ফতুল্লায় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে তীব্র গন্ধ, আতঙ্ক-ভোগান্তি
Published: 20th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের সময় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে গ্যাসের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফেটে যাওয়া পাইপলাইন মেরামতে আজ রোববার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এতে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকেরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগর এলাকায় পঞ্চবটি-মুক্তারপুর উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের সময় খননযন্ত্র দিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে যায়। খবর পেয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গিয়ে অস্থায়ীভাবে পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত করে। এরপর শহরের আল্লামা ইকবাল রোড, বাবুরাইল, গলাচিপা, বিসিকসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে আজ রোববার তিন ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে ছিদ্রটি মেরামত করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
গ্যাসের গন্ধ ছড়ানোর কথা জানিয়ে শহরের আল্লামা ইকবাল রোডের বাসিন্দা ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ রুমন রেজা বলেন, ‘গ্যাসের এমন প্রকট গন্ধ কখনো দেখা যায়নি। এতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকার মার্জিয়া রহমান বলেন, নোটিশ ছাড়াই আজ দুপুর দুইটার পর থেকে হঠাৎ করে চুলার গ্যাস চলে যায়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবার গ্যাস এসেছে।
পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস গ্যাসের ফতুল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চবটি এলাকায় উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। অস্থায়ীভাবে ছিদ্রটি মেরামত করা হয়েছিল। আজ বেলা তিনটার দিকে মেইন পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে স্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছে। বিকেল পাঁচটার পর থেকে গ্যাস সরবরাহ চালু করা হয়েছে।
দুর্গন্ধ ছড়ানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিতাসের এই কর্মকর্তা জানান, কোথাও গ্যাসের পাইপলাইনে ছিদ্র হলে কেমিক্যাল (অডরেন্ট) ব্যবহার করা হয়, ছিদ্রটি খুঁজে বের করতে সহজ হয়। হয়তো কেমিক্যালটি পরিমাণের চেয়ে বেশি পড়েছে—এ কারণে ছিদ্র থেকে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে থাকতে পারে। এ কারণে মানুষ ঝাঁজালো গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি জানান, দ্বিতল উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের জন্য এ পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০-৩৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মশিউর রহমান আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অধিকাংশ পাইপলাইন বহু বছর আগের। সেখানে ছিদ্র থেকে গন্ধ বের হয়ে থাকতে পারে। একেকটি পাইপলাইনে ২০-২৫ ফুট নিচে। এত নিচের পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত করা কঠিন। নতুন পাইপলাইন স্থাপন না করা হলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
জানতে চাইলে তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনার রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ছিদ্রটি মেরামত করার পর গ্যাস সরবরাহ চালু করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১২ মে ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগর এলাকায় পঞ্চবটি-মুক্তারপুর উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের সময় মাটি খোঁড়ার সময় তিতাস গ্যাসের মেইন পাইপলাইন ফেটে বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে গিয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ ন র য়ণগঞ জ এল ক য় আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।