আওয়ামী লীগের আমলে ‘উন্নয়নের জোয়ার’ কিংবা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রভৃতি শব্দগুচ্ছের কবলে পড়েছিল দেশের অর্থনীতি। মন্ত্রীরা ও সংবাদমাধ্যমের মানুষেরা এগুলো বুঝে না বুঝেই প্রচার করতেন। সম্প্রতি আরেক ধরনের শব্দজোয়ার লক্ষ করা যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ‘ইউনূস ম্যাজিক’, ‘নতুন বন্দোবস্ত’ কিংবা ‘সংস্কার’ শব্দগুলো অর্থনীতির বলয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি।
ছোটবেলায় ম্যাজিক ভালোবাসতাম। দু-একটি ম্যাজিক দেখাতে গিয়ে ধরা খেয়ে সহপাঠীদের হাতে কিঞ্চিৎ প্রহৃত হয়েছি। কিন্তু এর প্রতি আকর্ষণ রয়েই গেছে। আজকাল অর্থনীতিতেও যে ম্যাজিক দেখানো যায়, তা জানতে পেরে বেশ শিহরিত হচ্ছি।
বিশ্বব্যাংক ১৯৯৩ সালে ‘দ্য ইস্ট এশিয়ান মিরাকল’ নামের এক প্রকাশনা করে সাড়া জাগায়। সেখানে সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকং ও দক্ষিণ কোরিয়া—এই চতুর্ব্যাঘ্রের দ্রুত উন্নতিকে ‘মিরাকল’ বা ‘বিস্ময়’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এরা ১৯৬৫ থেকে ১৯৯০ সাল অবধি দ্রুত প্রবৃদ্ধিবলে বিস্ময়কর উন্নতি সাধন করেছিল। কিন্তু কোনো জাদুবিদ্যার কথা সেখানে বলা হয়নি।
আরও পড়ুনঅর্থনীতির জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের বছর০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘের নীতিনির্ধারক ড.
সম্প্রতি বেশ কিছু টিভি প্রতিবেদন দেখেছি। একটিতে দেখলাম বলা হচ্ছে, এই সরকারপ্রধান নাকি অর্থনীতির ম্যাজিক শুরু করেছেন। তাতে অর্থনীতির সব কটি সূচক নাকি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিশ্বের ‘আশার বাতিঘর’ হবে বাংলাদেশ। কেউ বলেছেন, ম্যাজিক নাকি টর্নেডোর আকার ধারণ করেছে। ফলে কমে গেছে বিদেশমুখিতা, মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব।
এক প্রতিবেদনে সাবেক একজন ডাকসু নেতা মন্তব্য করেছেন, এই সরকারপ্রধান নাকি ম্যাজিকের মতো কাজ করছেন। একজন শুভানুধ্যায়ী একটি টিভি প্রতিবেদনের ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়েছেন, যেখানে গভর্নর বলেছেন যে বাংলাদেশের নাকি আইএমএফের ঋণের আর প্রয়োজন নেই। এটি কি ‘আঙুর ফল টক’, নাকি সত্যিই রিজার্ভ উপচে পড়ছে, তা বুঝলাম না। এতগুলো বিস্ময়কর সংবাদ শুনে নিজেকে প্রশ্ন করলাম, ‘বাংলাদেশের কোথাও কি স্বর্ণখনি পাওয়া গেল, যার খবর আমি রাখিনি?’
অবশেষে কোথাও স্বর্ণখনির সন্ধান না পেয়ে বুঝে নিলাম, এ হচ্ছে সরকারের তুষ্টিসাধক কিছু সংবাদমাধ্যমের পুরোনো অভ্যাস—নতুন বোতলে পুরোনো শুরার জোগান দেওয়ার কসরত। আওয়ামী আমলে এদের জোগান অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এখন ভিন্নরূপে এদের উত্থান কেন হচ্ছে। অর্থনীতিতে বায়বীয় কথাবার্তা বিপজ্জনক।
গণিত, পরিসংখ্যান ও সঠিক পর্যবেক্ষণ অর্থনীতিকে পাহারা দেয়। সেগুলো থেকে কোনো ম্যাজিক বা বিস্ময়কর কিছু পাওয়া তো দূরের কথা, স্বাভাবিক সাফল্যেরও সংবাদ পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সরকারের তথ্য বিভাগ সবকিছুকে ‘ব্রিলিয়ান্ট’ বললেও আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক এতে বিগলিত হতে পারছে না। বরং অনেক বিষয়ে উৎকণ্ঠিত হওয়ার বার্তা দিচ্ছে।
জাতীয় জীবনের এসব সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ না করে শুধু রিজার্ভ বাড়লেই কী করে ‘ম্যাজিক’ শুরু হয়ে যায়, তা বোঝা গেল না। রিজার্ভ একটি অনুষঙ্গ বা নির্দেশক। জাতির চূড়ান্ত প্রাপ্তির কোনো বিষয় নয়। জাতি সবশেষে ভাগ করে নেয় জিডিপি, মানবিক মূলধন, নিরাপত্তা ও ক্ষীয়মাণ দারিদ্র্যের মাধ্যমে জীবনযাত্রার উন্নতি। অন্তত সেখানে ম্যাজিকের কিছু দেখা যাচ্ছে না।আর্থিক খাতকে যদি একটি গাড়ির সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে চারটি চাকা হচ্ছে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে ব্যাংক, পুঁজিবাজার, বিনিয়োগ ও রাজস্ব–সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর।
পরিকল্পনা কমিশন হচ্ছে একান্নবর্তী পরিবারে থাকা বড় দাদুর মতো, যিনি সংসারের দর্শনগত দিকগুলো দেখেন এবং স্বপ্ন দেখতে শেখান। ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা ছিল খেলাপি ঋণ, যার বিন্দুমাত্র উন্নতি সাধিত হয়নি। ২০২৪ সালের জুনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ঋণের ১৩ শতাংশ। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এটি হয়েছে ২০ শতাংশের ওপর। গভর্নরকে ধন্যবাদ যে তিনি প্রকৃত খেলাপির চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। আওয়ামী আমলের লুটেরাবান্ধব হিসাববিদ অর্থমন্ত্রীর মতো ১০০ টাকার খেলাপিকে ৫ টাকা দেখানোর চেষ্টা করছেন না।
গত মার্চে আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডিস বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের দৃষ্টিভঙ্গি বা আউটলুক ‘সুস্থির’ থেকে কমিয়ে ‘ঋণাত্মক’ করে দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে মুডিস সম্পদের ঝুঁকি বৃদ্ধি ও অর্থনীতির অধোগতিশীল অবস্থাকে দায়ী করেছে। প্রায় ১০টি ব্যাংক মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে। এদের অনেককেই টাকা ছাপিয়ে সাময়িক তারল্য সহায়তা দেওয়া হলেও শেষতক এরা বাঁচবে কি না সন্দেহ।
পুঁজিবাজারের অবস্থাও তথৈবচ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুধু পতনের দিকেই যাচ্ছে। ২০২৪ সালের এপ্রিলে এই সূচকের মান ছিল ৫৭৬৪। বছরে প্রায় ১২ শতাংশ পতন নিশ্চিত করে এটি এখন ৫০৯৭-এ ঠেকেছে। আগেও অবস্থা ভালো ছিল না। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা সম্প্রতি এর কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। যে দেশের পুঁজিবাজারই ক্রমাবনতির শিকার, সে দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা টাকা ঢালতে আসবে না।
২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে মাত্র ৩ শতাংশ, যা আগের বছরের একই কালপর্বের প্রায় অর্ধেক। অর্থাৎ সরকারের তথ্যবিভাগ যতই ‘ব্রিলিয়ান্ট পারফরম্যান্স’ দাবি করুক না কেন, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরা ক্রমে স্তিমিত হয়ে পড়ছেন। নির্বাচনের আগে টাকা ঢালার নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুনবিনিয়োগ সম্মেলন থেকে কী পেলাম, কী পাব২১ এপ্রিল ২০২৫এদিকে বিদেশি বিনিয়োগ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৮২৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছর একই কালপর্বে ছিল এক বিলিয়ন ডলারের ওপর। ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহের যে সামান্য বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, সেটিও সঠিক বিনিয়োগ বা উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না, তা তদন্তের দাবি রাখছে। কারণ, বেকারত্ব বাড়ছে এবং মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির হারের সঙ্গে দৌড়ে কুলাতে পারছে না। তাই মানুষ সঞ্চয় ভাঙিয়ে খাচ্ছে।
২০২৪–২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় সঞ্চয়পত্রের নেট বিক্রয় হয়েছে ঋণাত্মক ৭ হাজার কোটি টাকা। অবশ্য সঞ্চয়পত্রের নেট বিক্রয় ঋণাত্মক হওয়ার বিষয়টি উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে আগের সরকারের আমল থেকেই শুরু হয়েছে। এ সরকার তা থামাতে পারছে না। ২০২৪–২৫ সময়ের জুলাই-ফেব্রুয়ারি কালপর্বে পুঁজিপণ্যের আমদানি কমে গেছে ২৫ শতাংশ। এতে অর্থনীতির উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা কমে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছে গত ৩৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। এখানে কোনো ‘ম্যাজিক’ কাজ করছে না।
