বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা মুকুল দেব মারা গেছেন। শুক্রবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতা মুকুল দেব। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তিনি একমাত্র কন্যা সিয়া দেবসহ ভাই-বোন রেখে গেছেন। মুকুলের ভাই অভিনেতা রাহুল দেব জানিয়েছেন, মুকুলের শেষকৃত্য আজ বিকেল ৫টায় নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।

মুকুলের মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ প্রকাশ না করলেও, জানা গেছে, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল।ইনস্টাগ্রামে এক স্টোরির মাধ্যমে রাহুল দেব লেখেন, ‘আমাদের ভাই মুকুল দেব গতরাতে নয়াদিল্লিতে পরলোকগমন করেছেন। তাঁর একমাত্র কন্যা সিয়া দেব তাকে রেখে গেছেন। আমরা, ভাইবোন রেশমি কৌশল, রাহুল দেব এবং ভাতিজা সিদ্ধান্ত দেব তাকে খুব মিস করব। আজ বিকেল ৫টায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার অনুরোধ করছি।’

মুকুলের সঙ্গে ‘সন অব সারদার’ ছবিতে কাজ করেছিলেন অভিনেতা বিন্দু দারা সিং। তিনি বলেন, ‘মা-বাবার মৃত্যুর পর থেকেই মুকুল নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। কারও সঙ্গে দেখা করতেন না, ঘর থেকেও বের হতেন না। শেষ কয়েকদিনে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। আমরা সবাই তাঁকে ভীষণ মিস করব।’

নয়াদিল্লিতে এক পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম মুকুল দেবের। তার বাবা হরি দেব সেই সময়ের সহকারী পুলিশ কমিশনার ছিলেন। বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে ছোট ছেলের প্রাথমিক পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন তিনিই। হরি দেব মুকুলকে আফগান সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি পশতু ও ফারসি ভাষায় দক্ষ ছিলেন সদ্য প্রয়াত অভিনেতা।

প্রথম ছবি ‘দস্তক’-এ পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করেন মুকুল দেব। এই ছবি দিয়ে বলিউডে পা রাখেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতা সেনও। সালমান খানের সঙ্গে ‘জয় হো’ ছবিতে মুকুলের অভিনয় নজর কেড়েছিল।

এ ছাড়া হিন্দি ‘সন অব সরদার’, ‘ইয়ামলা পাগলা দিওয়ানা’, ‘আর রাজকুমার’ ছাড়া বাংলা, মালয়ালি, পাঞ্জাবি ও মারাঠি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। টালিউড নায়ক জিৎ এর ‘আওয়ারা’, ‘বচ্চন’, ‘সুলতান: দ্য স্যাভিয়ার’ সিনেমায় অভিনয় করেন মুকুল।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

অবশেষে স্থগিত আলোচিত সেই কবরস্থানের নির্বাচন!

দেশজুড়ে আলোচিত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পাবনার চাটমোহর উপজেলার কবরস্থানের সভাপতি পদের নির্বাচন স্থগিত করেছেন স্থানীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

বুধবার (২১ মে) বিকেলে কবরস্থান নির্বাচন কমিশন প্রধান ও কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন মাস্টার এ তথ্য জানিয়েছেন ।

তিনি জানান, উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন,   ‘‘আগামী ২৪ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশংকায় আমরা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছি। দুই একদিনের মধ্যে গ্রামের প্রধানবর্গ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বসে সমঝোতার মাধ্যমে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি উপহার দিবো। ’’ 

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম জানান,   ‘‘নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সেখানে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে বলে জেনেছি। এই নির্বাচন ঘিরে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে তারা নিজেরা যদি সবার সম্মতিতে একটা গ্রহণযোগ্য কমিটি দিতে পারে তাহলে সেটাই ভালো হয়। তবে কেউ যদি এ নিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রযোজনীয় আইনগত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো। ’’ 

সভাপতি পদের প্রার্থী উপজেলা যুবদলের এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‌‌  ‘‘নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এখন সবাই যদি বসে আলোচনার মাধ্যমে সভাপতি বানায় করুক তারা। আমি আর এর মধ্যে নাই। যাকে সভাপতি বানায় বানাক আমার কোনো আপত্তি নাই। আমি আর কমিটির মধ্যে থাকবো না। অনেক কথা শুনতে হয়েছে। অনেক হুমকিও আসছে। সেগুলো আর বলতে চাইনা। ’’ 

অপর প্রার্থী মূলগ্রাম ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

এর আগে, চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার, মহরমখালী ও জগতলা (আংশিক) তিন গ্রামের সমাজ নিয়ে গঠিত ‘জান্নাতুল বাকি’ কবরস্থান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে সভাপতিসহ কমিটি গঠনের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু সভাপতি কে হবেন? এমন বিষয় নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুইটি পক্ষের মধ্যে তৈরি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। এলাকাবাসীরা দাবি জানান, ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন করা হোক। পরে থানার ওসির পরামর্শে সভাপতি পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তারপর গঠন করা হয় সাত সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। ঘোষণা করা হয় তফসিল। দুইজন প্রার্থী জামানত দিয়ে মনোনয়ন ফরম তুলে জমা দেন। যাচাই বাছাই শেষে তাদের দুজনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। দেওয়া হয় প্রতীক বরাদ্দ। আব্দুল কুদ্দুস ছাতা ও শরিফুল ইসলাম ছাতা প্রতীক পান। দুই প্রার্থীর পোস্টারে ছেয়ে যায় এলাকা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থণা করেন প্রার্থীরা। তৈরি হয় নির্বাচনী আমেজ। এলাকাবাসীর মাঝেও দেখা দেয় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা।

এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর চাটমোহর উপজেলাসহ দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচনের খবর। তবে এ নিয়ে এলাকায় বিএনপির দুই দ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাও বিরাজ করতে থাকে। মানুষের মাঝে সংশয় এবং উৎকণ্ঠা দেখা দিলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

ঢাকা/শাহীন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন জুলাইযোদ্ধা : উমামা ফাতেমা
  • অবশেষে স্থগিত আলোচিত সেই কবরস্থানের নির্বাচন!
  • কবরস্থান কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অবনতির আশঙ্কায়’ স্থগিত