বিলবাওকে হারিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে টিকে রইলো রিয়াল
Published: 21st, April 2025 GMT
লা লিগার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন এখনও বাঁচিয়ে রাখলো রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অ্যাথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে যোগ করা সময়ে ফেদেরিকো ভালভার্দের দুর্দান্ত হাফ-ভলির গোলে ১-০ ব্যবধানে জয় পায় লস ব্লাঙ্কোসরা।
ম্যাচের ইনজুরি টাইম ৯৩ মিনিটে বাম পায়ে নেয়া দারুণ এক শটে বল জালে পাঠান ভালভার্দে। দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে একের পর এক আক্রমণ করে বিলবাও রক্ষণের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু গোলমুখে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে একের পর এক সেভে দলকে বাঁচিয়ে যাচ্ছিলেন গোলরক্ষক উনাই সিমন।
ক্যামাভিঙ্গার শট থেকে শুরু করে জুদ বেলিংহামের হেড সবই আটকে দেন সিমন। এমনকি শেষ দিকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের এক নিখুঁত শট গোলপোস্টে পাঠালেও ভিএআরের সিদ্ধান্তে অফসাইডের জন্য বাতিল হয় গোলটি।
এক সময় মনে হচ্ছিল, পয়েন্ট খুইয়ে শিরোপা দৌড়ে বড় ধাক্কা খাবে রিয়াল। তবে ম্যাচের যোগ করা সময়ে এসে হাল ছাড়েননি ভালভার্দে। বল জালে পাঠিয়ে এনে দেন স্বস্তির জয়, চাপ কমান কোচ কার্লো আনচেলত্তির।
এই গোলটি ভালভার্দের মৌসুমে ষষ্ঠ লিগ গোল হলেও, ডিসেম্বরে সেভিয়ার বিপক্ষে গোল করার পর এটিই তার প্রথম স্কোরিং। জয় পাওয়ায় এখন বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান ৪, আরও ছয়টি ম্যাচ বাকি রয়েছে মৌসুমে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনালের কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে ছিটকে যাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ছিল রিয়াল। এই জয় নতুন করে উজ্জীবিত করেছে দলকে।
এদিকে, লাল কার্ডের কারণে নিষিদ্ধ হওয়া কিলিয়ান এমবাপ্পে এই ম্যাচে মাঠে নামেননি। তবে তিনি খেলতে পারবেন আসন্ন কোপা দেল রে'র ফাইনালে, যেখানে রিয়ালের প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। শনিবার সেই মহারণেই নির্ধারিত হতে পারে মৌসুমের ভাগ্য। তার আগে বিলবাওয়ের বিপক্ষে এই দারুণ জয় নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে আনচেলত্তির শিষ্যদের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর’
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনা। এই ফুটবল কিংবদন্তির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর মৃত্যুর পর প্রথম আলোতে ছাপা হওয়া উৎপল শুভ্রর লেখাটি আবার প্রকাশ করা হলো।
‘বন্ধু’র সঙ্গে স্বর্গে ফুটবল খেলতে চেয়েছেন পেলে। ডিয়েগো ম্যারাডোনা কি সেই অপেক্ষায় থাকবেন? নাকি মৃত্যুর ওপারের রহস্যময় ওই জগতে এরই মধ্যে বল নিয়ে কারিকুরি শুরু করে দিয়েছেন?
কল্পচোখে যখনই দেখতে চাইছি, ম্যারাডোনা এখন কী করছেন, যে ছবিটি চোখে ভেসে উঠছে, তাতে হয় তাঁর আকাশমুখী মাথায় বল নাচছে, নয়তো বাঁ পায়ে। আহ্, জাদুকরি সেই বাঁ পা!
খেলা ছেড়েছেন সেই কবে! ছাড়ার পরও কত কিছুই না করেছেন! কথায়, কাজে, সম্ভবত তার চেয়েও বেশি অকাজে নিত্যদিনই তিনি খবর। ম্যারাডোনা কোথাও গেছেন আর কোনো ঝামেলা বাধাননি, কই, এমন তো মনেই পড়ছে না। তারপরও সবকিছু ছাপিয়ে সবার মনে অনপনেয় যে ছবিটা আঁকা, তা ফুটবল পায়ে ম্যারাডোনার।আশ্চর্যই বলতে হবে, যাঁরা তাঁকে খেলতে দেখেননি, এমনকি তাঁদের মনেও।
ফুটবল ইতিহাসে বিখ্যাত বাঁ পা বললে প্রথমেই মনে পড়বে ফেরেঙ্ক পুসকাসকে। ‘ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্স’ নামে অমর হয়ে থাকা পাঁচের দশকের সেই হাঙ্গেরি দলের প্রাণভোমরা। ‘দ্য গ্যালোপিং মেজর’-এর ৮৫ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৮৪ গোল এখনো বিস্ময় জাগায়, কিন্তু স্পর্শের দূরত্বে গিয়েও তাঁর বিশ্বকাপ হাতে নেওয়া হয়নি।
জাদুকরি বাঁ পায়ের আধুনিকতম সংস্করণ লিওনেল মেসিকেও পুড়িয়েছে একই দীর্ঘশ্বাস (পরের বিশ্বকাপেই অবশ্য দীর্ঘশ্বাসকে মাটি দিয়ে বিশ্বকাপ হাতে তুলেছেন মেসি)। ডিয়েগো ম্যারাডোনার বাঁ পা এখানেই একমেবাদ্বিতীয়ম হয়ে যায়। কোনো ফুটবলারকে যাচাইয়ের চূড়ান্ত যে কষ্টিপাথর বিশ্বকাপ, সেখানেই ম্যারাডোনা দেখা দিয়েছেন পরিপূর্ণ মহিমায়। এক অর্থে যেখানে তিনি পেলের চেয়েও এগিয়ে। সংখ্যায় অবশ্যই নয়, পেলের তিনটি বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড কেউ ছুঁতে পারেননি, কোনো দিন কেউ পারবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে দেওয়ায়ও কোনো ঝুঁকি দেখি না। কিন্তু প্রায় একক কৃতিত্বে ট্রফি জিতে একটা বিশ্বকাপকে নিজের নামাঙ্কিত করে রাখার কীর্তিতে পেলেও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী নন। এখানে ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনা হতে পারে শুধু ১৯৬২ বিশ্বকাপের গারিঞ্চার।
ম্যারাডোনা এখনো ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে। ছবিটি তাঁর মৃত্যুর পর নেপলসে তোলা