পিএসএলে মাঠে নামার আগে যা বললেন সাকিব
Published: 18th, May 2025 GMT
প্রায় ছয় মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরছেন সাকিব আল হাসান। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ শনিবার রাতে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্সের জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন বাংলাদেশের তারকা এই অলরাউন্ডার। শেষবার সাকিব খেলেছিলেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে, আবুধাবিতে টি–টেন লিগে। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে আবারও ফিরছেন প্রিয় মঞ্চে।
যুক্তরাষ্ট্রে পারিবারিক সময় কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সাকিব। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুশীলন শুরু করেন তিনি। পিএসএলে খেলোয়াড় সংকটে পড়া লাহোর কালান্দার্স তাকে দলে টেনে নেয়। শুরুতে ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক উত্তেজনায় আসরটি কিছুদিন বন্ধ থাকলেও পুনরায় শুরু হওয়া লিগে সাকিবের মাঠে নামা প্রায় নিশ্চিত।
লাহোর কালান্দার্সের এক ভিডিও বার্তায় সাকিব বলেন, ‘আমি যখনই পাকিস্তানে এসেছি, সবসময় দারুণ উপভোগ করেছি। পাকিস্তান আমার কাছে ক্রিকেট খেলার জন্য একটি দারুণ জায়গা। আবার এখানে ফিরে খুব ভালো লাগছে।’
শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় রাওয়ালপিন্ডিতে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে মাঠে নামবে লাহোর। কঠিন সময় পেরিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে ফিরছেন সাকিব। দেশে ফিরে অবসরের পরিকল্পনা থাকলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মামলার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ তিনি মাঠে নেমেছিলেন ২০২৪ সালের অক্টোবরে, ভারতের কানপুরে একটি টেস্টে। এরপর ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে গিয়ে তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। তিন দফা পরীক্ষার পর ছাড়পত্র পেলেও এতদিন পর্যন্ত মাঠে ফেরা হয়নি।
লাহোর কালান্দার্সের অনুশীলন শেষে সাকিব বলেন, ‘আমি কয়েক ওভার বল করেছি ছন্দ ফিরে পেতে। এবং আমি যা খুঁজছিলাম, সেটা পেয়েছি। দীর্ঘদিন পর ম্যাচ খেলছি, তবে আমি প্রস্তুত হয়েই নামছি। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডি সবকিছুতেই প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন মনে হচ্ছে, আমি পুরোপুরি তৈরি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন প এসএল
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।