“কাজ করার সময় কখনোই আমার কাজ আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। শুটিংয়ের দেওয়ার সময় শুধু মনে হয় এটা হচ্ছে না, ওটা হচ্ছে না। সব সময় একটা অপূর্ণতা মনে হয়। পরে সেটা নির্মাতা ও সহশিল্পীদের সহযোগিতায় কাটিয়ে উঠতে হয়। ফলে কাজটা আরও দুর্দান্ত হয়ে পর্দা ফুটে ওঠে। যেমনটা হয়েছে ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার ক্ষেত্রে।”

আজ (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে নিজের সিনেমা ‘নীলপদ্ম’ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন অভিনেত্রী রুনা খান।

২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘বাংলাদেশ প্যানারোমা’ বিভাগে প্রতিযোগিতা করছে ‘নীলপদ্ম’। দেশের বাইরের উৎসবে প্রদর্শিত হলেও বাংলাদেশ এটিই ‘নীলপদ্ম’র প্রিমিয়ার।

সিনেমা প্রদর্শনী শেষে রুনা খান বলেন, ‘এই সিনেমা দিয়ে নির্মাতা আমাদের সমাজের এক অংশেরে কথা বলতে চেয়েছেন। সেখানে আছে বিশেষ কিছু বার্তা। তিনি সিনেমার মধ্যমে যে শ্রেণির মানুষের বার্তা দিতে চেয়েছেন সেটা যদি দেশের মানুষের কাছে পৌঁছায় তাহলেই আমাদের সার্থকতা।’

‘নীলপদ্ম’ সিনেমার প্রধান চরিত্র নীলা। যৌনপল্লিতে তার বেড়ে ওঠা। সে জানে না তার জন্মপরিচয়। জানে না এই যৌনপল্লিতে যৌনকর্মী হিসেবে বেড়ে ওঠার কারণ। সব সময় এই জীবন ছেড়ে একটা সুন্দর–স্বাভাবিক জীবন চাইত নীলা। একটা সময় সে একজনকে বিশ্বাস করে এবং তার হাত ধরে এই যৌনপল্লি ছেড়ে চলে যায়। ভাগ্যের চরম পরিহাসে আবারও এই জীবনে ফিরে আসতে বাধ্য হয় নীলা। এভাবেই ভাগ্যেকে বরণ করে নেয় হাজারো নীলা। ‘নীলপদ্ম’ সিনেমায় নীলা চরিত্রেই অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রুনা খান।

যৌনকর্মীর চরিত্রে প্রথম অভিনয় করছেন রুনা খান। ফলে চরিত্রটি ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। তার কথায়, এই প্রথম যৌনকর্মীর চরিত্রে প্রথম অভিনয় করলাম। এটা আমার কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। লোকেশনটাও ছিলো একদম রিয়েল। এখানে নীলা চরিত্রটা যতটা ঠিকঠাক মনে হয়েছে তার কৃতিত্বটা আমি পুরো টিমকে দিতে চাই।’

কিছুটা আক্ষেপের সুরে রুনা খান বলেন, ‘জীবনধর্মী গল্পের ক্ষেত্রে আমরা এখনো সর্বোচ্চ বাজেট ও সুবিধা পাই না। সেই জায়গা থেকে হাজারো সীমাবদ্ধতা মাঝে নির্মাতা এটি তৈরি করেছেন। এখানে শুধু একজন যৌনকর্মীর জীবনের গল্প নয়, এই সম্প্রদায়ের অনেকজনের জীবনের একটু একটু অংশ নিয়ে তিনি ওদের কথা বলতে চেয়েছেন।

পরিচালনার পাশাপাশি ‘নীলপদ্ম’ প্রযোজনাও করেছেন তৌফিক এলাহী। রুনা খান ছাড়াও সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন রোকেয়া প্রাচী, শাহেদ আলী, রাশেদ মামুন অপু, সুজাত শিমুল।

