ তামাকে আক্রান্ত হলে দেশও অন্ধকারে যাবে। খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করতে হবে। একবার এই ফাঁদে পড়লে বের হওয়া কঠিন। তারা আইনের সংশোধনী পাসের জোর দাবি জানান।

ডর্প-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর জেবা আফরোজা মূল প্রবন্ধে ছয়টি জরুরি সংশোধনী তুলে ধরেন। সেগুলো হলো— ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা। বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ। তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ। ই-সিগারেট নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। খুচরা ও খোলা তামাক বিক্রি বন্ধ এবং স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৯০ শতাংশ করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