লা লিগার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন এখনও বাঁচিয়ে রাখলো রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অ্যাথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে যোগ করা সময়ে ফেদেরিকো ভালভার্দের দুর্দান্ত হাফ-ভলির গোলে ১-০ ব্যবধানে জয় পায় লস ব্লাঙ্কোসরা। 

ম্যাচের ইনজুরি টাইম ৯৩ মিনিটে বাম পায়ে নেয়া দারুণ এক শটে বল জালে পাঠান ভালভার্দে। দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে একের পর এক আক্রমণ করে বিলবাও রক্ষণের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু গোলমুখে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে একের পর এক সেভে দলকে বাঁচিয়ে যাচ্ছিলেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। 

ক্যামাভিঙ্গার শট থেকে শুরু করে জুদ বেলিংহামের হেড সবই আটকে দেন সিমন। এমনকি শেষ দিকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের এক নিখুঁত শট গোলপোস্টে পাঠালেও ভিএআরের সিদ্ধান্তে অফসাইডের জন্য বাতিল হয় গোলটি।  

এক সময় মনে হচ্ছিল, পয়েন্ট খুইয়ে শিরোপা দৌড়ে বড় ধাক্কা খাবে রিয়াল। তবে ম্যাচের যোগ করা সময়ে এসে হাল ছাড়েননি ভালভার্দে। বল জালে পাঠিয়ে এনে দেন স্বস্তির জয়, চাপ কমান কোচ কার্লো আনচেলত্তির।  

এই গোলটি ভালভার্দের মৌসুমে ষষ্ঠ লিগ গোল হলেও, ডিসেম্বরে সেভিয়ার বিপক্ষে গোল করার পর এটিই তার প্রথম স্কোরিং। জয় পাওয়ায় এখন বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান ৪, আরও ছয়টি ম্যাচ বাকি রয়েছে মৌসুমে।  

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনালের কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ছিটকে যাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ছিল রিয়াল। এই জয় নতুন করে উজ্জীবিত করেছে দলকে।  

এদিকে, লাল কার্ডের কারণে নিষিদ্ধ হওয়া কিলিয়ান এমবাপ্পে এই ম্যাচে মাঠে নামেননি। তবে তিনি খেলতে পারবেন আসন্ন কোপা দেল রে'র ফাইনালে, যেখানে রিয়ালের প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। শনিবার সেই মহারণেই নির্ধারিত হতে পারে মৌসুমের ভাগ্য। তার আগে বিলবাওয়ের বিপক্ষে এই দারুণ জয় নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে আনচেলত্তির শিষ্যদের।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের উন্নতির সম্ভাবনা নিয়ে হতাশ ৪৬%, আশাবাদী ৩৫%

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রায় অর্ধেক মানুষ হতাশ। এক-তৃতীয়াংশের বেশি কিছু মানুষ দেশ নিয়ে আশাবাদী। ৮৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন, কর্মসংস্থান বা আয়ের সুযোগ এখন অনুকূলে নয়। বর্তমান অবস্থা ব্যবসা-বাণিজ্যের উপযুক্ত নয় বলে মনে করেন ৭৭ শতাংশ মানুষ।

দেশ নিয়ে আশা-হতাশা, কর্মসংস্থানের সুযোগ বা ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ এবং দেশ ছাড়ার বিষয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলো উঠে এসেছে প্রথম আলোর উদ্যোগে করা ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’-এ। প্রথম আলোর জন্য জরিপটি করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিডেট।

জরিপে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের আর্থিক ও সামাজিক উন্নতির সম্ভাবনা নিয়ে কতটা আশাবাদী? উত্তরে ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা হতাশার কথা বলেছেন। একই প্রশ্নে খুবই হতাশ ১১ দশমিক ৩ শতাংশ উত্তরদাতা। ফলে হতাশ ও খুবই হতাশ উত্তরদাতার হার দাঁড়ায় প্রায় ৪৬ শতাংশ। অন্যদিকে কিছুটা আশা আছে ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতার। অত্যন্ত আশাবাদী ৩ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতা। দুয়ে মিলে আশাবাদী উত্তরদাতার হার দাঁড়ায় ৩৫ শতাংশ। হতাশ নন, আবার আশাবাদীও নন ১৯ শতাংশ উত্তরদাতা।

জরিপ বলছে, দেশের আর্থিক ও সামাজিক উন্নতির বিষয়ে নারী-পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি এক নয়। নারীর মধ্যে দেশ নিয়ে আশাবাদ বেশি। একইভাবে বয়স্কদের চেয়ে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেশ নিয়ে আশাবাদ কিঞ্চিৎ বেশি দেখা গেছে।

প্রথম আলোর উদ্যোগে করা জরিপে দেশের ৫টি নগর ও ৫টি গ্রাম বা আধা শহরাঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৫৫ বছর) ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। জরিপে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর।

অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, দেশে আয়-উপার্জন-ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি ভালো নয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৭ শতাংশের কিছু বেশি উত্তরদাতা বলছেন, পরিস্থিতি ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূলে নয়। ২০ শতাংশের মতো উত্তরদাতা মনে করেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করার মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটি একটি মতামত জরিপ। এটা দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার (কনফিডেন্স লেভেল) মাত্রা ৯৯ শতাংশ।

উত্তরদাতাদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কর্মসংস্থান ও আয়-উপার্জনের সুযোগ পাওয়ার জন্য কতটা অনুকূল। পরিস্থিতি অনুকূল নয় বলে প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ উত্তর দিয়েছেন। অনুকূল বলেছেন মাত্র ৫ শতাংশ উত্তরদাতা। বাকিরা বলেছেন, তাঁরা নিশ্চিত নন।

প্রথম আলো গ্রাফিকস

সম্পর্কিত নিবন্ধ