‘দিন যায় কথা থাকে’ বিখ্যাত গানের এই কথাটি যেন প্রতিটি মানুষের জীবনে সুনিপুণভাবে গাঁথা। একটি মানুষ যখন বার্ধক্যে পৌঁছায় তখন পেছনের স্মৃতিগুলো চোখের সামনে যেন জীবন্ত হয়ে ভেসে ওঠে। 

তেমনি নিজের শৈশবের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় হাওলাদার হিমাগার লিমিটেড প্রাঙ্গণে শৈশবের বন্ধুদের আয়োজিত মিলনমেলায় উপস্থিত হন এই প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পেইজ ও আইডি থেকে ওই আয়োজনের ভিডিও লাইভ করা হয়। সেখানেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ের মির্জা ফখরুল। 

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি স্থানে বসে মাইক হাতে নিয়ে কথা বলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য কিংবা পরামর্শ নয়। ভিডিওর সবটুকু সময় জুড়ে এই রাজনীতিবিদ স্মৃতিচারণা করেছেন। নিজের শৈশব ও কৈশোরের। স্মরণ করেছেন স্কুল জীবনের বন্ধুদের। যারা বেঁচে নেই তাদের কথা বলতেই চোখের কোণে জল গড়িয়েছে বন্ধুমহলে অপূরণীয় শূন্যতার জন্য। এ যেন এক লুকানো মির্জা ফখরুল। যাকে এর আগে কখনো দেখা যায়নি! এ আয়োজনের একাধিক ফেসবুক লাইভের কমেন্টবক্সে মানুষের মন্তব্যজুড়ে ভালোবাসা আর শুভেচ্ছার ছড়াছড়ি। স্মৃতীর ভেলায় ভেসেছেন কেউ কেউ। কমেন্টেও করেছেন স্মৃতিচারণ। 

মির্জা ফখরুল পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে স্মরণ করিয়ে দেন ফেলে আসা দিনের কথা। নিজেই বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করে শোনান বন্ধুদের। 

শৈশবের বন্ধুদের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া বন্ধুদের স্মরণ করে বলেন, “আমার ঘনিষ্ট বন্ধু কুদ্দুস আমাদের মাঝে থেকে অনেক আগেই চলে গেছে। মনোয়ার চলে গেছে, যার সাথে সারাদিনে একবার দেখা না হলে খারাপ লাগতো। অনেকেই আমাদের কাছ থেকে চলে গেছে। যারা এখনো বেঁচে আছি, আমরা একটু বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। এই বাঁচাটা হচ্ছে নিজেকে অনুভব করা। আমি আছি, আমি বেঁচে আছি।”

এসময় তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সুন্দর আয়োজনের জন্য। তিনি বলেন, “আমরা যারা বেশিরভাগ ঘর থেকে বের হই না, যেমন হুমায়ন স্যার, রবি দা এনারা ঘর থেকে বের হন না। তাদের আমরা আজ আবার ঘর থেকে বের করে নিয়ে এসে এক সাথে করার সুযোগ করেছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ। আজ সকালে বন্ধু আনিসুরকে দেখতে গিয়েছিলাম। একেবারেই শয্যাশায়ী। নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছে। জানি না আমরা কে কখন চলে যাব। কিন্তু যাওয়ার আগে অন্তত আজকের দিনটা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

তিনি আরো বলেন, “যখন স্কুলে পড়ি, খুবই দুষ্টু ছিলাম এবং বখরান সাহেব ছিলেন আমাদের ক্যাপ্টেন। আমরা দুষ্টুমী করতাম আর ক্যাপ্টেন আমাদের নামে হেড স্যার রোস্তম আলী স্যারকে নালিশ করলেন। কিছুদিন পর হেড স্যার আমাদের সবাইকে ডেকে পাঠালেন। ঘরের ভিতরে লাইন করে দাঁড় করালেন এবং সবাইকে একটা করে বেত দিলেন। আমাদের সেই শৈশব ও স্কুলের জীবন আমি কখনই ভুলতে পারি না। সেই দিনগুলো যদি আমার ফিরে পেতাম!”

