সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করবে মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ
Published: 12th, July 2025 GMT
মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ তদন্তে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া।
গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) কুয়ালালামপুরে ৩২তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ফাঁকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান দৃঢ় এবং এ বিষয়ে তথ্য ও তদন্তের ফলাফল বিনিময়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও তথ্যপ্রাপ্তির আশ্বাস দেন।
আরো পড়ুন:
সন্ত্রাসে জড়িত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
মাহাথিরকে শততম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট ও এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এইচ.
২০০৬ সালে বাংলাদেশ এআরএফের সদস্য হয়। এ ফোরামটি নব্বই দশকের শুরুতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ২৭টি দেশের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধির লক্ষ্যে গঠিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ এআরএফের দুটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র — ‘কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ এবং ‘ডিজাস্টার রিলিফ’ — এর সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। আগামী এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ২০২৬ সালে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হবে।
দুপুরে এআরএফ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে জাতীয় বক্তব্য প্রদান করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি রোহিঙ্গা সংকটের জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রেক্ষাপট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আহ্বান জানান। এছাড়া, বাংলাদেশকে আসিয়ান সেক্টোরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে গ্রহণের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনার জন্য আসিয়ান সদস্যদের আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এইচ. ই. মো. শামীম আহসান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
ঢাকা/হাসান/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র উপদ ষ ট র পরর ষ ট রমন ত র র পরর ষ ট র মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ের ৩০ বছর পর একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন দম্পতি
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় সাংবাদিক দম্পতি মো. কাইসার হামিদ (৫১) ও মোছা. রোকেয়া আক্তার (৪৪) পরিচিত মুখ। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান, সবাই পড়াশোনা করছেন। দুজনের বাবা পেশায় শিক্ষক ছিলেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও শিক্ষিত। এসএসসি পাস না করায় তাঁদের মনে দুঃখ ছিল। অদম্য ইচ্ছা আর মানসিক শক্তির জোরে এবার তাঁরা সেই দুঃখ ঘুচিয়েছেন।
কাইসার হামিদ ও রোকেয়া আক্তার এবার নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দেন। দুজনই জিপিএ ৪ দশমিক ১১ পেয়ে পাস করেন। বিয়ের ৩০ বছর পর একসঙ্গে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করায় এ দম্পতিকে অনেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
কাইসার হামিদ দৈনিক নয়াদিগন্ত এবং রোকেয়া আক্তার দৈনিক বুলেটিন পত্রিকার কুলিয়ারচর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
কাইসার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, সক্রিয় সাংবাদিকতার বয়স ৩০ পেরিয়েছে। সমাজ থেকে অনেক ভালো কিছু পেয়েছেন। কেবল কষ্ট ছিল পড়াশোনা নিয়ে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই একই কষ্ট। বাইরে গেলে পড়াশোনার প্রসঙ্গ এলে চুপ থাকতেন। অনেকে ইচ্ছা করে খোঁচা দিতেন। এসএসসি পাস না করে সাংবাদিকতা করছেন কীভাবে, অনেকে প্রশ্ন তুলতেন। পরে যেভাবে হোক এসএসসি পাসের পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী ভর্তি হয়ে দুজনে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেন।
কাইসার হামিদের বাড়ি কুলিয়ারচরের গোবরিয়া গ্রামে। রোকেয়া জেলার কটিয়াদী উপজেলার দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের মেয়ে। বিয়ে করেন আজ থেকে ৩০ বছর আগে ১৯৯৪ সালের ১৬ মার্চ। এ দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান নাসরিন সুলতানা ইতিমধ্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। দ্বিতীয় সন্তান জেসমিন সুলতানা স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী এবং তৃতীয় সন্তান মাইমুনা পড়ছেন নার্সিং বিষয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন নবম এবং আবদুল্লাহ ফাহিম সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পরীক্ষায় পাস করতে পেরে আনন্দিত রোকেয়া আক্তারের ভাষ্য, ‘অল্প বয়সে বিয়ে হয়। পরে সন্তান। এ কারণে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এই কষ্ট দুই যুগের অধিক সময় ধরে বয়ে বেড়াতে হয়েছে। আমরা দুজনই কষ্ট দূর করার উপায় খুঁজতাম। এটা বুঝতে পারি, কষ্ট দূর করতে হলে পরীক্ষা দিয়ে পাস করার বিকল্প নেই। সে কারণেই সাহস করে পরীক্ষা দিলাম এবং ফল পেলাম।’
বিলম্বে হলেও মা–বাবা এসএসসি পাস করায় খুশি সন্তানেরাও। দ্বিতীয় সন্তান জেসমিন সুলতানা বলেন, মা–বাবা দুজনই এসএসসি পাস করার বিষয়টি তাঁদের ভাইবোনদের অনেক আনন্দ দিচ্ছে।