দীর্ঘ বিরতির পর বড় পর্দায় ফিরছেন বলিউড সুপারস্টার আমির খান। তার পরবর্তী ছবি ‘সিতারে জামিন পার’। ২০০৭ সালের ব্লকবাস্টার ‘তারে জামিন পার’-এর সিকুয়েল এটি। গেল ৫ মে দুপুরে পোস্টার প্রকাশ করে জানানো হয়, ২০ জুন ভারতজুড়ে মুক্তি পাবে ‘সিতারে জামিন পার’। তার আগে ৮ মে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল এই ছবির প্রথম ঝলক। সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেলেন আমির।
ভারত-পাকস্তান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ঝলক মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছেন আমির।
অভিনেতার প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তে যা ঘটছে এবং দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা দেখে আমির এই ছবির ঝলক মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছেন।’
এই সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হচ্ছে আরুশ দত্ত, গোপী কৃষ্ণ বর্মা, সম্বিত দেশাই, বেদান্ত শর্মা, আয়ুষ ভানসালী, আশীষ পেন্ডসে, ঋষি শাহানি, ঋষভ জৈন, নমন মিশ্র এবং সিমরন মঙ্গেশকর-এর মতো নবাগতদের।
ছবিতে আমির খানের সঙ্গে প্রথমবার জুটিতে দেখা যাবে অভিনেত্রী জেনেলিয়া দেশমুখ-কে। পোস্টার দেখেই বোঝা গেছে, এই ছবির মাধ্যমে দর্শকদের জন্য একটি বিশেষ কিছু আনতে চলেছেন আমির।
এদিকে কেবল আমিরের সিনেমাই নয়, রাজকুমার রাও ও ওয়ামিকা গাব্বির নতুন সিনেমা ‘ভুল চুক মাফ’ নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্মাতারা। ছবিটি বড় পর্দায় মুক্তির কথা থাকলেও এখন এটি সরাসরি মুক্তি পাবে ওটিটিতে। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি শুরু
বাগেরহাটে আগের মতো চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ।
শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে বাগেরহাটে সংসদীয় আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটি করা–সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেটের বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং গাজীপুর-৬ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. সালাহ উদ্দিন সরকার আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন করেন। গত ১২ নভেম্বর আবেদন দুটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ১৬ নভেম্বর শুনানির জন্য ধার্য করেন। পাশাপাশি এ সময়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। এদিকে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় ৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশন ও গাজীপুর-৬ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ পৃথক লিভ টু আপিল করেন। গাজীপুর–৬ আসন থেকে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হাফিজুর রহমান এর আগে আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক লিভ টু আপিল ও আবেদনগুলো একসঙ্গে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আজ শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সঙ্গে ছিলেন কমিশনের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী। সরকার জাবেদ আহমেদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদল আর সালাহ উদ্দিন সরকারের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান শুনানি করেন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। হাফিজুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গড়ে তোলে এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাগেরহাট প্রেসক্লাব, বাগেরহাট জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতি, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, বাগেরহাট জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাগেরহাট-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. শেখ মাসুদ রানা রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে ১০ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনকারী পক্ষ জানায়, বাগেরহাটে আগে চারটি আসন ছিল, একটি কমিয়ে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো হয়েছিল। বাগেরহাট-৪ আসন কেটে গাজীপুর-৬ আসন করা হয়েছিল। ১৯৭২ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে অনুযায়ী বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা উপজেলা নিয়ে এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা উপজেলা নিয়ে।
হাইকোর্টের রায়ে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, সর্বশেষ ২০২২ সালের আদমশুমারির ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ১ জুলাই উল্লেখিত গেজেট অনুসারে আগের মতো সংসদীয় আসন নম্বর ৯৫ (বাগেরহাট-১), আসন নম্বর ৯৬ (বাগেরহাট-২), আসন নম্বর ৯৭ (বাগেরহাট-৩) এবং আসন নম্বর ৯৮ (বাগেরহাট-৪) পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
রায়ে বলা হয়, রিট আবেদনে সংযুক্ত গত ৪ সেপ্টেম্বরের গেজেট নোটিফিকেশনের (ইসির প্রজ্ঞাপন) সংসদীয় আসন নম্বর ৯৫ (বাগেরহাট-১), আসন নম্বর ৯৬ (বাগেরহাট-২), আসন নম্বর ৯৭ (বাগেরহাট-৩) এবং আসন নম্বর ১৯৮ (গাজীপুর-৬) গঠনসম্পর্কিত অংশটুকু অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ববর্হিভূত ঘোষণা করা হলো।