গ্রীষ্মের সন্ধ্যা তখন টরন্টোর আকাশে নামছে ধীরে ধীরে। শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে এক অন্যরকম উন্মাদনা–যা ছিল না কেবল একটি কনসার্ট ঘিরে; বরং ছিল এক প্রবাসী জাতিসত্তার গর্ব, ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ফের বাংলার সুরে আত্মার মুক্তি খোঁজার মতো কিছু।

এই ৫ জুলাই, শনিবার, টরন্টোর গ্লোবাল কিংডম মিনিস্ট্রিস অডিটোরিয়াম যেন হয়ে উঠেছিল ঢাকার গান-বাজনার গলিঘুঁজির প্রতিচ্ছবি। কারণ সেদিন ছিল ‘বং বিটস ব্যাশ’, একটি বহুল আকাঙ্ক্ষিত বাংলা সংগীত উৎসব– যা শুধু পারফরম্যান্স নয়, ছিল অনুভবের, সংযোগের এবং সত্তার উদযাপন।

এক মঞ্চে তিন তারকা, সঙ্গে নতুন প্রজন্ম
বাংলাদেশের তিনজন সুপারস্টার– মিনার রহমান, মিলা এবং প্রীতম হাসান– একই মঞ্চে! এমন কম্বিনেশন এর আগে দেখা যায়নি বললেই চলে। সেই সঙ্গে মঞ্চ মাতিয়েছে কানাডিয়ান বাংলা ব্যান্ড শুর, যারা প্রবাসের মধ্যেই গড়ে তুলছে এক নতুন বাংলাসংগীত চেতনা।

শুরের পরিবেশনা দিয়ে সন্ধ্যার সূচনা। গানের প্রতিটি লাইনে ছিল কানাডার বাস্তবতা আর বাংলাদেশের আবেগের এক অসাধারণ মিশেল। 

এরপর শুরু হয় মিনারের মুগ্ধতা ছড়ানো জাদু। ‘কেউ কথা রাখে না’, ‘আহারে আহারে’, ‘ঝুম’– এই গানগুলোতে যেন পূর্ণতা পেল হৃদয়। এক দর্শনার্থী বলছিলেন, ‘এই গানগুলো তো আমরা ইউটিউবে শুনি, আজ সেই কণ্ঠকে সামনে থেকে অনুভব করলাম।’ অনেকেই বলেছেন আমাদের ‘কোল্ডপ্লে’, যার গানের কথা অডিটোরিয়াম ভর্তি দর্শকদের গলায়।

এরপর এলো মিলার সেই বিস্ফোরণ– ‘রিদম ডান্স কুইন’ আবার ফিরে এলেন, যেন টরন্টোর মঞ্চেই তাঁর রাজত্ব! ‘তুমি কি সাড়া দিবে’, ‘বাবুরাম সাপুড়ে’ আর ‘রূপবান’ গানগুলোতে শ্রোতারা উঠে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করেন। কেউ বলছিলেন, ‘আমার পুরোনো দিনের কনসার্টের স্মৃতি আবার ফিরে এলো!’

অবশেষে এলো সেই মুহূর্ত, যার জন্য সবাইঅপেক্ষা করছিল–প্রীতম হাসান মঞ্চে উঠলেন যেন ঝড়ের মতো। ‘দেওরা’, ‘মালো মা’, ‘খোকা’ ‘উড়াধুরা’, ‘লিচুর বাগানে’– একটার পর একটা হিট ট্র্যাক। মঞ্চে তিনি শুধু গাইছেন না; বরং পুরো অডিটোরিয়ামকে নাচাচ্ছেন, জাগাচ্ছেন, হাসাচ্ছেন।

এই অনুষ্ঠান ছিল এক প্রকার প্রতিজ্ঞা– আমরা ছড়িয়ে থাকলেও, বিচ্ছিন্ন নই
এই কনসার্টে শুধু গান ছিল না– ছিল 
কমিউনিটির ঐক্য, স্মৃতি আর সম্ভাবনার মেলবন্ধন। প্যান্ডেমিকের পর এত বড় পরিসরে, এত সুন্দরভাবে, এত পরিকল্পিত আয়োজন দেখে প্রবাসীরা যেন নতুন করে আশার আলো দেখলেন। পুরো ভেন্যু ছিল নিখুঁতভাবে সাজানো। বাঙালি খাবারের মিনি ফুডকোর্ট যেন এক টুকরো মেলা। নিরাপত্তা, প্রবেশ-নির্গমন ব্যবস্থাপনা, পার্কিং– 
সবকিছুতেই ছিল পেশাদারিত্ব। অনুষ্ঠানটি 
উপস্থাপনায় ছিলেন রাফি আলি ও ইন্দ্রাণী তুষি; যারা মুহূর্তকে মুহূর্তে বেঁধেছেন প্রাণের স্পর্শে। 
সবকিছুর পেছনে ছিলেন এক মস্তিষ্ক ও মন

এই পুরো আয়োজনের মূল কারিগর ছিলেন সাইফুল আজিম মহিম, প্রবাসী একজন সংস্কৃতি উদ্যোক্তা, যিনি মিক্সটেপ 
এক্সপেরিয়েনশিয়াল ইনকরপোরেশনের ব্যানারে এই উৎসবকে বাস্তবায়ন করেছেন। তাঁর নেতৃত্ব, কল্পনা ও সাহসিকতার কারণে এমন একটি স্মরণীয় সন্ধ্যার সাক্ষী হতে পেরেছে প্রবাসী বাঙালিরা।

অনেকেই বলছিলেন, ‘এইরকম আয়োজন যদি বছরে একবারও হয়, তাহলে মনটা বেঁচে থাকবে। আমরা তো শুধু কাজ আর ব্যস্ততার ভেতর ডুবে থাকি। আজ যেন মনটা ফিরে গেল বাংলাদেশে।’

আলো, কিছু ছায়াও যদিও সামগ্রিকভাবে অনুষ্ঠানটি ছিল অসাধারণ, তবুও কিছু ছোটোখাটো খুঁত উঠে এসেছে দর্শকদের মুখে– কিছু সিনিয়র দর্শকের আপত্তি ছিল কনসার্টের শেষদিকে স্ট্যান্ডিং এনগেজমেন্ট নিয়ে, কিছুটা সাউন্ড ব্যালান্সের ঘাটতি ও আলো-ছায়ার ব্যবস্থায় আরও উন্নতির সম্ভাবনা। তবুও একটি বিষয় নিয়ে দ্বিমত নেই– এই কনসার্ট প্রমাণ করেছে, প্রবাসে থেকেও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে একসঙ্গে থাকা সম্ভব, সম্ভব সম্মিলিত স্বপ্ন দেখা।

এই গল্পটা শুধু এক সন্ধ্যার গল্প নয়। এটি প্রমাণ করে– সংগীতের ভাষা বিশ্বময়; অনুভবের কেন্দ্রটা আজও বাংলা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: টরন ট কনস র ট টরন ট র প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি-এনসিপির পদ হারিয়ে মুনতাসির কেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি করে বিক্ষোভ করেছিলেন মুনতাসির মাহমুদ; তার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠকের পদটি হারান তিনি। রেড ক্রিসেন্টের চাকরিটিও হারান। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন মুনতাসির। এদিকে মাহবুব দাবি করেছেন যে তাঁকে জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন মুনতাসির।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে গতকাল রোববার দুপুরে মগবাজারে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করেন মুনতাসির। এরপর সন্ধ্যায়ই এনসিপি তাঁকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে আসলে কী ঘটছে, মুনতাসির কেন এনসিপি থেকে অব্যাহতি পেলেন, এখন কেন তিনি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন—এসব বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাতে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর মুনতাসির রেড ক্রিসেন্টে উপপরিচালক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। আর উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই মাহবুব রেড ক্রিসেন্টের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রেড ক্রিসেন্টে মুনতাসির মাহমুদের চাকরিটি ছিল অস্থায়ী। কয়েক দিন ধরে তিনি রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। এনসিপির পক্ষ থেকে নিষেধ করার পরও গতকাল তিনি সেখানে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন রেড ক্রিসেন্টের বোর্ড সভায় তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।

রেড ক্রিসেন্টে মুনতাসির মাহমুদের চাকরিটি ছিল অস্থায়ী। কয়েক দিন ধরে তিনি সংস্থাটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। এনসিপির নিষেধ শুনছিলেন না। এরপর রেড ক্রিসেন্ট তাঁকে চাকরিচ্যুত করে, এনসিপি দেয় অব্যাহতি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, বোর্ড সভায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলমও ছিলেন। সভার পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে বের হতে গেলে তাঁকে অবরুদ্ধ করেন মুনতাসির মাহমুদের অনুসারীরা। দফায় দফায় এনসিপির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন মুনতাসিরকে ফোন করে রেড ক্রিসেন্টে আন্দোলন বন্ধ করে চলে যেতে অনুরোধ করতে থাকেন। আন্দোলন বন্ধ না করলেও সন্ধ্যা ৬টার দিকে মাহবুবকে রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয় থেকে বের হতে দেন মুনতাসিরের অনুসারীরা। কিন্তু সংস্থার চেয়ারম্যান তখনো অবরুদ্ধ ছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে মুনতাসিরের অনুসারীদের ওপর চড়াও হয়।

এর মধ্যে সন্ধ্যায় মুনতাসিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও অব্যাহতির চিঠি ফেসবুকে প্রকাশ করে এনসিপি।

মুনতাসিরের অভিযোগ

গতকালের ওই ঘটনার পর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেন মুনতাসির। উপদেষ্টার ভাই কেন রেড ক্রিসেন্ট চেয়ারম্যানের পক্ষ নিলেন, এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘সে (মাহবুব) আমাকে সরাসরি হুমকি দিয়েছে, “আমি উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই, তুই মুনতাসির কে? তোর চাকরি আমি খেয়ে দিব।” আমিও পাল্টা জবাব দিই। তখন সে চেয়ারম্যানের (রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান) কক্ষে ঢুকে ওসি এবং অন্যান্য পুলিশকে বলে, “আমি উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই, আমি বলছি আপনারা এখনই মুনতাসিরকে গ্রেপ্তার করুন এবং বাকি সবাইকে মেরে সরিয়ে দিন।”’

অবশ্য পরে মাহবুব তাঁর কাছে ‘মাফ’ চেয়ে কিছু প্রতিশ্রুতি দেন বলে মুনতাসির দাবি করেন। তিনি লিখেছেন, ‘সে (মাহবুব) প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় যে সে মাহফুজ ভাইকে বোঝাতে যাচ্ছে এবং আজকেই চেয়ারম্যান পদত্যাগ করবে। কিন্ত সে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স আসে। ডিসি আমাকে চাপ দেন এবং পরে পুলিশ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে আমাদের আহত করে। যা–ই হোক, জুলাইয়ের গাদ্দার, ভাই আমার আজ সফল হয়েছে! আসলেই আমার চাকরি খেয়ে দিছে, দল থেকে অব্যাহতি দেওয়াইছে এবং পুলিশ দিয়ে মাইর খাওয়াইছে, কত বিশাল ক্ষমতা তার। আমি আমার ভাইয়ের হেদায়েতের জন্য দোয়া করি।’

আসলেই আমার চাকরি খেয়ে দিছে, দল থেকে অব্যাহতি দেওয়াইছে এবং পুলিশ দিয়ে মাইর খাওয়াইছে, কত বিশাল ক্ষমতা তার। আমি আমার ভাইয়ের হেদায়েতের জন্য দোয়া করি।মুনতাসির মাহমুদ

আজ সোমবার বিকেলে মুনতাসির দুটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কপিসহ আরেকটি পোস্ট দেন। দুটি জিডিই হাতিরঝিল থানায় করা। দুটি জিডিতেই বাদীর নামটি ঢেকে দিয়েছেন মুনতাসির। এর মধ্যে ৮ অক্টোবর করা জিডিতে ছয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা, গালাগালি ও হুমকির অভিযোগ করা হয়।

৯ অক্টোবর করা অন্য জিডিতে তিন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়, একজনের বিরুদ্ধে রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর অফিসে এলে তাঁর অনুমতি না নিয়ে আরেকজন গোপনে তাঁর ভিডিও ধারণ করেন। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৭ অক্টোবর হাতিরঝিলের গাবতলা এলাকায় রিকশা দিয়ে যাওয়ার পথে তাঁকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়।

এই পোস্টের ক্যাপশনে মুনতাসির লিখেছেন, ‘অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা না নিয়ে ভুক্তভোগীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং পাল্টা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর পাঁয়তারা করছে! জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও কোন ফ্যাসিবাদের নির্দেশে এসব সাহস তারা দেখাচ্ছে এবং কারা প্রশাসন চালাচ্ছে?’

যোগাযোগ করা হলে এনসিপির নেতা মুনতাসির প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর যা বক্তব্য, তা ফেসবুক পোস্টেই রয়েছে।

উপদেষ্টার ভাই যা বলছেন

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলম প্রথম আলোর জিজ্ঞাসায় বলেন, প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা না থাকার পরও ‘বিশেষ বিবেচনায়’ রেড ক্রিসেন্টের উপপরিচালক পদে চাকরি নিয়েছিলেন মুনতাসির। তিনি কয়েক দিন ধরে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। এর মধ্যে গত শনিবার রাতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন মুনতাসির ও এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মাহমুদা মিতু (রেড ক্রিসেন্টের আরেক বোর্ড সদস্য)। নাহিদ তাঁদের আন্দোলনের পরিবর্তে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু মুনতাসির তারপরও বিক্ষোভ চালিয়ে যান।

রোববার রেড ক্রিসেন্টের বোর্ড সভায় মুনতাসিরের সদলবল ‘মব’ সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা হয় জানিয়ে মাহবুব আলম বলেন, ‘হঠাৎ বোর্ড সভায় ঢুকে মুনতাসির দুটি জিডির কপি দেখান, যেগুলো নিয়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। পরে তিনি চলে যান। এরপর বোর্ডের বেশির ভাগ সদস্যের সিদ্ধান্তে তাঁকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সভার পর মুনতাসিরের সঙ্গে আমার কথা হয়। সেখানে হুমকিধমকির মতো কিছু হয়নি। রেড ক্রিসেন্ট থেকে বেরোতে গেলে তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলেরা আমার পথরোধ করে আধঘণ্টা আটকে রেখে জেরা করেন। তাঁরা ৬টা পর্যন্ত আমাকে অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবশ্য পরে মুনতাসির এসে আমার কাছে ক্ষমা চান।’

অভিযোগ আছে, তিনি (মুনতাসির) রেড ক্রিসেন্টের নিয়মকানুন অনুযায়ী কাজ করেন না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি আমার সমর্থন চেয়েছিলেন। সেটা না করায় তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন।মাহবুব আলম

মাহবুব আলম বলেন, হাতিরঝিল থানার ওসি ও তেজগাঁও জোনের এসি রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয়ে গতকাল সারা দিন ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর কোনো বল প্রয়োগ করা হয়নি। তবে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান বিভিন্ন মহলে কথা বলেছেন। পরে রমনার ডিসিও এসেছিলেন। তিনি (মাহবুব) চলে আসার পর বিক্ষোভকারীদের ওপর বল প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই।

কিছু না করে থাকলে মুনতাসির কেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন? প্রশ্নে মাহবুব বলেন, ‘অভিযোগ আছে, তিনি (মুনতাসির) রেড ক্রিসেন্টের নিয়মকানুন অনুযায়ী কাজ করেন না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি আমার সমর্থন চেয়েছিলেন। সেটা না করায় তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম জড়িয়ে মনগড়া কথা বলছেন। তাঁর চাকরি যাওয়ার ক্ষেত্রে আমার কোনো হাত নেই। গতকালের ঘটনার সময় এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটি, স্বাস্থ্য সেলসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে মুনতাসিরকে ফোন করে আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলা হয়। তিনি কারও কথাই শুনছিলেন না। পরে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এখানে আমার কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। আমি তাঁকে কোনো হুমকিও দিইনি।’

আরও পড়ুনদুপুরে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ, সন্ধ্যায় এনসিপি থেকে অব্যাহতি১২ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকাপের আরও এক ম্যাচ বৃষ্টির পেটে
  • এবার বিপিএলে রেভেনিউ শেয়ারিং মডেল, ১৭ নভেম্বর ড্রাফট
  • নতুন বউ ঘরে রেখে মাঠে নেমেই সামির ৫ উইকেট
  • বাসে স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ, গ্রেপ্তার চালক কারাগারে
  • ডিভোর্সের পর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে এক ফ্রেমে মাহি!
  • ক্লাস না করে সরকারি কলেজশিক্ষকদের কর্মবিরতি
  • সায়েন্স ল্যাবের ব্লকেড কর্মসূচি তুলে নিলো ছাত্ররা
  • বাসে স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ, চালক আটক
  • রেলস্টেশনে ঝুঁকি নিয়ে ভিডিও করছেন পড়শী, এরপর...
  • চাকরি-এনসিপির পদ হারিয়ে মুনতাসির কেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাইকে দুষছেন