দিনভর কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদ্যাপন
Published: 18th, May 2025 GMT
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে আজ রোববার জাতীয় জাদুঘর দিবস উদ্যাপিত হলো। জাতীয় জাদুঘর এই অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে জাদুঘরের ভবিষ্যৎ’।
বিশ্বব্যাপী জাদুঘরের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামস (আইকম) প্রতিবছর ১৮ মে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদ্যাপন করে থাকে।
সকালে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে সেমিনার হয়। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদ সভাপতি স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী। আলোচক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মোহম্মদ কামরুল আহছান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো.
সেমিনারে প্রবন্ধকার বলেন, জাতীয় জাদুঘরকে আধুনিকায়ন করা খুবই প্রয়োজন। এ জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তরুণ প্রজন্ম এবং বিদেশি দর্শনার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি ট্যুর, ইন্টারঅ্যাকটিভ স্ক্রিন এবং মোবাইল অ্যাপের মতো ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার। ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি ট্যুরের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকা বা বিদেশে বসবাসকারী বা আগ্রহী দর্শনার্থী যাঁরা সরাসরি জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারেন না, তাঁদের কাছে জাদুঘর পৌঁছাতে সক্ষম হবে।
পরে নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে ‘ফেয়ার ওয়াটার’–শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সেমিনারআন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে হেরিটেজ ফাউন্ডেশন ও জাহানারা ফাউন্ডেশন যৌথভাবে গত শুক্রবার পুরান ঢাকার বংশালে জাহানারা ফাউন্ডেশন জাদুঘরে এক সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে ‘জাদুঘর স্থানের রূপান্তরমূলকতা: শিল্পকর্ম সংরক্ষণ স্থানে একটি পরিবর্তনশীল সম্প্রদায় হিসেবে ঐতিহ্যের বাসিন্দাদের কণ্ঠস্বরকে স্থান দেওয়ার একটি প্রস্তাব’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মাসুদ এমরান। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব আলম আরা বেগম। স্বাগত বক্তব্য দেন হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জাহানারা ফাউন্ডেশন জাদুঘরের সভাপতি জিনাত পারভিন। ধন্যবাদ প্রদান করেন জাহানারা ফাউন্ডেশন জাদুঘরের সেক্রেটারি আনজালুর রহমান।
সেমিনারে আলোচকেরা পরিবর্তনশীল সমাজে জাদুঘরকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করে সমৃদ্ধ জাতি ও দেশ গড়ার প্রত্যয় জানান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ত য় জ দ ঘর ন জ দ ঘর র প রবন ধ ন কর ন কর ন জ
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি