শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে প্রায়ই গুজব রটছে। এর প্রভাবে কখনও শেয়ারদর বাড়ছে, কখনও কমছে। তবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেছেন, রাশেদ মাকসুদ বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে আছেন এবং থাকবেন।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘রাশেদ মাকসুদ ভালো কর্মকর্তা। তিনি কাজ করছেন। যারা তাঁর পদত্যাগ চান, তারা আসলে কাকে চান? আগের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতের মতো কাউকে?’
এদিকে গতকাল সকালে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় নিয়েছিলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। রোববার রাতে রটে যায়, তিনি মূলত পদত্যাগপত্র জমা দিতে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন।
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁর পদত্যাগ নিয়ে ছড়িয়ে পড়া তথ্যকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, ‘সারাদিন শুধু গুজব ছড়ায় আমি পদত্যাগ করছি। কোথা থেকে এইসব গুজব বের হয়? আমি এসেছি প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি নির্দেশনা নিয়ে আলোচনায়, আর আপনারা বানিয়ে দিলেন পদত্যাগের গল্প। এর প্রভাব কি বাজারে পড়ে না? এভাবে যদি প্রতিদিন গুজব ছড়ায়, তাহলে কাজ করবে কে?’
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আসন্ন বাজেটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কোনো সুখবর আছে কিনা–এমন প্রশ্নে
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রস্তাবনা দিয়েছি। এখন যারা বাজেট দেবেন, তারাই বলতে পারবেন কী থাকবে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারবাজারে দরপতনের প্রতিবাদে বিনিয়োগকারীদের কফিন মিছিল
শেয়ারবাজারের টানা দরপতনের প্রতিবাদে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের অপসারণের দাবি করেছেন শেয়ারবাজারের বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা। সে জন্য তাঁরা ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা কফিন মিছিল ও গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন।
রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান ফটকের সামনে আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে এ বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীরা শেয়ারবাজারের পতনের জন্য বিএসইসির ব্যর্থতাকে দায়ী করে কমিশনের অপসারণের দাবিতে নানা স্লোগান দেন। প্রায় ৩০ মিনিট বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ চলে। এ সময় একটি কফিন এনে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিলও বের করেন। মিছিলটি মতিঝিল থেকে শুরু হয়ে ইত্তেফাক মোড় ঘুরে মতিঝিলের ডিএসই ভবনের সামনে শেষ হয়। এ সময় ডিএসই ভবনের সামনে রাস্তায় বসে অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে ডিএসই ভবনের সামনের রাস্তায় ২০ মিনিটের জন্য যান চলাচল বন্ধ ছিল।
মিছিল শেষে বিকেল পৌনে চারটায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নামাঙ্কিত কফিন নিয়ে প্রতীকী গায়েবানা জানাজা আদায় করেন বিনিয়োগকারীরা। বিক্ষোভকালে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘পুঁজিবাজার আজ বন্দী হয়েছে এক নব্য স্বৈরাচারের আয়নাঘরে।’ এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, যদি এই সরকার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।
ইকবাল হোসেন আরও বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএসইসি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা না হলে দাবি আদায়ে ৩৩ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে উপস্থিত হবেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিএসইসি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।