Samakal:
2025-10-16@07:14:48 GMT

আশ্রয়ণের ঘর বিক্রি অনেকের

Published: 12th, July 2025 GMT

আশ্রয়ণের ঘর বিক্রি অনেকের

পয়ঃনিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টি হলে কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায় উঠান। বেশির ভাগ টিউবওয়েল নষ্ট। চলাচলের রাস্তাগুলোও বেহাল। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। এ চিত্র সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের।

নানা সমস্যার কারণে সুবিধাভোগীদের অনেকেই প্রকল্পের ঘরে থাকতে চান না। স্ট্যাম্পে সই করে অন্যদের কাছে বেশ কয়েকটি বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে তিনটি প্রকল্পের পাঁচটি ঘর বিক্রির প্রমাণ মিলেছে। ত্রিশ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় এসব ঘর বিক্রি করা হয়েছে।

শ্যামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি হেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, ‘ঘর বিক্রির বিষয়টি জেনেছি। এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। বাসিন্দারা গোপনে ঘর বিক্রি করেন। ক্রেতারা বসবাস করার পর আমরা জানতে পারি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে উপজেলার আট ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩৫৬টি ঘর। এরমধ্যে দেশিগ্রাম ইউনিয়নের বড় মাঝদক্ষিণায় ৪৮টি, শ্যামপুরে ৩৫টি, তালম ইউনিয়নের গুল্টা এলাকার খ্রিষ্টান মিশনারি পাড়ায় ১৩টি, গুল্টা কলেজপাড়ায় ৬টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। বাকিগুলো বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। 

শ্যামপুর ইউনিয়নে তিনটি, বড় মাঝদক্ষিণায় ১০ থেকে ১২টি ঘর, গুল্টা কলেজপাড়ায় ১৮ থেকে ২০টিসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পে সুফলভোগীরা বসবাস করেন না। এসব ঘরে তালা ঝুলছে। ব্যতিক্রম দেখা গেছে, গুল্টা খ্রিষ্টান মিশনারি পাড়ায়। এ প্রকল্পে ১৩টির ঘরে বসবাস করছেন সুফলভোগীরা। 

৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় ঘর বিক্রি 
উত্তর শ্যামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশিগ্রাম ইউনিয়নের বলদীপাড়া গ্রামের নাজমা খাতুন একটি ঘর পেয়েছিলেন। সেই ঘর তিনি উত্তর শ্যামপুর গ্রামের সাগর হোসেনের কাছে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা দেওঘর গ্রামের জবেদা খাতুন টাগড়া গ্রামের মো.

হবুর কাছে ৫০ হাজার টাকায় ও রেজিয়া খাতুন উত্তর শ্যামপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের কাছে ৩০ হাজার টাকায় ঘর বিক্রি করেছেন। রেজিয়া খাতুনের ঘরে ক্রেতা সাইদুর রহমানের ভাই সাইফুল ইসলাম ব্রয়লার মুরগির খামার করেছেন। বিক্রি হওয়া অন্য দুটি ঘর তালাবদ্ধ করে করে রেখেছেন ক্রেতারা। 

এ প্রকল্পে ঘর সুফলভোগী হাড়িসোনা গ্রামের জহুরুল ইসলাম, দেশিগ্রামের শারমীন খাতুন, তাড়াশের ছানা, বুলবুলি খাতুনসহ ১০ থেকে ১২ জন তাদের জন্য বরাদ্দ ঘরে থাকেন না। দু’একজন কাজের সুবাদে ঢাকা বা অন্যত্র থাকলেও বেশির ভাগ বাসিন্দা আগের বাসস্থানেই রয়ে গেছেন। ঘর তালাবদ্ধ রেখে তারা বিক্রির পাঁয়তারা করছেন বলে জানা গেছে।

একই চিত্র দেখা গেছে বড় মাঝদক্ষিণা আশ্রয়ণ প্রকল্পে। এ প্রকল্পে বাসিন্দা তেঘরী গ্রামের ফয়েজ আলী ও কর্ণঘোষ গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ১ লাখ টাকা করে তাদের নামের বরাদ্দের ঘর বিক্রি করেছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে ফয়েজ আলী ও আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড় মাঝদক্ষিণা আশ্রয়ণের এক বাসিন্দা বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি আশ্রয়ণের ঘর বিক্রি হয়েছে। আপনারা খোঁজ নিলে তথ্য পাবেন।’

দেশিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসাক বলেন, ‘ঘর বিক্রি, ঘরে না থাকা বিষয়গুলো অনেকেই জানান। তবে লিখিতভাবে কেউ জানান না।’

