পুতিনের প্রতি ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান ইউরোপের নেতাদের
Published: 10th, May 2025 GMT
আগামী সোমবার থেকে ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানাতে একমত হয়েছেন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতারা। আজ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে ইউক্রেন।
দেশগুলোর নেতারা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে এ প্রস্তাব করা হয়।
২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তিন বছর পার হলেও ইউক্রেনে হামলা বন্ধের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি দেশটি। মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও কিয়েভের পক্ষ থেকে দেওয়া এ ধরনের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা। মস্কো আগেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, পশ্চিমা দেশগুলো যদি কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ না করে, তাহলে কোনো যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নেই।
ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলে। ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও এর মধ্যে রয়েছে। চলতি বছর বসন্তে ইউক্রেনে হামলা আরও জোরদার করে রাশিয়া।
আরও পড়ুনবিজয় দিবসে কুচকাওয়াজে পুতিনের পাশে সি, ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রসহ নানা অস্ত্রের মহড়া০৯ মে ২০২৫গত শুক্রবার কিয়েভে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সতর্ক করে বলেছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেনে একটি ‘বড় ধরনের বিমান হামলা’ হতে পারে।
এর মধ্যে গতকাল জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎস, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও পোলান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই সিবিগা এক্সে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছেন, পাঁচ নেতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন।
আন্দ্রেই সিবিগা আরও বলেন, ইউক্রেন ও সব মিত্রদেশ সোমবার থেকে শুরু করে অন্তত ৩০ দিনের জন্য স্থল, আকাশ, সমুদ্রে পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত।
আরও পড়ুনইউক্রেনে প্রতি বর্গকিলোমিটার দখল করার দাম দাঁড়াচ্ছে ২৭ রুশ সেনার প্রাণ০৬ মে ২০২৫ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যেকোনো সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির সময় রাশিয়া চাইবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করুক।
পেসকভ বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে অস্ত্রসহায়তা বন্ধ না করলে তাঁরা সুবিধা পাবেন না। ইউক্রেন পূর্ণমাত্রায় সেনা মোতায়েন অব্যাহত রাখবে এবং নতুন সেনাদের ফ্রন্টলাইনে পাঠাতে থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন এ সময়ে নতুন সেনাদের প্রশিক্ষণ দিতে ও সেনাদের বিশ্রাম দেওয়ার কাজে ব্যবহার করবে। তাহলে আমরা কেন ইউক্রেনকে এমন একটি সুবিধা দেব?’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
আদানিকে বকেয়ার ৩ কোটি ডলার পরিশোধ, আরও ৭ কোটি দেবে এ মাসেই
ভারতীয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রের বকেয়া শোধে উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এর অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার তিন কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এ মাসে আদানিকে মোট ১০ কোটি মার্কিন ডলার বা ১ হাজার ২২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হতে পারে। পিডিবির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলো জানায়, গতকাল সোমবার বিকেলে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আদানিকে তিন কোটি ডলার (১২২ কোটি ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা) বিল শোধের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। আজ আদানির ব্যাংক হিসাবে সেই টাকা স্থানান্তর করা হয়। এর আগে বকেয়া শোধে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে পিডিবিকে চিঠি দিয়েছিল আদানি। তা না হলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে বলে হুমকি দেয় তারা।
পিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আদানির বকেয়া বিলের মধ্যে তিন কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর নতুন করে আদানির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে নির্মিত আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে পিডিবি। চুক্তি বলছে, এই কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। পিডিবির তথ্য বলছে, চাহিদা কম থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ে এখন ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
আদানির জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আজ প্রথম আলোয় পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিলম্ব সুদসহ তাদের পাওনা ৩৫ কোটি ডলার, যা নিয়ে পিডিবির সঙ্গে বিরোধ নেই। বকেয়া বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ধরে রাখতে তারা নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ছে।
তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল নিয়ে আদানির সঙ্গে পিডিবির বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি। আদানি কয়লার বাড়তি দাম ধরে বিল করছে। পিডিবি বাজারদরে বিল পরিশোধ করছে। বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পেশাদার মধ্যস্থতাকারী নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল আদানি। যদিও তাতে রাজি হয়নি পিডিবি। দেশের উচ্চ আদালতে আদানির চুক্তির বিরুদ্ধে একটি রিট মামলা চলমান। আদালতের আদেশের পর করণীয় নির্ধারণ করবে পিডিবি।
গত ২৭ অক্টোবর পাঠানো আদানির চিঠিতে দাবি করা হয়, ৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাওনা তাদের। এর মধ্যে ২৬ কোটি ২০ লাখ ডলার পাওনা নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। বিরোধের বাইরে থাকা এ পাওনা পরিশোধে পিডিবি ব্যর্থ হলে চুক্তি অনুসারে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থগিত করার অধিকার আছে আদানির। প্রসঙ্গত, বকেয়া বেড়ে যাওয়ায় গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি। অবশ্য গত এপ্রিলে বকেয়ার প্রায় পুরোটা শোধ করে দিয়েছিল পিডিবি। এরপর গত কয়েক মাসে আবার বকেয়া জমেছে আদানির।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০২৩ সাল থেকে আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনছে সরকার। তখন থেকে আদানির বিল বকেয়া বাড়ছিল। তা বাড়তে বাড়তে ৭০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিল শোধে কয়েক দফা তাগাদা দেয় আদানি গ্রুপ। পিডিবির দায়িত্বশীল দুই কর্মকর্তা গত মাসে জানিয়েছিলেন, গত জুনে প্রায় ৩৭ কোটি ডলার বকেয়া শোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনকয়লার বাড়তি দাম ধরেই আদানির বকেয়া হিসাব, পরিশোধে শীর্ষ পর্যায়ে চিঠি১৯ অক্টোবর ২০২৫