শিরোনাম দেখে ভাববেন না বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট লড়াইয়ের মোটিভ হিসেবে জায়গা করে নেওয়া নাগিন ড্যান্স নিয়ে কিছু বলা হচ্ছে। এই সাপ সত্যি সাপ!

কলম্বোর প্রেসবক্সে একদিন ডাম্বুলার সাপ নিয়ে প্রশ্নে ভ্রু কুঁচকে ফেললেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের মিডিয়া ম্যানেজার প্রসন্ন রদ্রিগো। যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না, ডাম্বুলা নিয়ে এমন কথা কীভাবে ছড়াল!

প্রশ্নটা ছিল, ‘ডাম্বুলায় নাকি অনেক সাপ! হোটেলের খাটের তলায়ও সাপ থাকে। কথাটা কি ঠিক?’

আরও পড়ুনজাকের আলী কাল খেলবেন, যদি.

..৩০ মিনিট আগে

প্রসন্ন উত্তরে যেটা বললেন, তার জন্য ঠিক প্রস্তুত ছিলাম না। তাঁর কথায় বিস্ময়, ‘ডাম্বুলায় অনেক সাপ! কে বলল?’ তারপর দিলেন আরও ভয়ংকর তথ্য, ‘বিষধর সাপ তো শ্রীলঙ্কার সব জায়গায়তেই আছে, ডাম্বুলায়ও আছে। ডাম্বুলা আলাদা নয়।’ সাপের জন্য ডাম্বুলাকে বিশেষ কোনো শ্রেণিতে ফেলতে তিনি রাজি নন ঠিক আছে, কিন্তু সঙ্গে ওটা কী বললেন? সাপ শ্রীলঙ্কার সব জায়গাতেই! তার মানে কি কলম্বো–ক্যান্ডিও নিরাপদ নয়!

প্রসন্নর কথা যে সত্যি তা কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামেই চাক্ষুষ করেছে সবাই। বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের এক ম্যাচে মাঠের বাউন্ডারি রশির পাশেই দেখা গেছে বিশালাকৃতির এক সাপ। স্থানীয় লোকজন যদিও বলেছেন, সেটি বিষধর ছিল না; তবু সাপ তো!

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট মাঠে সাপ ঢোকার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। ঘন বর্ষণ বনাঞ্চলের (রেইনফরেস্ট) দেশটিতে সমুদ্র যেমন আছে, পাহাড়–জঙ্গলও অনেক। শহরাঞ্চলেই রাস্তার পাশে ঝোপ–জঙ্গল–পাহাড়। সাপখোপ থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে কিছুই এখানে অপরিকল্পিত নয়, অযত্নেও নেই। কাজেই হুট করে আপনাকে আঁতকে দিয়ে সামনে সাপ হাজির হয়ে যাবে, বিষয়টি তেমন নয়। গুইসাপের দেখা অবশ্য নিয়মিতই পাওয়া যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায় আসার পর থেকে। কলম্বোর ব্যস্ততম এলাকার টিম হোটেল সিনামন গ্র্যান্ডের বাগানকেও মনে হয়েছে তাদের নিরাপদ আবাসস্থল।

আরও পড়ুনবাবা চেয়েছিলেন পুলিশ বানাতে, তানভীর এখন ক্রিকেটের স্বপ্নের দুনিয়ায়৫১ মিনিট আগে

যা–ই হোক, ডাম্বুলা কেন সাপের জন্য মুখে মুখে এমন খ্যাতি পেয়ে গেল, সেটা বের করা দরকার। ২০১০ ও ২০১৭ সালের দুই সফর মিলিয়ে রনগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দল মোট পাঁচটি ওয়ানডে খেলেছে। সর্পাতঙ্ক তখনো ছিল, কিন্তু সাপ নিয়ে ভয় পাওয়ার মতো কোনো ঘটনা কারও কাছ থেকে শোনা যায়নি।

তবে এখানে বিষধর সাপের ভয় আছে, সেটা ২০০৪ সালে প্রথমবার ডাম্বুলায় এসেও শুনেছিলাম। এশিয়া কাপে ভারত–শ্রীলঙ্কা ম্যাচ কাভার করতে এক রাতের জন্য আসা হয়েছিল ঘন সবুজ শহরটিতে। অনেক কষ্টে খুঁজে পাওয়া নিতান্তই সাধারণ মানের এক কটেজে ওঠার পর শুরুতেই কটেজ ম্যানেজারের সাবধান বাণী শুনতে হয়েছিল। আশপাশে নাকি অনেক সাপ। চলাফেরা সাবধানে করতে হবে। এমনকি রাতে ঘুমানোর সময়ও সতর্ক থাকতে হবে।

বলের মতো জয়টাও ডাম্বুলায় এভাবে মুঠোবন্দী করার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বাংলাদেশকে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য কলম ব

এছাড়াও পড়ুন:

