নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের সময় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে গ্যাসের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফেটে যাওয়া পাইপলাইন মেরামতে আজ রোববার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এতে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকেরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগর এলাকায় পঞ্চবটি-মুক্তারপুর উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের সময় খননযন্ত্র দিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে যায়। খবর পেয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে গিয়ে অস্থায়ীভাবে পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত করে। এরপর শহরের আল্লামা ইকবাল রোড, বাবুরাইল, গলাচিপা, বিসিকসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে আজ রোববার তিন ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে ছিদ্রটি মেরামত করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।

গ্যাসের গন্ধ ছড়ানোর কথা জানিয়ে শহরের আল্লামা ইকবাল রোডের বাসিন্দা ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ রুমন রেজা বলেন, ‘গ্যাসের এমন প্রকট গন্ধ কখনো দেখা যায়নি। এতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকার মার্জিয়া রহমান বলেন, নোটিশ ছাড়াই আজ দুপুর দুইটার পর থেকে হঠাৎ করে চুলার গ্যাস চলে যায়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবার গ্যাস এসেছে।

পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিতাস গ্যাসের ফতুল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চবটি এলাকায় উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। অস্থায়ীভাবে ছিদ্রটি মেরামত করা হয়েছিল। আজ বেলা তিনটার দিকে মেইন পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে স্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছে। বিকেল পাঁচটার পর থেকে গ্যাস সরবরাহ চালু করা হয়েছে।

দুর্গন্ধ ছড়ানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিতাসের এই কর্মকর্তা জানান, কোথাও গ্যাসের পাইপলাইনে ছিদ্র হলে কেমিক্যাল (অডরেন্ট) ব্যবহার করা হয়, ছিদ্রটি খুঁজে বের করতে সহজ হয়। হয়তো কেমিক্যালটি পরিমাণের চেয়ে বেশি পড়েছে—এ কারণে ছিদ্র থেকে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে থাকতে পারে। এ কারণে মানুষ ঝাঁজালো গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা ও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি জানান, দ্বিতল উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের জন্য এ পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০-৩৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

মশিউর রহমান আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অধিকাংশ পাইপলাইন বহু বছর আগের। সেখানে ছিদ্র থেকে গন্ধ বের হয়ে থাকতে পারে। একেকটি পাইপলাইনে ২০-২৫ ফুট নিচে। এত নিচের পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত করা কঠিন। নতুন পাইপলাইন স্থাপন না করা হলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

জানতে চাইলে তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনার রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ছিদ্রটি মেরামত করার পর গ্যাস সরবরাহ চালু করা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ১২ মে ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগর এলাকায় পঞ্চবটি-মুক্তারপুর উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের সময় মাটি খোঁড়ার সময় তিতাস গ্যাসের মেইন পাইপলাইন ফেটে বিস্ফোরণ থেকে আগুন ধরে গিয়েছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ য স সরবর হ ন র য়ণগঞ জ এল ক য় আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন

স্তূপ করে রাখা ইলিশে ভরে গেছে ঘাট। চারদিকে মাছের গন্ধ, বরফের ঠান্ডা ধোঁয়া, ক্রেতার হাঁকডাক। কেউ দর কষছেন, কেউ আবার টাটকা ইলিশ দেখে ব্যাগভর্তি করে নিচ্ছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী নদীর তীরে ফিশারিঘাটের নতুন মাছবাজারে গিয়ে দেখা গেল এই ব্যস্ত চিত্র।

নিষেধাজ্ঞার পর বাজার যেন নিজের ছন্দে ফিরেছে। গত ২৫ অক্টোবর সাগরে মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এর পর থেকেই একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে ঘাটে—কোনো ট্রলারভর্তি লইট্টা, কোনোটা ছুরি, চিংড়ি, ফাইস্যা বা ইলিশে ভরপুর। ভোর থেকেই আড়তগুলোয় শুরু হয় নিলাম, পরে সেই মাছ চলে যায় শহরের বাজারে। এমনকি জেলার গ্রামীণ হাটবাজারেও পৌঁছে যাচ্ছে ট্রাকভর্তি মাছ।

গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, নদীর ঘাট ঘেঁষে ট্রলার। ঘাটে নামছে বরফঠান্ডা মাছের বাক্স। আড়তের সামনে ইলিশের স্তূপ ঘিরে ক্রেতাদের ভিড়। বিক্রেতারা তখন বরফ ছুড়ে দিচ্ছেন মাছের ওপর। ছোট আকারের ইলিশের দাম ক্রেতাদের কেউ হাঁকছেন ১০ হাজার, কেউ ১২ হাজার টাকা—শেষমেশ দর থামছে ১৬ হাজার টাকায়। ওই দরে বিক্রি হলো ১ মণ ছোট আকারের ইলিশ। এক কেজিতে পড়ছে পাঁচ থেকে ছয়টি করে মাছ।

নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম।নুর মোহাম্মদ, আড়তদার

মেসার্স হাজি আবদুল গণি ফিশিংয়ের স্বত্বাধিকারী নুর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই জেলেরা সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু বড় আকারের ইলিশ এখনো তেমন ধরা পড়ছে না। ছোট ও মাঝারি ইলিশই বাজারে বেশি আসছে।

ব্যস্ত ঘাট, ব্যস্ত আড়ত

ফিশারিঘাটে এখন সকাল থেকেই যেন উৎসবের আমেজ। ট্রলার ঘাটে ভিড়লেই শুরু হয় কর্মচাঞ্চল্য। আড়তগুলোর সামনেই চলছে বাক্সে মাছ ভরানোর কাজ। আড়তদারেরা জানান, চট্টগ্রামের এই ঘাটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় বাজার একটু স্তিমিত থাকে। অন্য সময় লেগে থাকে ব্যস্ততা।

ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া; প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

আড়তদার নুর মোহাম্মদের মতে, নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম। একই আক্ষেপ করলেন মেসার্স মা মরিয়ম ফিশিংয়ের কর্ণধার ছৈয়দ নুর। তিনি বলেন, বড় আকারের ইলিশ কম আসছে। তবে অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ প্রচুর ধরা পড়ছে। বিক্রিও ভালো।

দরদাম যেমন

ফিশারিঘাটের পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া—প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

মাছের ওপর বরফ ছিটানো হচ্ছে। গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের ফিশারিঘাট নতুন মাছ বাজারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • ঘুঘুডাঙ্গার মনোরম তালসড়ক
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প