যশোরের অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের আগুনে পোড়া বাড়িগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার রওনক জাহান।

রবিবার (২৫ মে) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে যান তারা।

গত ২২ মে ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর ওই গ্রামের অন্তত ২০টি বাড়ি লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এতে নিঃস্ব হয়ে যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।

আরো পড়ুন:

মাদকসেবন নিয়ে ঝগড়ায় শুভকে খুন করে বন্ধুরা : পুলিশ

পালিত ছেলের বিরুদ্ধে মাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

পুলিশ সুপার রওনক জাহানকে কাছে পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির নারীরা কান্না ভেঙে পড়েন। তারা তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। পুলিশ সুপার তাদের পাশে থাকার এবং সব ধরনের সহায়তা করার আশ্বাস দেন।

পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা খুবই খারাপ। তবে ঘটনা শোনার পরপরই আমরা সব দপ্তরগুলো অত্যন্ত সচেতন আছি। তাৎক্ষণিক আমরা তাদের খাবার, পোশাক, ঘরের টিনসহ প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করেছি।”

ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এখানে পুনর্বাসনের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা অবশ্যই করা হবে। ঘটনার সময় তো আমরা অপ্রস্তুত ছিলাম, প্রশাসন এখন সর্বদা প্রস্তুত আপনাদের নিরাপত্তা দিতে। আপনাদের নিঃভয়ে ঘরে ফিরুন।”

এ সময় যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন, সাধারণ সম্পাদক তপন বিশ্বাসসহ পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা, উপজেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রিটন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন চাষের জমি

দেখলে মনে হবে চাষ দেওয়া কোনো জমি। এবড়োখেবড়ো কাদামাটির স্তূপ, তাতে বড় বড় গাড়ির চাকার দাগ। কোথাও গভীর গর্ত হয়ে জমে আছে পানি। যশোরের অভয়নগরে যশোর-খুলনা মহাসড়কের চিত্র এখন এমনই। এতে নওয়াপাড়া নদীবন্দরের কার্যক্রমেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। 
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর অভয়নগরের প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত যশোর-খুলনা মহাসড়ক চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটার অংশ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গর্তে জমা পানি, কাদামাটির কারণে রাস্তাটি চেনার উপায় নেই। এর মধ্য দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে থেমে থেমে চলছে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক। খানাখন্দে চাকা পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে পাশের খাদে পড়ে যায়।
নওয়াপাড়া নদীবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন পণ্য এ সড়ক দিয়ে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হয়। দেশের চাহিদার ৬০ ভাগ আমদানীকৃত সার মোংলা থেকে নদীপথে নওয়াপাড়া নদীবন্দরে এনে খালাস করা হয়। সেই সার ট্রাকের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বেহাল সড়কের কারণে নদীবন্দরে যেতে অনীহা দেখাচ্ছেন ট্রাকচালকরা। ফলে আমনের ভরা মৌসুমে সঠিক সময়ে সার কৃষকের কাছে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 
নওয়াপাড়া সার সিমেন্ট খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা নুরে আলম পাটোয়ারী বলেন, সড়কটির কারণে নওয়াপাড়া মোকাম থেকে সারসহ পণ্য পরিবহনে চালকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এতে বন্দরের বার্জ কার্গো থেকে সারসহ বিভিন্ন পণ্য সঠিক সময়ে খালাস করা যাচ্ছে না। এতে অতিরিক্ত সময় লাগায় ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ভুক্তভোগী উজ্জ্বল কুমার কুণ্ডু বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায়। সড়কের গর্তে পানি জমে। আর বৃষ্টি না হলে গাড়ির চাকার সঙ্গে ওড়ে ধুলা। মোটরসাইকেলচালকরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। 
যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ মোবাইল ফোনে জানান, ঠিকাদারদের ডাকা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই সমস্যার সমাধান করব। ভারী বর্ষণের কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আপাতত ইট ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মোংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দর এবং নওয়াপাড়া নদীবন্দরের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই মহাসড়ক। খুলনা থেকে ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহনের বাসও অভয়নগর হয়ে যাতায়াত করে। খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ায় যাতায়াতের এটিই প্রধান সড়ক। এখন বাসগুলোকে মনিরামপুর, সাতক্ষীরা ঘুরে যেতে হয়। 
বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। ২ হাজার ৩৫২ মিটার কাজের মধ্যে ৭০২ মিটার পড়েছে যশোর মুরলী মোড়ে। বাকিটা নওয়াপাড়া থেকে প্রেমবাগ গেট পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে। কাজটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। কাজটি শুরু হয়েছে গত ২৩ মার্চ। 
এর আগে ২০১৮ সালে দু’জন ঠিকাদার ৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কের অভয়নগরের রাজঘাট থেকে যশোরের পালবাড়ি মোড় পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে। কাজটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হয়। ওই সময় কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তিন বছরের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশ বেহাল হয়ে পড়ায় আবার সংস্কারকাজ করতে হচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন চাষের জমি