আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী করছে
Published: 18th, February 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যেদিন ডিসিদের সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শক্ত হাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন, পরদিন প্রথম আলোয় ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরাপত্তাহীনতায় চালক ও যাত্রীরা’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হলো। কিছুদিন ধরেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির খবর প্রকাশিত হয়ে আসছিল। ধারণা করি, এ কারণে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু অন্যান্য বিষয়ের মতো এখানেও সরকারপ্রধানের সদিচ্ছা ও মাঠের বাস্তব চিত্রের বিরাট ফারাক আছে।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। দিনের বেলায়ও মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন থামিয়ে ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও চলছে ডাকাতি।
মহাসড়কে চলাচলকারী কুমিল্লা অঞ্চলের হালকা যানবাহনের চালকেরা নিজেদের ভার্চ্যুয়াল গ্রুপে শেয়ার করা তথ্যের বরাত দিয়ে বলেছেন, গত ছয় মাসে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে কুমিল্লার চান্দিনা পর্যন্ত মহাসড়কে অন্তত ১০০ ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, যার বেশির ভাগের ক্ষেত্রে মামলা হয়নি। অপর দিকে শেষ ছয় মাসে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনায় অন্তত ১৯টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ১৪ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার কেওঢালা এলাকায় র্যাব পরিচয়ে একদল লোক বাস থামিয়ে প্রবাস থেকে আসা দুই যাত্রীকে নামিয়ে দেয় এবং মাইক্রোবাসে তুলে তঁাদের সর্বস্ব লুট করে। এই পথের ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের প্রধান লক্ষ্য বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফেরা প্রবাসী ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীতে আসা ব্যবসায়ী।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে ৫ আগস্টের পর বেড়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগের কথা হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা র্যাবের পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা। এ ক্ষেত্রে যে সড়ক–মহাসড়কে টহলের ঘাটতি আছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
রাজনৈতিক সরকারের আমলে অপরাধ কম দেখানোর জন্য থানা পুলিশ মামলা নিত না। সরকারের ওপর মহলকে দেখানো হতো সবকিছু ঠিক আছে। গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও কেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে? এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা কী। সারা দেশে চলমান বিশেষ অভিযান অপারেশন ডেভিল হান্টে এ পর্যন্ত কতজন চিহ্নিত ডাকাত ও ছিনতাইকারী ধরা পড়েছে, সেই সংখ্যাও জানানো হোক। শুধু বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের ধরা যদি এই অভিযানের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, তাতে আটকের সংখ্যা যত বেশিই হোক না কেন, অপরাধ কমবে না।
কেবল ঢাকা–চট্টগ্রাম সড়ক নয়, দেশের প্রায় সব সড়ক–মহাসড়কের নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই ভঙ্গুর। বিশেষ করে দূরের পথে যাঁরা প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস নিয়ে চলাচল করেন, তাঁদের জন্য ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। গণপরিবহন বা বাস চলাচলের ক্ষেত্রে কিছুটা নজরদারি আছে। কিন্তু এসব পরিবহনে একেবারেই নজরদারির বাইরে থেকে যাচ্ছে।
ছয় মাস পর এসে পুলিশ নিষ্ক্রিয় বা বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় নেই —এ ধরনের অজুহাত দেওয়ার সুযোগ থাকে কি? আমরা আশা করব, অন্তর্বর্তী সরকার সড়ক–মহাসড়কে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করবে। বিশেষ করে অপরাধপ্রবণ এলাকায় সার্বক্ষণিক টহল দিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায় হবে : হাফিজুর
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা কর্তৃক আয়োজিত মহান মে দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমেই শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায় হবে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর বাস স্ট্যান্ডে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি আব্দুল মান্নান'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে বিভিন্ন সরকারের কাছে উন্নয়নের বুলি ছাড়া আর কিছু শুনিনি, আমাদের এই নারায়ণগঞ্জ শহরে আদমজী জুট মিল,করিম জুট মিল, বাওয়ানী জুট মিল সহ অনেকগুলো জুট মিল ছিলো।
প্রত্যেকটা জুট মিলে প্রায় ১০/১২ হাজার করে শ্রমিক ছিলো। এই পাটকল গুলো শ্রমিকের জন্য বন্ধ হয়নি,বন্ধ হয়েছিল দুর্নিতিবাজ কর্মকর্তা আর নেতৃত্বের নামে চোর,বাটপারদের জন্য। অনেকেই শ্রমিকদের অধিকারের কথা বলে, কিন্তু আজো পর্যন্ত শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায় হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে এক সময় লাল পতাকাধারী নেতারা বক্তৃতা দিতো, কেউ থাকবে পাঁচ তলায় আর কেউ থাকবে বাঁশ তলায় তা হবেনা। এই বলে তারা কোটিপতি বনে গিয়েছিল।
কিন্তু শ্রমিকদের কোনো ভাগ্য বদল হয়নি। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে আজ শ্রমিকরা দিশেহারা। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন এমন এক শ্রম নীতি চায়,মালিক আর শ্রমিকের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবেনা।
আমাদের দেশের নেতারা মালিকের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ক্ষেপিয়ে দিয়ে মিল কারখানা ধ্বংস করছে, পক্ষ্যান্তরে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন বলছে মালিক শ্রমিক ভাই ভাই, উন্নয়নের বিকল্প নাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন'র সাধারন সম্পাদক মো. রিদওয়ানুল আযীম'র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোঃ আব্দুর রহমান, জেলা নির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন, আমিন আহমেদ মাস্তান, সাবেক সাধারন সম্পাদক, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা, আব্দুল মজিদ সিকদার, জেলা সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন,নারা.জেলা, আবু সাঈদ মুন্না, জেলা সহ সেক্রেটারি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, নারায়ণগঞ্জ জেলা।
এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ফিরোজ আহমেদ ভূইয়া,সাধারন সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ সদর দর্জি শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়ন, মোঃরুহুল আমিন, সভাপতি, রূপগঞ্জ রিকশা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, আজিজ উদ্দিন বাবুল সভাপতি, ফতুল্লা দক্ষিণ, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা, মো. হুমায়ূন কবির, সভাপতি সোনারগাঁ উত্তর, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা।
সমাবেশ শেষে এক বিশাল র্যালি মদনপুর হয়ে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।