ফাইনালের লড়াইয়ে এগিয়ে খুলনা নাকি চট্টগ্রাম
Published: 4th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম কিংসকে হারিয়ে বিপিএলের ফাইনালে পা রেখেছে ফরচুন বরিশাল। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে চট্টগ্রাম ও খুলনা টাইগার্স মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হবে। ওই ম্যাচের জয়ী দল ফাইনালে বরিশালের সঙ্গী হবে।
চট্টগ্রাম প্রথম কোয়ালিফায়ারে বরিশালের বিপক্ষে হেরেছে। লিগ টেবিলে দুইয়ে শেষ করায় ফাইনালের লড়াই করার আগেকটি সুযোগ পাচ্ছে তারা। খুলনা টানা তিন ম্যাচে জিতে কোয়ালিফায়ারে এসেছে। এলিমিনেটর খেলতে গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচেই জিততে হতো তাদের। এরপর এলিমিনেটরে রংপুরকে উড়িয়ে দিয়েছে তারা।
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে খুলনা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিমরন হেটমায়ার ও জেসন হোল্ডারকে এনেছে। আগে থেকেই দেশি ক্রিকেটাররা ভালো খেলছিলেন। বিশেষ করে মিরাজ, নাঈম, নাসুম, অঙ্কন ও হাসান মাহমুদ দারুণ ছন্দে আছেন। নওয়াজ ও হোল্ডার অলরাউন্ডার হওয়ায় স্লগে দলের শক্তি বেড়েছে।
ওই জায়গায় চট্টগ্রাম কিংস কিছুটা পিছিয়ে আছে। দলটির কোন অলরাউন্ডার নেই। ছয় ব্যাটার ও পাঁচ বোলার নিয়ে টুর্নামেন্টের অধিকাংশ ম্যাচ খেলেছে তারা। কোয়ালিফায়ার ম্যাচেও যেমন ছয় ব্যাটারের সঙ্গে পাঁচ বোলার খালেদ, শরিফুল, বিনোরা ফার্নান্দো, আলিস ও আরাফাত সানি ছিলেন চট্টগ্রামের একাদশে।
চট্টগ্রাম একাদশে লেগেছে এক ধাক্কা। বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় বাঁ-হাতি স্পিনার আরাফাত সানি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলতে পারবেন না। তার জায়গা পূরণে বেশ চ্যালেঞ্জ পোহাতে হতে পারে মোহাম্মদ মিঠুনদের। বাঁ-হাতি স্পিনার নাবিল সামাদ দলে থাকলেও একাদশে জায়গার নিশ্চয়তা নেই।
চট্টগ্রাম টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ে এসেছে উসমান খান, হায়দার আলী, মোহাম্মদ মিঠুন ও শামীম পাটোয়ারির ব্যাটিংয়ে। এর মধ্যে উসমান খান শুরুর ফর্ম ধরে রাখতে না পারায় একাদশ থেকে বাদ পড়েন। পরে জাতীয় দলের ডাকে দেশে ফিরেছেন তিনি। খাজা নাফি তার জায়গায় সুযোগ পেয়ে ভালো একটি ইনিংস খেলেছেন। খালি চোখে চট্টগ্রামের চেয়ে খুলনা এগিয়ে মনে হলেও শামীম পাটোয়ারি, হায়দারদের একটা ইনিংস বের করে ফেলতে পারে ম্যাচ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো’—সিডনির মঞ্চে হিমু-রূপার নস্টালজিয়া
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ। ‘পড়ুয়ার আসর’ আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠান ‘প্রিয় পদরেখা’ ছিল কেবল আলোচনা নয়, এ ছিল হুমায়ূনের সৃষ্টিকে অনুভব করার, তাঁর চরিত্রদের সঙ্গে আবার দেখা হওয়ার এক আবেগঘন আয়োজন। গদ্য, পদ্য, গান ও নাট্য-আলাপ মিলেমিশে মনে রাখার মতো এক আসর।
অপূর্ব এক দৃশ্যের দেখা মিলল। তরুণ শিল্পী রূপন্তি আকিদ—সিডনির বাঙালি কমিউনিটির তরুণ অভিনেত্রী। নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাঁকে তরুণ প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত করেছে। সেদিন তাঁর পরনে ছিল হিমুর স্বাক্ষররং নীল শাড়ি, হাতে হুমায়ূন আহমেদের ‘হিমুর আছে জল’ উপন্যাস।
রূপন্তির পাশে ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা মাজনুন মিজান—গায়ে উজ্জ্বল হলুদ পাঞ্জাবি, হাতে ফুল। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন ও টেলিভিশনে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অভিনয় করা মিজান বিশেষ করে হুমায়ূন আহমেদের নাটক, টেলিফিল্ম ও সিনেমায় কাজ করে দর্শকের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও প্রবাসে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এবং সিডনির শিল্পমহলে তিনি পরিচিত ও সম্মানিত মুখ।
এই নাট্য-আলাপে হিমু ও রূপার ভূমিকায় অভিনয় করেন রূপন্তি ও মিজান। তাঁদের সংলাপ, দৃষ্টিভঙ্গি আর অভিনয়ের কোমল আবেগ যেন মঞ্চে সত্যিই ফিরিয়ে আনল হিমুর হাঁটাচলার সেই নরম আলো, রূপার শান্ত উপস্থিতি আর দুজনের অদ্ভুত অনুভবের জটিল সুন্দর সম্পর্ক।
নাট্য-আলাপ শুরু হতেই মঞ্চ যেন গল্পের পাতায় পরিণত হলো। যখন তাঁদের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো—
‘তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?’
‘না, ভালোবাসি না...কারণ, ভালোবাসলে তো প্রাপ্তির বাসনা থাকে। আমি তোমাকে অনুভব করি।’
তখন হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল নিস্তব্ধতার গভীর ঢেউ। দর্শকের চোখে ভেসে উঠল হিমু-রূপার নরম, শীতল, হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তগুলো।
পরিবেশ আরও আবেগময় হয়ে ওঠে পরিচিত সুরে—‘নেশা লাগিল রে, বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিল রে...’
গানের সুর মিশে গিয়েছিল সিডনির প্রবাসী আবেগে—হিমুর হলুদ, নীল আর স্নিগ্ধ প্রেমের গন্ধে। ‘পড়ুয়ার আসর’-এর অন্যতম সদস্য রোকেয়া আহমেদ বলেন, ‘তাঁর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিডনিতে এই আয়োজন। আমরা চাই তাঁর সৃষ্টির আলো নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক। প্রবাসে থেকেও তাঁকে নতুন করে উপলব্ধি করার একটি জায়গা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুনগানের সুরে, মেজবানের ঘ্রাণে—সিডনি যেন এক দিনের চট্টগ্রাম১০ নভেম্বর ২০২৫একজন মুগ্ধ দর্শক অনুষ্ঠান শেষে মন্তব্য করেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন গল্পের চরিত্ররা সত্যি সত্যি সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। আলোচনার প্রতিটি কথাই হৃদয় ছুঁয়ে গেল।’
রোববারের সিডনির ম্যাকুয়ারি লিংকস গলফ ক্লাব হলজুড়ে ছিল হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসের পরিচিত নস্টালজিয়ার আবহ