তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদ রূপে গড়ে তোলার বিকল্প নেই
Published: 10th, May 2025 GMT
তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদ রূপে গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের অতিরিক্ত পরিচালক (উপসচিব) মুখলেসুর রহমান।
তিনি বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর অনেকে সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারী। শারীরিকভাবে বৈপরীত্য ও প্রতিবন্ধকতা থাকলেও সুযোগ পেলে প্রতিভার বিকাশে কিন্তু তারাও এগিয়ে যেতে পারেন। সেই সুযোগ ও পরিবেশ তৈরি এবং সহযোগিতা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।
শনিবার দুপুরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ের উদ্যোগে মিরপুরের কার্যালয়ে ‘তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে কর্মমুখী করার লক্ষ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মুখলেসুর রহমান।
তিনি বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর যারা আছেন তারা অনেকে জানেনই না তাদের কি প্রতিভা আছে। দেশ-পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। বসে বসে শুধু খাবার সুযোগ আর নেই। নিজেকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। আমাদের শক্তি মানবসম্পদ। সেখানে এই জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, আমরা চেষ্টা করছি হিজড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য। জাতীয় পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবী ৪০টা সংগঠনের মধ্যে একটি হচ্ছে এই পাথওয়ে। প্রতিষ্ঠানটিকে আমরা আর্থিক অনুদান দিচ্ছি। তারা অনেক বেশি কাজ করছে। আমরাও চেষ্টা করছি পাথওয়ের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য।
পাথওয়ের চেয়ারম্যান রইজুর রহমান বলেন, পিছিয়ে পড়া হিসেবে নয়, স্বাবলম্বী করার লক্ষ্য নিয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত। কারণ এই জনগোষ্ঠীর অনেকেই ভাসমান জীবনযাপন করেন। তাদের শুধু বিশেষায়িত পেশার জন্য দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণই যথেষ্ট নয়, তাদের জন্য চাকরির সুবন্দোবস্ত করতে হবে। ড্রাইভিং শিখলে তাকে পেশা হিসেবে সুযোগ করে দিতে হবে। সেলাই শিখলে তার কাজের জন্য সুযোগ করে দেওয়া ও হিজড়াদের বানানো পোশাক পণ্যকে ব্র্যান্ডিং করার উদ্যোগ নিতে হবে।
পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক মো.
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চীন আজ পরাশক্তি হয়েছে কারণ তারা নাগরিকদের জনশক্তিতে রূপান্তর করেছে। আমরাও সেটা পারব যদি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য কার্যকর কিছু করতে পারি। ঢাকা মহানগরে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে ট্র্যাফিক পুলিশের সহযোগী হিসেবে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর দক্ষ ও শিক্ষিতদের সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ জানান মো. শাহিন।
তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠীর নেতা কনা হিজড়া বলেন, আমাদের সঙ্গে পদে পদে অমানবিক আচরণই শুধু নয়, মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করা হয়। হিজড়া বলে আমরা নিগৃহীত নির্যাতিত হচ্ছি প্রতিনিয়ত। এরপরও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা নানা কাজে পারদর্শী, প্রতিভাসম্পন্ন, দক্ষ, যোগ্য। অনেকে আছেন ড্রাইভিং, সেলাই মেশিন, আর্টিস্ট, মেকআপ আর্টিস্ট ও পার্লারের কাজে দক্ষ। এসব ক্ষেত্রে আমরা হিজড়াদের কাজে লাগাতে পারি। এজন্য আমরা সুযোগ চাই, পরিবেশ চাই।
অনুষ্ঠানে হিজড়া জনগোষ্ঠীর ১০ জনের মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। এসময় জানানো হয়, তাদের তৈরি করা পোশাকও বিক্রি করবে পাথওয়ে।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জসীম উদ্দীন, শহর সমাজসেবা অফিসার শহিদুজ্জামান, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের নির্বাহী পরিচালক মহিউদ্দিন আমিন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ত য় ল ঙ গ র জনগ ষ ঠ জনগ ষ ঠ র জনগ ষ ঠ ক প থওয় র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ভারত: রণধীর জয়সওয়াল
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, পারস্পরিক লাভজনক সংলাপের অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ভারত। তিনি বলেন, আমরা গঙ্গাসহ একে অপরের সঙ্গে ৫৪টি নদীর পানি ভাগাভাগি করি। এসব নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) রয়েছে। শুক্রবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।
ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ধ্বংস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কট্টরপন্থিরা সেখানে একটি মন্দির ভাঙার দাবি তুলেছিলেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। অন্তর্বর্তী সরকার মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে উল্টো অবৈধ জমি ব্যবহারের যুক্তিতে সেটি ভাঙার অনুমতি দিয়েছে। আমরা অত্যন্ত হতাশ যে, বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়, তাদের সম্পত্তি ও উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারেরই দায়িত্ব।
প্রতিবেশী অঞ্চলের ওপর নিবিড় নজর রাখছে ভারত
চীনের কুনমিং শহরে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের খবর প্রকাশের পর ভারত জানিয়েছে, তারা প্রতিবেশী অঞ্চলের ওপর ‘নিবিড় নজর রাখছে’। বৃহস্পতিবার ওই সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ওই বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ‘নিজের অবস্থানে’ দাঁড়িয়ে আছে। তবে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।