লালমনিরহাটে বিএসএফের ঠেলে পাঠানোর চেষ্টায় বিজিবির বাধা, সীমান্তে উত্তেজনা
Published: 28th, May 2025 GMT
লালমনিরহাটের আদিতমারী, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার কয়েকটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে নারী-শিশুসহ অন্তত ৬৫ জনকে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় লোকজনের বাধায় বিএসএফ সফল হয়নি। ঠেলে পাঠানোর জন্য আনা লোকজন বর্তমানে কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় অংশের শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন।
আজ বুধবার ভোরে আদিতমারীর দুর্গাপুরের চওড়াটারী, হাতীবান্ধার ভেলাগুড়ির বনচৌকি; পাটগ্রামের ধবলগুড়িসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তাঁদের ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় সীমান্তগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে দুপুরে বিজিবি ও বিএসএফের ক্যাম্প কমান্ডার পর্যায়ে এবং বিকেলে অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুনকুড়িগ্রাম সীমান্তে ১৪ জনকে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা বিএসএফের, বিজিবির বাধা২৭ মে ২০২৫বিজিবি ও সীমান্তের বাসিন্দাদের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোররাত থেকে আদিতমারীর দুর্গাপুরের চওড়াটারী সীমান্ত দিয়ে ১৩ জন; হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বুড়া সারডুবী সীমান্তে ১৬ জন, গোতামারী সীমান্তে ৬জন এবং সিন্দুর্না ইউনিয়নে দুজন; পাটগ্রাম উপজেলার জগৎবেড় ইউনিয়নে ১৫ জন, জোংড়া ইউনিয়নের ধবলগুড়ি সীমান্তে পাঁচজন, বাউড়া ইউনিয়নের সীমান্তে আটজনকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করে বিএসএফ। তবে বিজিবির বাধায় ওই ব্যক্তিরা বাংলাদেশে ঢুকতে পারেননি। ঘটনার পর থেকে সীমান্তে সতর্ক অবস্থান নেয় বিজিবি। এতে ঠেলে পাঠানো লোকজন শূন্যরেখায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিতে বাধ্য হন। এদিকে বিভিন্ন সীমান্তে ঠেলে পাঠানোর খবর পেয়ে সীমান্তে বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীও অবস্থান নেন।
বিজিবি জানায়, কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলে এপারে পাঠানো লোকজন ভারতের আসামের বাসিন্দা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। পরে দুপুরে আদিতমারীর দুর্গাপুরের চওড়াটারী গ্রামের ৯২৪ মেইন পিলারের ৯ এস পিলারের কাছে বিজিবির দুর্গাপুর বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার পদ্মা ৭৮ বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর একই স্থানে বেলা তিনটার দিকে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ও ৭৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
লালমনিরহাটের আদিতমারীর দুর্গাপুর ইউনিয়নের চওরাটারী সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করা ঠেলে পাঠানো লোকজন। বুধবার দুপুরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ ন ব এসএফ পর য য় ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