রাজশাহী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতের দুর্ব্যবহার, বিক্ষোভ
Published: 4th, February 2025 GMT
বহিরাগতের বিরুদ্ধে রাজশাহী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় এ ঘটনার প্রতিবাদে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে কলেজ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনিকা অনন্যা তার বড় বোন ফারজানা মমোকে কলেজে নিয়ে আসেন। তারা কলেজের কয়েকজন ছাত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও চরম দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে শিক্ষার্থীরা তাদের আটক করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে গিয়েও তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ অব্যাহত রাখেন এবং শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ফারজানা মমো ও আনিকার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করে শিক্ষার্থীরা জানান, বহিরাগত কেউ এসে তাদের শিক্ষকদের অপমান করবে এবং হুমকি দেবে, এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা এমন দুঃসাহস দেখিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
রাজশাহী কলেজের স্নেহা চৌধুরী নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের শিক্ষকদের কেউ অপমান করলে আমরা সহ্য করব না। বহিরাগত কেউ এসে আমাদের ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, এটা হতে পারে না। আমরা চাই, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।”
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারাও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ছাত্রশিবিরের রাজশাহী কলেজ শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমরা আমাদের শিক্ষকদের অসম্মান সহ্য করব না। তবে কাউকে অন্যায়ভাবে হেনস্তা করতে চাই না। আইন অনুযায়ী অপরাধীর বিচার হওয়া উচিত।”
ছাত্রদলের রাজশাহী কলেজ শাখার আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, “অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। তবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং কলেজ প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে হবে।"
রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ মো.
ঢাকা/ফারজানা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ব যবহ র শ ক ষকদ র কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনায় তীব্র নদী ভাঙনে বিলীনের মুখে ফেরি ঘাট
উজানের পানির প্রবাহ বাড়ছে পদ্মা নদীতে। পানির বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাড় ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। অবহেলা আর অযত্নে থাকা পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটে এই তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ফেরিঘাটটি। যেকোনো মুহূর্তে ঘাটটি নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এছাড়াও তীব্র ভাঙনের ফলে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, হুমকিতে পড়েছে তাদের বসতবাড়ি।
সরেজমিন দেখা যায়, নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটের পূর্ব পাশের ফেরি পল্টনের নিচ থেকেই বড় বড় পার ভেঙে নদীতে পড়ছে। ফেরিঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত এই ভাঙন চলছে। ফেরির মেইন পল্টুনের মাত্র কয়েক হাত দূর থেকে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর তীর ঘেঁষে কয়েক গজ দূরেই নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই। যেভাবে ভাঙছে তাতে অল্পদিনের মধ্যেই সেই মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও হারাতে পারেন তারা।
নদীপারের বাসিন্দারা বলেন, নদীর পশ্চিম পাশে বড় বড় ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা হয়েছে। অথচ পূর্বপাশে কোনো ধরনের ব্লক নেই। কয়েক বছর ধরেই ভাঙছে, কিন্তু এবারের ভাঙনটা তীব্র হচ্ছে। আর কয়েকদিন গেলে তো আমাদের ঘর-বাড়ি নদীতে চলে যাবে। তারপরও কেউ দেখার নেই। আমরা মাথা গোজার ঠাঁই টুকুও হারাতে যাচ্ছি। আমরা কিছুই চাই না শুধু নদীর তীর রক্ষা চাই।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে নদী শাসন না করা এবং নদী রক্ষায় অন্যান্য ব্যবস্থা না নেয়ার ফলেই এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও ঘাটের দুই পাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক অবৈধ ও যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা হয়। অপরিকল্পিত এই বালু উত্তোলনের কারণেও এই ভাঙন হচ্ছে।
ঘাটের এই অবস্থার জন্য ইউএনও ও ডিসিকে দায়ী করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নাজিরগঞ্জ ঘাটের পোর্ট অফিসার তোফাজ্জল হোসেন জানান, চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালে আমাদেরকে ঘাটের জমি বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও এখনও ইউএনও ও ডিসি আমাদের সেটা দেননি। এজন্য আমরা ঘাটের কোনো উন্নয়ন করতে পারছি না। এভাবে আর কিছুদিন গেলে (ভাঙন হলে) তো আমার ঘাটই ভেঙে যাবে। বাধ্য হয়ে আমি আমার কোটি টাকার পল্টন সরিয়ে নিতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জানান, স্থানীয়দের কিছু আপত্তির কারণে তাদেরকে (বিআইডব্লিউটিএ) জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আর নদী ভাঙনের বিষয়ে আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমরা ইতোধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে উদ্যোগ নিয়েছি।