কলাকুশলী ছাড়াও ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার এদিন হাজির হয়েছিলেন অভিনেতা জিতু আহসান, আব্দুন নূর সজল, অভিনেত্রী, শার্লিন ফারজানা, জান্নাতুল ফেরদৌসী ঐশীসহ আরও অনেকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি

ভোলার ভ্যাপসা গরম, দুপুর গড়াতে না গড়াতেই সদর রোডজুড়ে তীব্র যানজট নাগরিক জীবনকে ব্যস্ত করে ফেলে। গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি খোঁজে। আর সেই স্বস্তি এনে দিতে পারে ভোলার বিখ্যাত বৈষা দধি।

দুপুরের আগেই সব দোকানের হাঁড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। মহিষের কাঁচা দুধে পাতানো এই দই ভোলার স্বাদ, ইতিহাস ও গর্বের এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ।

ভোলার দোকানগুলোতে প্রতিদিন মণকে মণ বৈষা দধি তৈরি হয়। এই দইয়ের বিশেষত্ব হলো, মহিষের কাঁচা দুধ দিয়ে এটি পাতা হয়। বাজারে সচরাচর যে দই পাওয়া যায়, সেসব তৈরি হয় গরুর দুধ দিয়ে এবং দুধ জ্বালিয়ে গাঢ় করে। কিন্তু ভোলার বৈষা দধি হয় মহিষের কাঁচা দুধ দিয়ে।

জলবেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলার এক অমূল্য সম্পদ মহিষ। পূর্বে মেঘনা, পশ্চিমে তেঁতুলিয়া, উত্তরে ইলিশা আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর—এই চার নদী ও সমুদ্রবেষ্টিত চরাঞ্চলে ঘুরে বেড়ায় হাজার হাজার মহিষ। সরকারি হিসাবে এই সংখ্যা দেড় লাখের কাছাকাছি, তবে স্থানীয় লোকজনের মতে তা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। এই মহিষের দুধই বৈষা দধির প্রাণ।

প্রায় দুই শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় থাকে এই দই। এ ছাড়া অতিথি আপ্যায়নের অন্যতম প্রধান উপাদান এটি। উৎসব-পার্বণ, বিয়েশাদি কিংবা যেকোনো সামাজিক আয়োজনে বৈষা দধি ছাড়া যেন ভোলার কোনো উৎসব পরিপূর্ণতা পায় না।

মুহাম্মদ শওকাত হোসেনের ‘ভোলা জেলার ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, দুই শ বছর আগে থেকে ভোলায় চর জাগতে শুরু করে। বসতি হয়, মহিষ পালন শুরু হয়। দুধ সংরক্ষণের উপায় ছিল না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দই বানাতেন। সেখান থেকেই বৈষা দধির যাত্রা শুরু, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে পুরো অঞ্চলে।

ভোলার মানুষের খাদ্যসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এই দই। এটি ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়, চিড়া-মুড়ির সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় মুখরোচক খাবার, আবার গরমের দিনে দই, পানি ও চিনি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ঘোল—যা শরীরকে শীতল রাখে। শীতকালে হাঁসের মাংসের সঙ্গে টক দই ও খেজুরের গুড়—ভোলার ভোজনরসিকদের কাছে এক অনন্য স্বাদ। পান্তাভাতের সঙ্গে দই ও খেজুরের গুড় এই অঞ্চলের জনপ্রিয় একটি খাবার।

বর্তমানে প্রতি কেজি বৈষা দই বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। তবে ঈদে দাম বেড়ে যায়। ঈদের আগেই বিক্রেতারা দুধ জমাতে শুরু করেন এবং এ সময়ে প্রতিদিন ৮০০–৯০০ কেজি পর্যন্ত দই বিক্রি হয়।

ভোলার দোকানগুলোতে প্রতিদিন মণকে মণ বৈষা দধি তৈরি হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চৌধুরীবাড়ী ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
  • ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত
  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি