১০ মিনিটের রাস্তা শেষ হয় না দুই ঘণ্টায়ও
Published: 27th, May 2025 GMT
বাসে চেপে রূপগঞ্জের রূপসী থেকে ভুলতা যাচ্ছিলেন গৃহবধূ নাজমা আক্তার। রূপসী থেকে ভূলতা যেতে সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট। অথচ দুই ঘণ্টাতেও পৌছাঁতে পারেননি। এতটা সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজটে আটকে ছিলেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন নাজমার মতো হাজারো মানুষ।
নাজমা আক্তার বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রতিদিন যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কারণে সাধারণ মানুষ ভীষণ ভোগান্তিতে পড়ছে।
রূপগঞ্জের ভূলতা, বরপা, রূপসী, বরাবো, বিশ্বরোড ও যাত্রামুড়া এলাকাজুড়ে এ যানজটে আটকা পড়তে দেখা গেছে মালবাহী ও যাত্রাবাহীসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।
জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি আট লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন সিলেট, ভৈরব, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার শত শত দূরপাল্লার মালবাহী ট্রাক, বাস ও অন্যান্য গণপরিবহণ চলাচল করে। রাস্তার কাজ চলার কারণে যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে না। এতে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। এ ছাড়া অবৈধ বাসস্ট্যান্ড, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো নামানো, নিয়ম ভঙ্গ করে বিপরীত দিকে গাড়ি চলাচল, সড়কের প্রশস্ততা কম হওয়া ও সড়কে গাড়ি বিকল হওয়ার কারণেও যানজটের সৃষ্টি হয়।
মনির হোসেন নামে এক বাসচালক বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ চলার কারণে এখানে প্রতিদিন যানজট লেগে থাকে। যানজটের কারণে তাদের অনেক সময় চলে যায়, আয়ও কম হয়।
ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিজানুর রহমান মিজান বলেন, তাদের লোকবল কম। এরপরও রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।
শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।
ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