সঞ্চয়পত্রে সীমা, বন্ডে মুক্ত বিনিয়োগ

নিরাপদ বিনিয়োগ বলতে দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চয়পত্রই ছিল সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা। কিন্তু সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমেছে, রয়েছে বিনিয়োগ সীমা ও নানা জটিলতা। তবে সঞ্চয়পত্রে নানা বেড়াজাল থাকলেও সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে ট্রেজারি বিল ও বন্ড।

বিল ও বন্ডে সবার জন্য সীমাহীন এবং একক বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। সঞ্চয়পত্রের চেয়েও রিটার্ন বেশি পাওয়া যাচ্ছে এ খাতে, সেই সঙ্গে রয়েছে নিরাপদ বিনিয়োগ। ফলে বিল ও বন্ড আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সঞ্চয়পত্রে সরকারকে তুলনামূলক বেশি সুদ দিতে হয়। যা বাজেটের ওপর চাপ বাড়ে। এর চেয়ে বাজারভিত্তিক হারে অর্থ সংগ্রহ করতে পারলে সরকারি দায় কমে।এছাড়া বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফও সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাকে আরো বাজারমুখী করার পরামর্শ দিয়ে আসছে।

আরো পড়ুন:

সিটি ব্যাংক ও আইবিএ মিলে আনছে ‘এক্সিকিউটিভ লিডারশিপ ট্রেনিং গ্রোগ্রাম’

প্রভিশন সংরক্ষণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন নির্দেশনা 

অন্যদিকে, সঞ্চয়পত্রের টাকা অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় বা অলস খাতে চলে যায়। ট্রেজারি বন্ড ও বিলের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক নজরদারি বেশি এবং তারল্যও থাকে। যা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য রক্ষা করবে। এসব কারণে সরকার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করছে বিপরীত দিকে বন্ড ও বিলে বিনিয়োগ করতে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তবে বিল ও বন্ডে মুনাফার হার আরো বাড়ালে এগুলো দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠত বলে মনে করছেন তারা।

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, “সঞ্চয়পত্র দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয় হলেও, সঞ্চয়পত্রে সরকারকে তুলনামূলক বেশি সুদ দিতে হয়। অন্যদিকে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের রিটার্ন বেশি হলে এগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।”

তার মতে, শেয়ারবাজারের মতো যারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে চায়, আয় করতে চায় তাদের জন্য সঞ্চয়পত্রের চেয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ড ভালো বিকল্প হতে পারে।

সঞ্চয়পত্রে সুদ কমেছে
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের পর থেকে ধাপে ধাপে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমিয়ে আনা হয়। বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৮১ থেকে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ, তিন মাস পর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ৬৫ থেকে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ পর্যন্ত, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৯ দশমিক ৮৪ থেকে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ৯ দশমিক ৭৪ থেকে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়। যা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে (সাড়ে ৭ লাখ টাকা) বিনিয়োগকারীদের জন্য। সাড়ে ৭ লাখ টাকার উপরে বিনিয়োগ করলে মুনাহার হার আর কম। গত জানুয়ারিতে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ছিল ১০ দশমিক ১১ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এদিকে, সরকার বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। শেয়ারবাজার থেকেও ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে।

ট্রেজারি বিল ও বন্ড কী?
ট্রেজারি বিল ও ট্রেজারি বন্ড হচ্ছে সরকারের ইস্যু করা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণপত্র। এগুলোর মাধ্যমে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ সংগ্রহ করে। ট্রেজারি বিল সাধারণত ৯১ দিন, ১৮২ দিন ও ৩৬৪ দিনের হয়। ট্রেজারি বন্ড হয় ২, ৫, ১০, ১৫, ২০ বছর মেয়াদি। এই বন্ড ও বিল আগে মূলত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ছিল।তবে বর্তমানে সাধারণ মানুষও অনলাইনে ট্রেজারি বন্ড ও বিল কিনতে পারেন।

সঞ্চয়পত্র বনাম ট্রেজারি বিল-বন্ডের মুনাফা:
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রের সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

গত ৭ জুলাই ৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ৩৬৪ দিনের ট্রেজারি বিলে সুদহার দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশের বেশি। এছাড়া ২-২০ বছরের ট্রেজারি বন্ডে সুদহার ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ।

এর আগে গত ১৬ জুন ৯১ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার দাঁড়ায় ১২ দশমিক ১০ শতাংশ। ১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের সুদহার ছিল ১২ দশমিক ১১ শতাংশ। ৩৬৪ দিনের ট্রেজারি বিলে সুদহার ছিল ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ।ওইদিন ট্রেজারি বন্ড ৫-২০ বছর সুদহার ছিল ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুবিধা
সঞ্চয়পত্রের মতো বিনিয়োগের নির্দিষ্ট সীমা নেই। চাইলে এককভাবে কয়েক কোটি টাকাও বিনিয়োগ করা যায়। সরকার নিজেই এগুলোর গ্যারান্টার। ফলে ডিফল্টের সুযোগ নেই। কর রেয়াতের সুবিধা, আবগারি শুল্ক থেকে অব্যাহতির সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