পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ‘‘পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে একটি দল নিরপেক্ষ সংস্থায় উন্নয়ন করতে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। পুলিশের মনোবল পুনরুদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম ক্যাডেট উপ-পরিদর্শক (এসআই) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ‘‘অপরাধ দমন, জনগণের সম্পত্তির নিরাপত্তা প্রদান ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা পুলিশের প্রধান দায়িত্ব।’’

আরো পড়ুন:

ব্যাংক কর্মচারীকে হাতকড়া পরিয়ে ১৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ

কুষ্টিয়ায় জামায়াতকর্মী নিহত: ৩ আসামি গ্রেপ্তার

শিক্ষানবিশ এসআই ক্যাডেটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘পরিবর্তিত সমাজের সারথী হিসেবে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় জনসেবায় আপনারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। পুলিশের উপ-পরিদর্শক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পদ; কারণ ৯০ ভাগ ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত আপনারা করে থাকেন। আর ন্যায়বিচার পাওয়া নির্ভর করে পুলিশের তদন্তের ওপর।’’

এর আগে, প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন আইজিপি। এর মধ্যে, বেস্ট একাডেমিক হিসেবে ক্যাডেট এসআই মো.

বদিউজ্জামান, বেস্ট ইন ফিল্ড এক্টিভিটিজ শিক্ষানবিশ ক্যাডেট এসআই নজরুল ইসলাম, বেস্ট শুটার ও বেস্ট সুইমার হিসেবে শিক্ষানবিশ ক্যাডেট এসআই নয়ন কুমার ঢালী এবং সর্ব বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় শিক্ষানবিশ ক্যাডেট এসআই আরিফুল ইসলামকে বেস্ট ক্যাডেট পুরস্কার প্রদান করা হয়।

কুচকাওয়াজে ২২ জন নারীসহ ৪৮০ জন শিক্ষানবিশ ক্যাডেট এসআই অংশগ্রহণ করেন। এ সময় পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমান ভূঁঞা, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলমগীর রহমান ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর পুলিশ একাডেমিতে ৮২৩ জন ক্যাডেট এসআইয়ের এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ শুরুর পরই নানা অভিযোগে ডিসচার্জ হন ২২ জন। গত বছরের ৪ নভেম্বর ৮০১ জনের প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হয়নি। এরই মধ্যে সম্প্রতি চার দফায় মোট ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতি পাওয়া এই ৩২১ জন আছেন আন্দোলনে। তারা তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আন্দোলনরত অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে তাদের সচিবালয়ের সামনে থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরদিন সকালে অনুষ্ঠিত হলো টিকে থাকা ৪৮০ জনের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ।

ঢাকা/কেয়া/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এক ড ম আইজ প

এছাড়াও পড়ুন:

থানা-হাইওয়ে পুলিশের ঠেলাঠেলিতে ৯ ঘণ্টা সড়কে পড়ে ছিল লাশ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় শুক্রবার ভোরে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সেখানে যায় থানা ও হাইওয়ে পুলিশ। ওই ব্যক্তি কীভাবে মারা গেছেন, তা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না তারা। এ কারণে লাশ বুঝে নিতে থানা ও হাইওয়ে পুলিশের মধ্যে ঠেলাঠেলি চলতে থাকে। এক পর্যায়ে প্রায় ৯ ঘণ্টা পর দুপুরে লাশ উদ্ধার করে হাইওয়ে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মৌচাক এলাকায় ভোর ৫টার দিকে একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে সেখানে যায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও হাইওয়ে পুলিশ। তবে কারা লাশ উদ্ধার করবে, এ নিয়ে ঠেলাঠেলি শুরু হয়। থানা পুলিশ বলে, খুন হয়ে থাকলে তারা উদ্ধার করবে। আর সড়ক দুর্ঘটনা হলে হাইওয়ে পুলিশ উদ্ধার করবে। 

এদিকে হাইওয়ে পুলিশ বলে, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে। সে ক্ষেত্রে লাশ উদ্ধার করবে থানা পুলিশ। পরে মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে শুরু করে। ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত দেখে তারা নিশ্চিত হয়, ওই ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এরপর বেলা ২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেন হাইওয়ে পুলিশ শিমরাইল ক্যাম্পের এসআই আশরাফ উদ্দিন। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, ভোরে কোনো এক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় লোকটি নিহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘লাশ দেখে সড়ক দুর্ঘটনা মনে হচ্ছিল না। লাশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এটা হত্যাকাণ্ড ভেবে থানা পুলিশকে লাশটি উদ্ধার করতে বলা হয়েছিল।’

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, ‘লাশটি মহাসড়কে ছিল। তাই হাইওয়ে পুলিশকে উদ্ধার করতে বলা হয়। লাশে আঘাতের দাগ থাকায় তারা উদ্ধার করতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে থানা ও হাইওয়ে পুলিশ আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য শুনে নিশ্চিত হয়, এটি সড়ক দুর্ঘটনা।’

আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিমরাইল ক্যাম্পের এসআই আশরাফ উদ্দিন জানান, ‘লাশ আমাদের হেফাজতে আছে। ময়নাতদন্তের জন্য এখনও হাসপাতালে পাঠানো হয়নি। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। স্বজনদের পাওয়া না গেলে হাইওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।’


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মারা গেছেন বাদী ও চার আসামি, ৩৫ বছরেও শেষ হয়নি অস্ত্র মামলার বিচার
  • এসআই পরিচয়ে থানায় তরুণী, কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা
  • মুরাদনগরের সেই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানোর ‘নেপথ্যের’ ব্যক্তি কারাগারে
  • ৯ ঘণ্টা সড়কে লাশ রেখে দুই থানার ঠেলাঠেলি
  • থানা-হাইওয়ে পুলিশের ঠেলাঠেলিতে ৯ ঘণ্টা সড়কে পড়ে ছিল লাশ