পত্রিকাগুলোতে খুব একটা ভুয়া রিপোর্ট ছাপা হয় না। কিন্তু ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে আজকাল ফালতু রিপোর্ট ছাড়া হচ্ছে, যেখানে ন্যূনতম সম্পাদকীয় তদারকি ও পেশাদারত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। ফলে মানুষ অর্থনীতি বিষয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে। অথচ অর্থনীতির সূচকগুলো হচ্ছে রোগীর গায়ের তাপমাত্রা বা রক্তচাপের সংখ্যাগুলোর মতো। এখানে মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছ্বসিত বা বিষাদগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ খুব কম।
গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য কমায়, যা শান্তি আনয়নে সহায়ক—এ যুক্তিতেই নোবেল কমিটি ড. ইউনূসকে শান্তির ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করে। এখন সে রকম একজন গ্লোবাল সেলিব্রিটিকে রাষ্ট্রের প্রধান প্রশাসক হিসেবে পেলে দেশে দারিদ্র্য কমবে, অর্থনীতি আরও মজবুত হবে এবং সামাজিক শান্তি বাড়বে, এটিই প্রত্যাশিত।
কিন্তু বিশ্বব্যাংকের মতে, নতুন করে এ বছর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র হবে। জাতীয় দারিদ্র্যের হার বেড়ে হবে প্রায় ২৩ শতাংশ, যা এত দিনের ক্রমহ্রাসমান প্রবণতার এক বিপরীত স্রোত। সামাজিক শান্তির বিষয়টি আমাদের করিতকর্মা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাই ভালো বলতে পারবেন।
জাতীয় জীবনের এসব সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ না করে শুধু রিজার্ভ বাড়লেই কী করে ‘ম্যাজিক’ শুরু হয়ে যায়, তা বোঝা গেল না। রিজার্ভ একটি অনুষঙ্গ বা নির্দেশক। জাতির চূড়ান্ত প্রাপ্তির কোনো বিষয় নয়। জাতি সবশেষে ভাগ করে নেয় জিডিপি, মানবিক মূলধন, নিরাপত্তা ও ক্ষীয়মাণ দারিদ্র্যের মাধ্যমে জীবনযাত্রার উন্নতি। অন্তত সেখানে ম্যাজিকের কিছু দেখা যাচ্ছে না।
● ড. বিরূপাক্ষ পাল যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক অ্যাট কোর্টল্যান্ডে অর্থনীতির অধ্যাপক
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০২৪ স ল র সরক র র ম র কল বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
লাকী আক্তারের মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান সিপিবির
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষক সমিতির অন্যতম সংগঠক লাকী আক্তারের নামে শাহবাগ থানায় করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে সিপিবি। একই সঙ্গে নাট্যকার মামুনুর রশিদসহ অন্যান্য নিরপরাধ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
রোববার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে নানাভাবে অভ্যুত্থানকে অপব্যবহার করা হচ্ছে। একটি গোষ্ঠী বাংলাদেশের মানুষের এই গণতান্ত্রিক অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য নানা কৌশল ব্যবহার করছে। মৌলবাদী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের সঙ্গীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরের মধ্য দিয়ে হত্যাকাণ্ড অপরাধের গুরুত্ব, প্রকৃত খুনিদের আড়াল করার চেষ্টা ও মামলা বাণিজ্য করা হচ্ছে। এই অপশক্তি নানাভাবে সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, ঘটনাবলীর সঙ্গে জড়িত নয় এমন রাজনীতিকদেরও হয়রানি করার চেষ্টা করছে।
এতে আরও বলা হয়, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী একটি অংশ সিপিবি কর্মী লাকী আক্তারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার হুমকি ও মিথ্যা প্রচারণা করছে। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম, যে সময় লাকী আক্তার ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয়, সেই সময় তাকে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ এমন অনেককে আসামি করা হয়েছে, যা দেখে বোঝা যায় এ মামলা বিশেষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই- এ ধরনের কোনো কাজের সঙ্গে লাকী আক্তারের যুক্ত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। এমন মামলা লাকী আক্তার ও সিপিবির বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডগুলোকে গুরুত্বহীন ও প্রশ্নবিদ্ধ করারও একটি প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত। অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে এ মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় এ দায় তাদের নিতে হবে। শুধু লাকী আক্তার নন, আরও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ন্যূনতম যুক্ত থাকার সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও অনেকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়া ও বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নানাভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালিয়েছিল তাদের নানাভাবে জায়েজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, একাত্তরের নৃশংসতম গণহত্যাকারীদের বাংলাদেশে কোনো ঠাঁই হবে না। গণআদালত ও গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের চেতনা অব্যাহত রাখতে হবে। একইসঙ্গে ২০২৪ এর জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা দায়েরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।