সিলেট বিভাগে ২০২৪ সালে ৩৫৯ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৭৫ জন। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৭০৯ জন। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী। বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন।

বুধবার নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সিলেট বিভাগীয় কমিটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে সিলেট জেলায় ১৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫৭ জন নিহত ও ৩১৪ জন আহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জ জেলায় ৬৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬ জন নিহত ও ১০৮ জন আহত হয়েছেন। মৌলভীবাজার জেলায় ৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৭ জন নিহত ও ৭২ জন আহত হয়েছেন ও হবিগঞ্জ জেলায় ৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯৫ জন নিহত ও ২১৫ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে ২৮৭ জন পুরুষ, ৫৮ জন মহিলা ও ৩০ জন শিশু রয়েছে।

প্রতিবেদনে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে সিলেট বিভাগে ২৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬১ জন নিহত ও ৪৬৪ জন আহত হয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ে অভাব, ট্রাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, বিরতি ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানো, চালকেরা মাদকের আসক্তি, মহাসড়কে নির্মাণ ত্রুটি, গাড়িতে শিশুদের উপযোগী আসন না থাকা, সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি পাওয়া, মোটরসাইকেল চালকদের মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রোড মার্কিং পর্যাপ্ত না থাকা, আন্ডারপাস ব্যবহার না করে যত্রতত্র পারাপার ও রাস্তা চলাচল, রাস্তা পারাপার ও গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা, রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট বসানোকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন সড়ক দ র ঘটন য় ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ২৫৫ জন নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটির মানবাধিকার বিভাগ। 

ছাত্রশিবির বলছে, গুমের শিকার সাতজন এখনো ফেরেননি।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন ঘিরে সরগরম কেরাণীগঞ্জের রাজনীতি

হেভিওয়েটদের বিপক্ষে এনসিপির প্রার্থী হচ্ছেন যারা

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিভাগের আয়োজনে এক সেমিনারে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

সেমিনারে ছাত্রশিবির জানায়, গত ১৫ বছরে তাদের ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩১২ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছিল। মামলার সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৫টি, যার মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৬৬ হাজার ২৪০ জন। এর মধ্যে রিমান্ডে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৯ হাজার ৭২২ জন; তারা মোট রিমান্ডে ছিলেন ২৯ হাজার ৯৭১ দিন। আহত হয়েছিলো ৩১ হাজার ৭১৫ নেতাকর্মী, পঙ্গু হয়েছেন ৩২৪ জন, আর নিহত হয়েছেন ১০৩ জন।

সেমিনারে বলা হয়, গুমের শিকার হন ২৫৫ নেতাকর্মী, যাদের মধ্যে সাতজন এখনো ফেরেনি। সেই সাতজন হলেন মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, মুহাম্মদ মুকাদ্দাস আলী, হাফেজ জাকির হোসাইন, জয়নুল আবেদীন, মো. কামারুজ্জামান, মো. রেজওয়ান ও শফিকুল ইসলাম।

ছাত্রশিবিরের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরে ছাত্রশিবির বলছে, ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নিরবচ্ছিন্ন পথচলার সূচনা। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সংগঠনটির যাত্রা ছিল বাধা-বিপত্তিতে পরিপূর্ণ। বিগত ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত বিপ্লব পর্যন্ত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। 

সংগঠনটির অভিযোগ, ছাত্রশিবিরের অফিস, মেস, সম্পদ সবকিছু থেকেই তাদের উৎখাত করা হয়েছে। ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এবং শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেপ্তার করে দিনের পর দিন রিমান্ড নিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়। সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলামকে বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ছাত্রলীগ চরমভাবে নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

সেমিনারে শিবির জানায়, ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী বুয়েটের শহীদ আবরার ফাহাদকে সারারাত নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও একটি করুণ উদাহরণ। এ রকম হাজারো আবরার ফাহাদের মতো ছাত্রদের শুধু ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হতো। ঝিনাইদহের শহীদ সোহানকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ নির্মমভাবে হত্যা করে। শুধু হত্যাই নয়, তার দু-চোখ পর্যন্ত উপড়ে ফেলা হয়। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত বিগত ১৬ বছরে ছাত্রশিবিরের মোট ১০৩ জনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে শহীদ করা হয়। সাবেক ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ইবনুল পারভেজ, সাবেক সাতক্ষীরা শহর সেক্রেটারি আমিনুর রহমানসহ সারাদেশে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী প্রায় ৮৬ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পুলিশ বাহিনী।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম বলেন, “একটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তার বিপরীতে গুম করেছে। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। শুধু একটি ছাত্রসংগঠনের ওপর কী নির্যাতন চালানো হয়েছিল, তা ছাত্রশিবিরের দিকে তাকালে বোঝা যায়। বিগত সময়ে সরকার দল ছাড়া বিরোধী দল ও মতের প্রায় সকলেরই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।”

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “স্বাধীনতার পরপরই আওয়ামী লীগ কর্তৃক দেশের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে থাকে। রক্ষীবাহিনী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছিল। দুর্নীতি, দুঃশাসনের পর দেশকে দুর্ভিক্ষের রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।”

তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে ইসলামী ছাত্রশিবির একক সংগঠন হিসেবে ৩১ শতাংশ গুমের শিকার হয়েছিল। এখনো সাতজন নেতাকর্মী গুম অবস্থায় রয়েছেন। গত ১৫ বছরে ন্যূনতম মানবাধিকার ছাত্রশিবিরের ছিল না। কোনো বিরোধী দল বা মতের মানুষের মানবাধিকার ছিল না।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আজমী, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল হাসিনুর রহমান এবং গবেষক আলী আহমেদ মাবরুর প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইএসআইয়ের সাবেক প্রধান ফয়েজ হামিদের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
  • ২ কোটি রুপি বেতন কমতে পারে রোহিত–কোহলির, ২ কোটি রুপি বাড়তে পারে গিলের
  • সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো
  • এনসিপির মনোনয়ন পেলেন জাতীয় ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি
  • আবারও ইতিহাস গড়লেন মেসি, দ্বিতীয়বার এমভিপি
  • মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের টিকে থাকা নিয়ে নিরীক্ষকের শঙ্কা
  • দেশে মানবাধিকার কমিশন এখনো অকার্যকর
  • বেগম রোকেয়া: মৃত্যুর প্রায় এক শ বছর পরেও কেন প্রাসঙ্গিক
  • ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় এবার উঠে এল টাঙ্গাইল শাড়ির বুননশিল্প
  • ইসলামী ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা ১১ ডিসেম্বর