কেন থাকেন না সুফলভোগীরা
প্রকল্পের সুফলভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে যারা প্রকল্পে বসবাস করছেন তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে যায়। অনেক কষ্টে বসবাস করতে হয় তাদের। বেশির ভাগ সুপেয় পানির নলকূপ নষ্ট। কোনো কাজ না থাকায় ছেলেমেয়েদের মুখে দুমুঠো খাবার অনেক সময় জোটে না। এ কারণে অনেকেই ঘরে তালা দিয়ে চলে গেছেন শহরে কাজের সন্ধানে। এছাড়া তদবির, জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের লোকজন বা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সামর্থ্যবানরাও ঘর বরাদ্দ পান। সংগত কারণে তারা সেই ঘরে থাকেন না। বিক্রি করে দিয়ে চলে যান। এ সব তথ্য জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্পের কয়েকজন প্রকল্প সভাপতি।

শ্যামপুর প্রকল্পের বাসিন্দা মকবুল হোসেন জানান, এ প্রকল্পের সাতটি টিউবওয়েলের ৩টিই নষ্ট। নালাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অকেজো। আশ্রয়ণের ভেতরে ও বাইরে চলাচলের রাস্তা কাদামাটিতে একাকার। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। এ সব কারণেও অনেকে সরকারি ঘর বরাদ্দ পেলেও তাতে থাকতে চান না।

উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারি ঘর বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তি নিজ সন্তান ছাড়া অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করতে পারবেন না। তাড়াশে গোপনে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর বা টিপসইয়ের মাধ্যমে বরাদ্দ পাওয়া ঘর বিক্রি করছেন সুফলভোগীরা।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, ‘ঘর বিক্রির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ প রকল প প রকল প র স ফলভ গ র র বর দ দ ঘর ব ক র বর দ দ প করছ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যক্তিগত জীবন একান্তই আমার, বাগদানের গুঞ্জনে হুমা কুরেশি

অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি। 

এরপর থেকে বাগদান নিয়ে চর্চায় রয়েছেন হুমা কুরেশি। তবে এতদিন টুঁ-শব্দ করেননি এই অভিনেত্রী। অবশেষে বম্বে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে হুমা কুরেশি বলেন, “আমি কেন এই গুঞ্জন নিয়ে কথা বলব?” 

আরো পড়ুন:

অভিনেত্রী মধুমতী মারা গেছেন

কিয়ারার মঙ্গলসূত্রের দাম কয়েক কোটি টাকা!

বাগদানের গুঞ্জন চাউর হওয়াতে ক্ষুব্ধ হুমা কুরেশি। এ অভিনেত্রী বলেন, “এ বিষয়ে আমি কী বলতে পারি? মানুষের হাতে অনেক সময়। এটা নিশ্চিত, সঠিক সময় এলে আমি নিজের মুখেই ঘোষণা করব। কিন্তু আমি বলার আগেই মানুষ নিজেরাই ধরে নেয় এবং ঘোষণা করে ফেলে। যখন সেটা সত্যিই ঘটবে, তখন সবাই জেনে যাবে। আমি কেন গুঞ্জনের সমাপ্তি টানব? আমি তো এটা ছড়াইনি…। কেউ এটা পরিকল্পনা অনুযায়ী করেছে। আমার বিয়ে হলে সবাই জানবে।” 

বাগদানের গুঞ্জনে বিরক্ত কি না, জানতে চাইলে হুমা কুরেশি বলেন, “একদমই না। আমি এ নিয়ে ভাবিই না। আমি আমার জীবন নিয়ে ব্যস্ত, আমি খুশি, আর আমি জানি আমার জীবনে কী ঘটছে। দর্শকদের সঙ্গে আমার যে চুক্তি, তা শুধু আমার কাজ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। আমার ব্যক্তিগত জীবন একান্তই আমার।” 

মানুষের আগ্রহের ব্যাপারটি স্বীকার করে হুমা কুরেশি বলেন, “আমি পরিচিত একজন মানুষ। সুতরাং মানুষের আগ্রহের বিষয়টিও আমি বুঝি। আমার জীবনে কী ঘটছে, সবারই তা জানতে ইচ্ছে করে। এটা আন্তরিক ও মিষ্টি ব্যাপার। যেদিন মানুষ আগ্রহ হারাবে, হয়তো সেদিন সেটা আমাকে কষ্ট দেবে। এটা সেই ‘শয়তানের সঙ্গে করা চুক্তি’—আমার কাজের জন্য যে ভালোবাসা আর মনোযোগ পাই, তারই মূল্য। এই মূল্য খুবই ছোট।” 

এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছিলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”   

হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।” 

এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।   

সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। 

রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। ‘রচিত সিং ওয়ার্কশপ’ নামে তার নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, আনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা। 

এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।   

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