চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি কারখানায় চাঁদা দাবি ও কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগে এক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম শওকত আকবর ওরফে সোহাগ। গতকাল সোমবার রাতে মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

শওকত আকবর মিরসরাই উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বাড়িয়াখালী গ্রামের মৃত মফিজুর রহমানের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

জোরারগঞ্জ থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল ৫টায় শওকত আকবরের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেলে করে ১০-১২ জন লোক মিরসরাইয়ের অর্থনৈতিক অঞ্চলের ইছাখালী এলাকায় নির্মাণাধীন বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভেতরে যান। ওই কারখানার জেনারেল ম্যানেজার হাসিবুল হাসানের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন শওকত। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে শওকত আকবরের সঙ্গে কারখানার মহাব্যবস্থাপক হাসিবুল হাসান ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের মারধর করে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান তাঁরা। আজ সকালে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মো.

কামরুল হোসাইন এ ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ ও ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মো. কামরুল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলার এজাহারে উল্লিখিত লোকজন সোমবার বিকেলে আমাদের কারখানায় এসে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না পেয়ে তাঁরা আমাদের কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় মামলা করেছি আমি। পুরো বিষয়টিতে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই এবং কারখানা এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা চাই।’

কারখানায় চাঁদা দাবি বা মামলার বিষয়ে জানা নেই বলে জানান উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম। তবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, শওকত আকবর বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা এলাকায় অন্য একটি কাজে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তার এক পর্যায়ে ওই কারখানা কর্মকর্তারা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করে কটুকথা বলেন। এতে ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। সেখানে কারও কাছে চাঁদা চাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। কোনো কারণে শওকতকে ফাঁসানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মিরসরাইয়ের ইছাখালী ইউনিয়নে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি কারখানায় চাঁদা দাবি ও কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগে শওকত আকবর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইন ড স ট র জ গ র প ত র কর কর মকর ত ম রসর ই ম রধর য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর

গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার বিমা দাবি নিষ্পত্তি করে ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ। তাদের অভিযোগ, বিমা কোম্পানিগুলো নানা ধরনের পদ্ধতিগত জটিলতা ও পলিসির শর্তের অপব্যাখ্যা করে বিমা দাবি পরিশোধে বিলম্ব করছে। অনেক ক্ষেত্রে দাঙ্গা, হাঙ্গামা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা–সংক্রান্ত ক্ষতির অজুহাতে বিমা দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, যা বিমাশিল্পের মূলনীতির পরিপন্থী।

আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে দেওয়া এক চিঠিতে বিমা দাবি পরিশোধের অনুরোধ জানান বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আমাদের অনেক সদস্যের কারখানা, গুদাম ও অন্যান্য স্থাপনা ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। আকস্মিক এই সহিংসতায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।’

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, সব ধরনের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি মোকাবিলায় প্রায় প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানই যথাযথ প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অগ্নিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির বিপরীতে বিমা পলিসি নিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, ঘটনার পর বছর পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ বিমা দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

চিঠিতে বিটিএমএ সভাপতি জানান, গত ৩ মার্চ সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার উত্থাপিত বিমা দাবি নিয়ে সভা হয়। এতে বিমা দাবি নিয়ে বিভিন্ন বিমাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির বিবরণ ও ব্যাখ্যা দেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনাগুলো গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হওয়ায় তা স্ট্যান্ডার্ড ফায়ার পলিসি (এসএফপি) বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অল রিস্ক (আইএআর) পলিসির আওতায় কোনো বিমা দাবি পরিশোধযোগ্য হবে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার মালিকেরা চরম হতাশায় ভুগছেন।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে সব নন-লাইফ বিমা কোম্পানিকে সুস্পষ্ট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গত বছরের জুলাই-আগস্টের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিমা দাবি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, বিমা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তির বিধানটির কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর
  • পদ স্থগিত নেতার পক্ষে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বিবৃতি, দ্রুত মুক্তি দাবি