আমার কাজ কখনোই আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না: রুনা খান
Published: 15th, January 2025 GMT
“কাজ করার সময় কখনোই আমার কাজ আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। শুটিংয়ের দেওয়ার সময় শুধু মনে হয় এটা হচ্ছে না, ওটা হচ্ছে না। সব সময় একটা অপূর্ণতা মনে হয়। পরে সেটা নির্মাতা ও সহশিল্পীদের সহযোগিতায় কাটিয়ে উঠতে হয়। ফলে কাজটা আরও দুর্দান্ত হয়ে পর্দা ফুটে ওঠে। যেমনটা হয়েছে ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার ক্ষেত্রে।”
আজ (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে নিজের সিনেমা ‘নীলপদ্ম’ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন অভিনেত্রী রুনা খান।
২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘বাংলাদেশ প্যানারোমা’ বিভাগে প্রতিযোগিতা করছে ‘নীলপদ্ম’। দেশের বাইরের উৎসবে প্রদর্শিত হলেও বাংলাদেশ এটিই ‘নীলপদ্ম’র প্রিমিয়ার।
সিনেমা প্রদর্শনী শেষে রুনা খান বলেন, ‘এই সিনেমা দিয়ে নির্মাতা আমাদের সমাজের এক অংশেরে কথা বলতে চেয়েছেন। সেখানে আছে বিশেষ কিছু বার্তা। তিনি সিনেমার মধ্যমে যে শ্রেণির মানুষের বার্তা দিতে চেয়েছেন সেটা যদি দেশের মানুষের কাছে পৌঁছায় তাহলেই আমাদের সার্থকতা।’
‘নীলপদ্ম’ সিনেমার প্রধান চরিত্র নীলা। যৌনপল্লিতে তার বেড়ে ওঠা। সে জানে না তার জন্মপরিচয়। জানে না এই যৌনপল্লিতে যৌনকর্মী হিসেবে বেড়ে ওঠার কারণ। সব সময় এই জীবন ছেড়ে একটা সুন্দর–স্বাভাবিক জীবন চাইত নীলা। একটা সময় সে একজনকে বিশ্বাস করে এবং তার হাত ধরে এই যৌনপল্লি ছেড়ে চলে যায়। ভাগ্যের চরম পরিহাসে আবারও এই জীবনে ফিরে আসতে বাধ্য হয় নীলা। এভাবেই ভাগ্যেকে বরণ করে নেয় হাজারো নীলা। ‘নীলপদ্ম’ সিনেমায় নীলা চরিত্রেই অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রুনা খান।
যৌনকর্মীর চরিত্রে প্রথম অভিনয় করছেন রুনা খান। ফলে চরিত্রটি ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। তার কথায়, এই প্রথম যৌনকর্মীর চরিত্রে প্রথম অভিনয় করলাম। এটা আমার কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। লোকেশনটাও ছিলো একদম রিয়েল। এখানে নীলা চরিত্রটা যতটা ঠিকঠাক মনে হয়েছে তার কৃতিত্বটা আমি পুরো টিমকে দিতে চাই।’
কিছুটা আক্ষেপের সুরে রুনা খান বলেন, ‘জীবনধর্মী গল্পের ক্ষেত্রে আমরা এখনো সর্বোচ্চ বাজেট ও সুবিধা পাই না। সেই জায়গা থেকে হাজারো সীমাবদ্ধতা মাঝে নির্মাতা এটি তৈরি করেছেন। এখানে শুধু একজন যৌনকর্মীর জীবনের গল্প নয়, এই সম্প্রদায়ের অনেকজনের জীবনের একটু একটু অংশ নিয়ে তিনি ওদের কথা বলতে চেয়েছেন।
পরিচালনার পাশাপাশি ‘নীলপদ্ম’ প্রযোজনাও করেছেন তৌফিক এলাহী। রুনা খান ছাড়াও সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন রোকেয়া প্রাচী, শাহেদ আলী, রাশেদ মামুন অপু, সুজাত শিমুল।
কলাকুশলী ছাড়াও ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার এদিন হাজির হয়েছিলেন অভিনেতা জিতু আহসান, আব্দুন নূর সজল, অভিনেত্রী, শার্লিন ফারজানা, জান্নাতুল ফেরদৌসী ঐশীসহ আরও অনেকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম ডিসি পার্কে ফুল উৎসবে তাণ্ডব, ভাঙচুর
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের ডিসি পার্কে ফুল উৎসবে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা। পার্কের গেটসহ তারা ভাঙচুর করেছে ২০টির বেশি দোকান। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ফুল উৎসবে আসা দর্শনার্থী, গাড়িচালক, হেলপারসহ শতাধিক ব্যক্তি। পরে সেনাবাহিনীর টিম এলে রাত সাড়ে ১০টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর সংযোগ সড়কের ডিসি পার্কে মাসব্যাপী ফুল উৎসবে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটে। হামলার জেরে ফুল উৎসব স্থগিত করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, ডিসি পার্কের গেটের সামনে একটি কার পার্কিং রয়েছে। এর দক্ষিণে লরি ও কাভার্ডভ্যান দাঁড়ালে কার পার্কিংয়ে দায়িত্বরতদের সঙ্গে চালকদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন এসে ট্রাকচালকদের মারধর করেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ট্রাকচালকসহ বহিরাগতরা পার্কের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। তারা পার্কের ভেতরে ফুল উৎসবের ২০টির বেশি অধিক দোকান ভাঙচুর করেন।
ডিসি পার্কে ফুল উৎসবে আসা দর্শনাথী রাবেয়া বেগম বলেন, হঠাৎ করে লাঠি নিয়ে কিছু যুবক হামলা শুরু করে। এতে তাঁরসহ অনেক দর্শনার্থীর মোবাইল ও ভ্যানেটি ব্যাগ হারিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু উচ্ছৃখল যুবক ডিসি পার্কের গেট ভেঙে ভেতরে লাঠি নিয়ে ঢুকে দোকান ভাঙচুর করছে। হামলায় অন্তত ৩০ দর্শনার্থী আহত হয়েছেন।
ট্রাকচালক আবদুল করিম বলেন, পার্কিংয়ের বাইরে সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড়ালে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন। তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চালকদের মারধর করেন। পরে অন্য চালক ও স্থানীয়রা পার্কের ভেতর ঢুকে ভাঙচুর চালান।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুবার লরি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়েরের দাবি, রাস্তায় গাড়ি দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ডিসি পার্কে থাকা লোকজন চালকদের ওপর হামলা চালান। এতে ৬০-৭০ জন চালক আহত হন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বন্দর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডিসি পার্কের সামনে পার্কিংয়ে থাকা লোকজন এ হামলা চালিয়েছে।
তবে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, ডিসি পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়, যা সহিংস রূপ নেয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. সোহেল বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সীতাকুণ্ডের ইউএনও কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ডিসি পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সহিংসতা পার্শ্ববর্তী ডিসি পার্কে ছড়িয়ে পড়ে।