ঢিল ছোড়ার পর এবার নাট্যশিল্পীর বাড়িতে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা
Published: 25th, May 2025 GMT
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক নাট্যশিল্পীর বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে গোয়ালঘর ও খড়ের গাদা পুড়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উপজেলার রাখালগাছী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে নাট্যশিল্পী প্রশান্ত হালদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রশান্ত হালদার ঢাকার অনুস্বর নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। এ ঘটনায় শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। ঘটনার পর ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার মন্জুর মোর্শেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেদারুল ইসলাম ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নাট্যশিল্পী প্রশান্ত হালদারের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, শত্রুতাবশত ঘটনার দিন মধ্যরাতে কে বা কারা তাদের বাড়ির পেছনে খড়ের গাদায় আগুন দেয়। পরে আগুন গোয়ালঘরে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও জানান, এর আগেও শত্রুতাবশত দুর্বৃত্তের দল কয়েকবার তাদের ঘরের জানালায় মলমূত্র লাগিয়েছিল। একাধিকবার টিনের ঘরের চালে ও দোতলা ঘর লক্ষ্য করে ইট ও ঢিল ছুড়েছিল। তারা এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নাট্যশিল্পী প্রশান্ত হালদার ও তার বোন শ্রাবণী রাখী ঢাকাতে থাকেন। আগুনের খবর পেয়ে তারা এখানে এসেছেন। তার বাবা-কাকারা গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। প্রশান্ত হালদার ঢাকার অনুস্বর নাট্যদলে প্রায় চার দশক ধরে যুক্ত। নাট্যকার ও অভিনেতা হিসাবে তার বেশ পরিচিতি আছে।
শ্রাবণী রাখী বলেন, ‘বাবা, কাকা ও ছোট ভাইসহ ছয়জন গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। আমাদের ধারণা, একটি অসৎ চক্র আমাদের পেছনে লেগেছে। এ ঘটনার পর প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোফাজ্জেল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।’
ইউএনও দেদারুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ আগ ন ন ট যশ ল প ঘটন র এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযোগের পর বাতিল চারটি কার্যাদেশ
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস পালের বিরুদ্ধে নিয়মের বাইরে গিয়ে দরপত্র আহ্বানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নীতিমালা উপেক্ষা করে চারজন ঠিকাদারের অনুকূলে ৩০ লক্ষাধিক টাকার কার্যাদেশও দেন। এই অনিয়ম তদন্তের দাবি জানিয়ে ইউএনও তাপস পাল ও এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
১৯ মে এ অভিযোগ দেন ঠিকাদার মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চারটি কার্যাদেশই আগের দিন সভা দেখিয়ে (১৮ মে) বাতিল করে উপজেলা প্রশাসন। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৯ মার্চ চিতলমারীর ইউএনওর বাসভবন মেরামত, সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রায় দুই মাস পরে চারটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দরপত্রে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসকক্ষ এবং উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবন (দ্বিতীয় তলা) সংস্কার ও মেরামত, দুই নম্বর দরপত্রে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসকক্ষ সংস্কার ও মেরামত, ইউএনওর বাসভবনের সীমানাপ্রাচীর উঁচুকরণ, ফটক সংস্কার ও মেরামত, তিন নম্বর দরপত্রে তাঁর কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সংস্কার ও মেরামত এবং চার নম্বর দরপত্রে ইউএনওর অফিস বাংলো সংস্কার ও মেরামতের কথা বলা হয়। কোনো দরপত্রেই কাজের বিবরণ ও মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। শর্ত অনুযায়ী ১৪ মে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে দরপত্র দাখিলের কথা বলা হয়।
লিখিত অভিযোগে রফিকুল মোল্লা উল্লেখ করেছেন, ৮ মে দরপত্র আহ্বানের তারিখ দেখানো হলেও পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়নি। ১৪ মে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডে ওই দরপত্র আহ্বানের নোটিশ টানানো হয়নি।
১৫ মে চারটি দরপত্রের বিপরীতে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেন ইউএনও তাপস পাল। প্রথম দরপত্রের জন্য কার্যাদেশ পায় শেখ মো. জাহিদুজ্জামানের মালিকানাধীন মেসার্স জ্যোতি এন্টারপ্রাইজ। দুই নম্বর দরপত্রের কাজ দেওয়া হয় চিরঞ্জীব বিশ্বাসের মালিকানাধীন মেসার্স বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজকে। তিন নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ পায় তাহজ্জত খানের মালিকানাধীন মেসার্স ইউসুফ খান এন্টারপ্রাইজ। চার নম্বর দরপত্রের কার্যাদেশ দেওয়া হয় মো. ফারুক মল্লিকের মল্লিক ইন্টারন্যাশনাল এন্টারপ্রাইজকে।
জ্যোতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কোনো কাজ পাইনি। কে আপনাকে এসব তথ্য দিয়েছে?’
ইউএনও তাপস পাল বলেন, উপজেলা পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে চারটি কাজের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। সামনে জুন মাস হওয়ায় উপজেলা পরিষদের আরও কিছু কাজ করানো হবে, এজন্য একসঙ্গে দরপত্র আহ্বান করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে যান তিনি।
জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, ‘চিতলমারীর দরপত্র আহ্বানসংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’