ঢাকায় আন্তর্জাতিক শিক্ষা মেলা শুরু ২২ ফেব্রুয়ারি
Published: 7th, February 2025 GMT
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক শিক্ষা মেলা। আগামী ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে।
‘এনআরবিসি ব্যাংক নিবেদিত দ্বাদশ আন্তর্জাতিক এডুকেশন এক্সপো ২০২৫’ ফরেন অ্যাডমিশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ফ্যাকড-ক্যাব) আয়োজন করছে।
মেলাটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থী, পেশাজীবী এবং দর্শনার্থীদের জন্যে উম্মুক্ত থাকবে। মেলা চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা স্পট অ্যাডমিশন, বিদেশে ক্যারিয়ার গড়া, স্কলারশিপ সুবিধাসহ ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ নিয়ে আয়োজিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এই আন্তর্জাতিক শিক্ষা মেলা-তে বিশ্বের ৪৫টির বেশি দেশের এক হাজারের বেশি টপ র্যাঙ্কিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি তথ্য ও স্কলারশিপ সুবিধা সম্পর্কে শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা মেলায় এসে জানতে পারবে।
এবারের এই আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইউরোপের দেশসমূহ, মালয়েশিয়া, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরো অনেক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তারা শিক্ষার্থীদের কোর্স সিলেকশন, ভর্তি প্রক্রিয়া, ভিসা প্রোসেসিং, স্কলারশিপ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করবেন। মেলায় দেশের প্রথম সারির ৬০টির বেশি এডুকেশন কনসালটেন্সি ফার্ম এর পাশাপাশি টোফেল, টেন মিনিটস স্কুল, ব্যাংকসমূহ একই ছাদের নীচে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে সহায়তা দিবে।
মেলার সার্বিক দিক তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এ সময় জানানো হয়, মেলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে অন-দ্য-স্পট অ্যাডমিশন এবং ফ্রি অ্যাপ্লিকেশন প্রসেসিং এর সুযোগ। এছাড়াও এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করে জিতে নিতে পারেন ল্যাপটপ, স্মার্ট ফোন, ফ্রি এয়ারলাইন্স টিকিট, আইএলটিএস, ক্যাশব্যাক এবং সর্বোচ্চ ১০০ ভাগ স্টাডি স্কলারশিপ সুবিধাসহ আকর্ষণীয় উপহার।
এক্সপো চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পছন্দসই প্রোগ্রাম, টিউশন ফি এবং ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন।বিশেষ কনসালটেশন বুথগুলোতে পার্সোনালাইজড গাইডেন্স পাওয়া যাবে, যা শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা লক্ষ্য অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বিশেষ সহায়তা করবে। দুই দিনব্যাপী এই শিক্ষা মেলায় অর্ধ-লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করতে পারেন বলে জানায় এর আয়োজকরা।
দ্বাদশ আন্তর্জাতিক এডুকেশন এক্সপো'র কনভেনার, মোহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, এই এক্সপো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তারা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তাদের শিক্ষা ও ক্যারিয়ার পরিকল্পনা তৈরি করতে পারবেন। নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক এডুকেশন এক্সপো আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই।
ঢাকা/হাসান/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দৃষ্টিশক্তি বাড়াবে নতুন যন্ত্র
বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয় একটি সাধারণ রোগ। এতে দৃষ্টিশক্তির কেন্দ্রীয় অংশকে প্রভাবিত হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চোখের দৃষ্টিশক্তি আরও খারাপ হতে থাকে। এই রোগের সঠিক কারণ বিজ্ঞানীদের কাছে এখনো অজানা। সাধারণভাবে রেটিনার কেন্দ্রে আলোসংবেদনশীল ফটোরিসেপ্টর কোষ ও স্নায়ুকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এমন রোগ হতে পারে। এতে রোগীর মুখ চিনতে বা পড়তে অসুবিধা হয়। এই রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই। বর্তমানে অনুমোদিত চিকিৎসার মাধ্যমে রোগের বিস্তৃতি ধীর করা যায়।
