রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর প্রতিটি আচরণ তিনি অনুসরণ করতেন
Published: 5th, February 2025 GMT
হজরত আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.)-এর জীবন ছিল যেন রাসুলের (সা.) জীবনের প্রতিচ্ছবি। সব সময় তিনি চেষ্টা করতেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতিটি কাজ ও আচরণ হুবহু অনুসরণ করতে। রমজানের রোজা ছাড়াও তিনি নফল রোজা রাখতেন। এ ছাড়া তিনি আশুরার রোজা রাখতেন এবং মানুষকে তা রাখতে বলতেন। প্রচণ্ড গরমের সময়ও তাঁকে রোজা রাখতে দেখা যেত। তিনি বলতেন, ‘হয়তো দুপুরের গরমের তৃষ্ণা কিয়ামতের দিনে আমাদের জন্য প্রশমিত হবে।’
সুন্নত ছাড়া মুস্তাহাবের প্রতিও তিনি খুব যত্নবান ছিলেন। কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। এ কারণে তিনি তাঁর কন্যাদেরও হুকুম দিতেন নিজ হাতে পশু জবাই করার জন্য। আবু মুসা (রা.
আবু মুসা (রা.)-এর মধ্যে এ গুণ পরিপূর্ণরূপে ছিল। রাতে ঘুমানোর সময়ও তিনি বিশেষ ধরনের পোশাক পরে নিতেন, যাতে সতর (শরীরের সেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক) উন্মুক্ত না হয়ে যায়। আবু মুসা (রা.) ছিলেন অত্যন্ত সরল ও সাদাসিধে প্রকৃতির। প্রথম জীবনে দরিদ্র ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। তবে পরবর্তী জীবন সচ্ছলতায় কেটেছে তাঁর।
যে ছয়জন সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় ফতোয়া দানের অনুমতি পেয়েছিলেন, আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.) তাঁদেরই একজন। রাসুল (সা.) তাঁর সম্পর্কে বলতেন, ‘আবু মুসা (রা.) অশ্বারোহীদের নেতা।’
আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.) ছিলেন ইয়েমেনের অধিবাসী। সেখানকার আল আশয়ার গোত্রের সন্তান হওয়ায় তিনি আল আশয়ারি হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন।
আরও পড়ুনসুরা মায়িদায় আল্লাহ্র নির্দেশনা২৫ ডিসেম্বর ২০২৩আবু মুসা (রা.) ইসলামের পরিচয় পেয়ে ইয়েমেন থেকে মক্কায় আসেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে বাইয়াত নেন। কিছুদিন মক্কায় অবস্থানের পর স্বদেশবাসীকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে আবার ইয়েমেনে ফিরে যান। আবু মুসা (রা.) ছিলেন তাঁর বংশের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। তাই খান্দানের লোকেরা দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে তাঁর দাওয়াতে সাড়া দেন।
রাসুল (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের কয়েক বছর পর প্রায় ৫০ জন মুসলিমের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে আবু মুসা (রা.) মদিনায় যাওয়ার জন্য ইয়েমেন থেকে সমুদ্রপথে যাত্রা করেন। তাঁরা যখন মদিনায় পৌঁছান, সে সময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীও খাইবার বিজয় শেষ করে মদিনায় ফেরেন। রাসুল (সা.) আবু মুসা (রা.) ও তাঁর সঙ্গীদের সবাইকে খাইবারের গনিমতের অংশ দান করেছিলেন। আবু মুসা (রা.) তাড়াতাড়ি মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত সম্মানিত হয়ে ওঠেন।
আরও পড়ুনরাতে ঘুমানোর আগে সুরা মুলক পড়ার কারণ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দীর্ঘদিনের কোয়ান্টাম রহস্যের সমাধান করলেন বিজ্ঞানীরা
প্রায় ১০০ বছর আগে আলবার্ট আইনস্টাইনের প্রস্তাবিত একটি পরীক্ষা আবার করার মাধ্যমে কোয়ান্টাম মেকানিকসের একটি মূল নীতিকে নিশ্চিত করেছেন চীনের একদল বিজ্ঞানী। নতুন এ পরীক্ষার মাধ্যমে একটি কণার পথ ও তার তরঙ্গসদৃশ আচরণ একই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা যায় না বলে প্রমাণ করা হয়েছে। নতুন এই প্রমাণ কোয়ান্টাম বস্তুর প্রকৃতি সম্পর্কে নিলস বোরের ধারণাকে সমর্থন করে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯২৭ সালে ব্রাসেলসের সলভে কনফারেন্সে কোয়ান্টাম মেকানিকসের ভিত্তি নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এই তত্ত্ব সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করতেন। তিনি বিজ্ঞানী বোরের সম্পূরকতার নীতিকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করেন। বোরের মতে, ফোটনের মতো কোয়ান্টাম কণা একই সঙ্গে কণা ও তরঙ্গ উভয় রূপেই আচরণ করতে পারে। তবে এই দুটি বৈশিষ্ট্য একসঙ্গে পরিমাপ করা অসম্ভব।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন তাঁর একটি চিন্তামূলক ডাবল–স্লিট পরীক্ষার একটি সংশোধিত সংস্করণ প্রস্তাব করেন; যার মাধ্যমে দেখা যায়, দুটি বৈশিষ্ট্য সম্ভবত একই সঙ্গে পরিমাপ করা যেতে পারে, যা আবার বিজ্ঞানী বোরের তত্ত্বের পরিপন্থী হতো। কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের এই চ্যালেঞ্জ কেবল তাত্ত্বিকই ছিল। চীনের বিজ্ঞানী পান জিয়ানওয়েইয়ের নেতৃত্বে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অব চায়নার একদল বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের ধারণাকে বাস্তবে একটি পরীক্ষায় রূপান্তরিত করেছেন।
বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত সংবেদনশীল যন্ত্রাংশ তৈরি করেছেন, যা একটি একক ফোটনের ক্ষুদ্র গতিও শনাক্ত করতে পারে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, কণার পথ পরিমাপের চেষ্টা করলে ব্যতিচার ধরন নষ্ট হয়ে যায়। আবার ব্যতিচার প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করলে কণার পথ নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই ফলাফল বোরের তত্ত্বকে প্রমাণ করে। কণার বৈশিষ্ট্য সম্পূরক ও একই সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা যায় না। নতুন এই পরীক্ষাকে পদার্থবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
কোয়ান্টাম কণার এমন অস্বাভাবিক আচরণ বাস্তবতার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য, এটি কোনো পরীক্ষামূলক ত্রুটি নয়। গবেষণাটি ফিজিক্যাল রিভিউ লেটারসে প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষাটি বিজ্ঞানী বোরের কোপেনহেগেন ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে দীর্ঘদিনের বিতর্কের নিষ্পত্তি করেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
https://www.ndtv.com/science/chinese-scientists-test-einsteins-100-year-old-thought-experiment-confirm-bohrs-quantum-theory-9763355