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “স্বাধীনতার পরে বন্ধুদের সঙ্গে রংপুরে এক কাজে গিয়েছিলাম। রাতের বেলা কী করব? ঠিক করলাম সিনেমা দেখবো। কিন্তু সিনেমা দেখার জন্য তখন আমাদের হাতে টিকেট ছিলো না। তারপরেও ভিড় ডিঙিয়ে টিকিটের ব্যবস্থা করে সিনেমা দেখেছি। এগুলো আমার কাছে এখনো মধুর স্মৃতি হয়ে আছে।”

এসময় কবিতা আবৃত্তির অনুরোধ করা হলে তিনি বলেন, “একসময় আবৃত্তি করতাম, এখন করি না বক্তৃতা করি। তার পরেও আমি চেষ্টা করব কবিতা আবৃত্তি করার। একসময় আমিও নাটক করেছি, রঙ মেখেছি, একসময় নাট্যগোষ্ঠী করতাম।” 

পরে তিনি তাঁর প্রিয় কবিতা বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ আবৃত্তি করে শোনান বন্ধুদের।

ঢাকা/হিমেল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত স মরণ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

রুমায় বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা হতে পারেন, ভারী অস্ত্র উদ্ধার

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে কুকি–চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুজনের একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় সেনাবাহিনী রুমা জোন সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর হোসেন। সেনাবাহিনীর অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের পর কেএনএর গোপন আস্তানা থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করা হয় বলে তিনি জানান। তাঁরা ওই সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য। এর মধ্যে একজন শীর্ষ নেতা হতে পারেন। তবে নিহত ব্যক্তিদের নাম–পরিচয় নিশ্চিত করেনি সেনাবাহিনী। অভিযানে কেএনএর আস্তানা থেকে সাব মেশিনগান, চায়নিজ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদও উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর হোসেন বলেছেন, আজ ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী কেএনএ সন্ত্রাসীদের গোপন আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আঁচ করতে পেরে কেএনএ সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। নিরাপত্তা বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। আক্রমণের মুখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। গোপন আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে দুজন কেএনএ সন্ত্রাসীর লাশ পাওয়া যায়। নিহত সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাঁর নামসহ নিহত দুজনের নাম শনাক্ত করা যায়নি। এ ছাড়া কেএনএ সন্ত্রাসী সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আলমগীর হোসেন বলেছেন, কেএনএর আস্তানা থেকে একটি চায়নিজ এসএমজি, দুটি মিয়ানমারে তৈরি এসএমজি ও একটি চায়নিজ রাইফেল উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে ৪৫১টি গুলি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আটটি ম্যাগাজিন, দুটি ওয়্যারলেস সেট, তিন সেট ইউনিফর্ম, পাঁচ জোড়া বুট জুতা, বাংলাদেশি ১৭ হাজার ৯০০ টাকা ও ভারতীয় ৯৫১ রুপি।

কেএনএর আস্তানা থেকে উদ্ধার করা ভারী অস্ত্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অভিনয়ে নিজেকে ভাঙার মিশনে সামিরা খান মাহি
  • দু’পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে যুবদল নেতার মৃত্যু
  • কিশোরদের মারামারি থামাতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবদল নেতার
  • সেনা অভিযানে কেএনএফের ২ সদস্য নিহত, বিপুল অস্ত্র উদ্ধার
  • রুমায় বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের একজন কেএনএর শীর্ষ নেতা হতে পারেন, ভারী অস্ত্র উদ্ধার
  • নতুন টেলিকম নীতিমালা নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির উদ্বেগ  
  • একসময় হতাশায় ডুবে যাওয়া নাবিলা যেভাবে ডিঅ্যান্ডএডি পেনসিল অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন
  • একসময়ের জনাকীর্ণ বাজারটি এখন শ্রীহীন
  • ট্রাম্পের ‘গ্রেট’ আমেরিকা কি ‘চীনপন্থী’ হয়ে যাচ্ছে