জিওগ্রাফিক অ্যাট্রোফি নামে পরিচিত এই রোগের উন্নত পর্যায়ে থাকা রোগীরা সাধারণত কিছু ফটোরিসেপ্টর কোষের মাধ্যমে প্রান্তীয় দৃষ্টি বজায় রাখতে পারেন। এ ছাড়া যথেষ্ট রেটিনাল স্নায়ুকোষ থাকে, যা দৃশ্যমান তথ্য মস্তিষ্কে পাঠাতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্যানিয়েল পালঙ্কার ও তাঁর সহকর্মীরা এর সুবিধা নিয়ে প্রাইমা নামে একটি ডিভাইস তৈরি করেছেন। এতে এক জোড়া চশমার ওপর একটি ছোট ক্যামেরা লাগানো থাকে, যা ছবি তুলে ইনফ্রারেড আলোর মাধ্যমে চোখের পেছনে ইমপ্লান্ট করা একটি ২x২ মিমি আকারের সৌরচালিত ও রেডিও চিপে তা দেখায়। এরপর চিপটি ছবির তথ্যকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে, যা রেটিনাল স্নায়ুকোষ মস্তিষ্কে পৌঁছে দিতে পারে।
বিজ্ঞানী পালঙ্কার বলেন, ‘ইনফ্রারেড আলো ব্যবহার করা হয়, কারণ আমরা এই তরঙ্গদৈর্ঘ্যে দেখতে পাই না, তাই এই প্রক্রিয়া বিদ্যমান দৃষ্টিশক্তির সঙ্গে কোনো হস্তক্ষেপ করে না। রোগীরা কৃত্রিম ও প্রান্তীয় দৃষ্টি উভয়ই একই সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন। যন্ত্রটি পরীক্ষা করার জন্য, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী ৩২ জন ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তাঁদের জিওগ্রাফিক অ্যাট্রোফি ছিল। তাঁদের কমপক্ষে একটি চোখের দৃষ্টি ২০/৩২০ মাত্রার চেয়ে খারাপ ছিল। তাঁরা ২০ ফুট বা ৬ মিটার দূরত্ব থেকে কেবল দেখতে পেতেন। আর ২০/২০ মাত্রার দৃষ্টিসম্পন্ন একজন ব্যক্তি ৩২০ ফুট বা ৯৭.৫ মিটার দূরত্ব থেকে দেখতে পান।’
গবেষকেরা প্রথমে অংশগ্রহণকারীদের এক চোখে চিপ ইমপ্লান্ট করেন। তারপর, চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ পরে তাঁরা দৈনন্দিন জীবনে চশমা ব্যবহার শুরু করেন। এই চশমা তাঁদের দেখা জিনিসকে ১২ গুণ পর্যন্ত বড় করতে আর উজ্জ্বলতা ও বৈসাদৃশ্য সামঞ্জস্য করতে দিত। এক বছর পর ২৭ জন অংশগ্রহণকারী আবার পড়তে সক্ষম হন। তাঁরা আকার ও প্যাটার্ন উপলব্ধি করতে পারতেন। গবেষণার শুরুতে তাঁরা যা দেখতে পেতেন তার তুলনায়, একটি স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টি পরীক্ষার চার্টে তারা গড়ে আরও পাঁচটি অতিরিক্ত লাইন দেখতে সক্ষম হন। কেউ কেউ ২০/৪২ মাত্রার দৃষ্টিশক্তির সমতুল্য দৃষ্টি নিয়েও পড়তে পারতেন। এই গবেষণা দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের গবেষক হোসে-আলাইন সাহেল বলেন, ‘তাঁরা যখন অক্ষর ও শব্দ পড়তে শুরু করছেন, তখন সবাই আনন্দিত হয়েছে। আমার মনে আছে একজন রোগী আমাকে বলেছেন, আমি ভেবেছিলাম আমার চোখ মরে গেছে, আর এখন তারা আবার জীবিত!’
অংশগ্রহণকারীরা এখন আকার ও প্যাটার্ন উপলব্ধি করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। প্রাইমা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কার্যকর দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করার প্রথম চোখের প্রস্থেসিস হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ স্বেচ্ছাসেবক ইমপ্লান্টের ফলে স্বল্পমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেছিলেন। তবে তা দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করেনি। যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ফ্রান্সেস্কা কর্ডেইরো বলেন, এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা। এটি রোগীদের মধ্য কল্পবিজ্ঞানের মতো দৃষ্টি প্রদানের আশা জাগাচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা যে উন্নত দৃষ্টি অনুভব করেছিলেন, তা এখন সাদা-কালো। বিজ্ঞানীরা এমন সফটওয়্যার যুক্ত করতে কাজ করছেন, যা গ্রে স্কেল সমাধান করতে সাহায্য করবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া