সাগরে দুই নৌকাডুবিতে চার শতাধিক রোহিঙ্গার মৃত্যুর আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ
Published: 24th, May 2025 GMT
সাগরে ৯ ও ১০ মে দুই নৌকাডুবির ঘটনায় মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের অন্তত ৪২৭ জন মারা যেতে পারেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ আশঙ্কা সঠিক হলে, তা হবে এই নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য আরেকটি বড় প্রাণঘাতীর ঘটনা।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয় জানায়, যদি এ তথ্য নিশ্চিত হয়, তবে চলতি বছর রোহিঙ্গা শরণার্থী-সংশ্লিষ্ট সবচেয়ে প্রাণঘাতী সাগর দুর্ঘটনা হবে এটি।
‘চলতি মাসের শুরুতে মিয়ানমার উপকূলে দুটি নৌকাডুবির খবর নিয়ে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’, বলা হয় বিবৃতিতে। সংস্থাটি আরও জানায়, এ নৌকাডুবির প্রকৃত পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তারা এখনো কাজ করছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, নৌকাগুলোয় থাকা রোহিঙ্গারা হয় বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থীশিবির ছেড়ে যাচ্ছিলেন কিংবা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে পালাচ্ছিলেন।সংস্থার প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ৯ মে ২৬৭ জন যাত্রী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। এর মধ্যে ৬৬ জন বেঁচে যান। ১০ মে ২৪৭ রোহিঙ্গা বহনকারী আরেকটি নৌকা উল্টে যায়। সেখানে মাত্র ২১ জন জীবিত উদ্ধার হন।
আরও পড়ুনরোহিঙ্গাদের সাগরে ফেলার অভিযোগ জাতিসংঘের র্যাপোর্টিয়ারের, আইনজীবীর আবেদন শুনলেন না ভারতের আদালত১৭ মে ২০২৫বিবৃতিতে বলা হয়, নৌকাগুলোয় থাকা রোহিঙ্গারা হয় বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থীশিবির ছেড়ে যাচ্ছিলেন কিংবা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য থেকে পালাচ্ছিলেন।
এ দুই মর্মান্তিক খবর ‘রোহিঙ্গাদের চরম দুর্দশার একটি স্মারক এবং বাংলাদেশে শরণার্থীরা যে কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তার প্রতিফলন; যেহেতু মানবিক সহায়তা ক্রমেই কমে আসছে।’—ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি, ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনারমিয়ানমারে দশকের পর দশক নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের হাজারো মানুষ প্রতিবছর প্রাণ বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে দেশটি থেকে নাজুক নৌকায় সাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুনরোহিঙ্গারা কি এবার রাখাইনে ফিরতে পারবেন০৭ এপ্রিল ২০২৫সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া একটি পোস্টে ইউএনএইচসিআরের হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, এ দুই মর্মান্তিক খবর ‘রোহিঙ্গাদের চরম দুর্দশার একটি স্মারক এবং বাংলাদেশে শরণার্থীরা যে কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছেন, তার প্রতিফলন; যেহেতু মানবিক সহায়তা ক্রমেই কমে আসছে।’
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের পর রাখাইন রাজ্য থেকে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুনরোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হলে বিকল্প কী, সে পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশের২৩ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বরগুনায় আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক এমপি শম্ভুকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ, জামিন নামঞ্জুর
বরগুনায় বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পরে এজলাস থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে আদালত প্রাঙ্গণে শম্ভুকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে সদর থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে বরগুনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় শম্ভুর পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। পরে আদালতের বিচারক মনিরুজ্জামান জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে বরগুনা কারাগারে আনা হয়। আজ তাঁকে আদালতে হাজির করার খবর পেয়ে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় ‘শম্ভুর আস্তানা, বরগুনাতে হবে না’ বলে স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ শম্ভুর উদ্দেশে ডিম ছুড়ে মারেন। সেই ডিম শম্ভুকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানের ওপর পড়ে।
বরগুনা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নুরুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় শম্ভুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ আদালতে হাজির করার পর আসামিপক্ষে তাঁর জামিনের আবেদন করা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শম্ভুর নানা অপকর্মের কারণে আদালতের বাইরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ সাধারণ মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং তাঁর গাড়িতে ডিম ছুড়ে মেরেছেন। তবে ডিম তাঁর গায়ে পড়েনি।
জামিন শুনানির পর প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নেওয়ার সময় শম্ভুর দিকে ডিম ছুড়ে মারেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে