বাউফলের তেঁতুলিয়া ও কারখানা নদীর ভাঙন থেকে ১২টি গ্রামের ঘরবাড়ি ও সড়ক বাঁচাতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। রোববার উপজেলার নিমদী লঞ্চঘাটে নদীর পারে এ মানববন্ধন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে শতাধিক লোক অংশ নেন।
নিমদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার বলেন, তেঁতুলিয়া নদীর খুব কাছাকাছি বিদ্যালয়টির অবস্থান। মাঝেমধ্যেই আমরা জোয়ারে ভাসি। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই বই, খাতা, ব্যাগ ভিজিয়ে বাড়িতে যায়। বর্ষায় দুঃখের সীমা থাকেনা। মাঠে জোয়ারের পানি ওঠায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। ভয়ে অভিভাবকরা শিশুদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করছেন।
পশ্চিম কাছিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সুনিল চন্দ্র জানান, বিদ্যালয় থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ছিল কারখানা নদী। ভাঙতে ভাঙতে ১০০ ফুটের কাছাকাছি চলে এসেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হয়ে যাবে। কয়েক বছরে দেড় হাজার ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়েছে।
কাছিপাড়া আব্দুর রশিদ মিয়া ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম কবির হোসেন বলেন, হাজিপুর গ্রাম এখন নেই বললেই চলে। গোপালিয়া, বাহেরচর, পশ্চিম কাছিপাড়া প্রতিদিন ভাঙছে। ১৫ কিলোমিটারজুড়ে নতুন করে ভাঙছে। মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। অনেকেই স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে নাজিরপুরের নিমদী, বড়ডালিমা ভাঙনরোধে মানববন্ধন করেছেন নাজিরপুর ইউনিয়নবাসী।
পাউবোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে শতভাগ আবাসনসহ রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত, রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
রবিবার (১৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর কেটে গেলেও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যাবস্থা। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারী রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
আরো পড়ুন:
সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
সাম্য হত্যা: শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ৯ দফার অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি হলো ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন। তার সঙ্গে আরেকটি প্রতিশ্রুতি ছিল, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির মূল উৎপাটন করা। আমরা মনে করি, কার্যকর রাকসু গঠনের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো সম্ভব। কিন্তু যারা এ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চান, তারাই এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নিয়ে একটা রোডম্যাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা এখনো তা বাস্তবায়ন হতে দেখিনি। তিনি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন, আমরা মনে করছি সেটা একটা হাটুভাঙ্গা নির্বাচন কমিশন। কারণ তারা কোনো খসড়া ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে পারেনি। অনতিবিলম্বে খসড়া ভোটার তালিকা দিতে হবে। যতদিন না দেওয়া হবে, ততদিন এ আন্দোলন চলবে।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে হয়, আমরা যে রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম, তার কোনো কিছু করা হয়নি। আমাদের সুষ্ঠু ক্যাম্পাসের জন্য রাকসু নির্বাচন ও আবাসিকতা নিশ্চিত করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু তার কোন কিছু করা হয়নি। আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদের সময় যেসব শিক্ষক-কর্মচারী ছিল, তারা সেখানেই বহাল থেকে আবার ছাত্রলীগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জন্য শান্তিপুর্ণ ক্যাম্পাস পরিচালনা ও পুর্ন আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, “রাকসু আমাদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ৯ দফার অন্যতম একটি দাবি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের যে তৎপরতা প্রথমদিকে লক্ষ্য করেছি, নির্বাচন কমিটি গঠন করার পর থেকে তা ততটাই কমে গেছে। গত মাসে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করা কথা থাকলেও তারা একটি সভাও করতে পারেনি। এর চেয়ে অথর্ব কমিটি আর কী হতে পারে বলে মনে হয়?”
তিনি আরো বলেন, “কতদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন দিতে পারবে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি রোডম্যাপ দিতে হবে। যতদিন শতভাগ আবাসন শিক্ষার্থীদের না দিতে পারবে, ততদিন প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী